রিকশা ও ভ্যান

১ জন রিকশাওয়ালা, একটি মেয়ে এবং তাদের অবিশ্বাস্য গল্প…

বাবুল শেখ ঢাকার রাস্তায় রিকশা চালান। হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি। জ্ঞান ছিলো না অনেকক্ষণ। জ্ঞান ফেরার পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা ও গলায় স্টেথোসকোপ ঝোলানো যাকে দেখলেন, তাকে আট বছর আগে আত্মহত্যা করার আগ মুহূর্তে বাঁচিয়েছিলেন তিনি! বাবুল শেখের ঘটনাটা নিয়ে দারুণ একটি প্রতিবেদন করেছে বিদেশি একটি গণমাধ্যম। সেখানে বাবুল শেখ বলেছেন, তিনি ৩০ বছর ধরে রিকশা চালান।

একদিন একজন বাবা তার রিকশায় তুলে দিয়েছিলেন একজন তরুণীকে। বলেছিলেন সাবধানে গন্তব্য পৌঁছে দিতে। রিকশায় করে যাওয়ার সময় সেই মেয়ে একজনকে ফোন করে। ফোন রাখার পরই মেয়েটা কান্নায় ভেঙে পড়ে। বাবুল শেখ কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারেন, কোনো একজন ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছিলো মেয়েটি। কিন্তু ছেলেটি আসেনি। বাবুল শেখ কিছু বলতে গেলে মেয়েটি ধমকে উঠে। এক পর্যায়ে রিকশা থেকে নেমে পাশে রেল লাইনে দিকে ছুটতে থাকে মেয়েটি।

প্রথমে বাবুল শেখ চুপ হয়ে যান। কী করবেন বুঝতে পারেন না। পরক্ষণেই মেয়েটার বাবার কথা মনে পড়ে তার। নিজের মেয়ে না থাকার কথাটাও বাবুল শেখকে তাড়িত করে ওই মেয়েকে বাঁচানোর। বাবুল শেখ দৌড়ে মেয়েটির পিছু নেন। এর মধ্যে ট্রেন চলে আসে। কিছুটা দূর থেকে দৌড়ে গিয়ে মেয়েটিকে ট্রেনের নিচে ঝাপ দেয়া থেকে বাঁচান তিনি।

এরপর মেয়েটি লম্বা সময় ধরে কেঁদে বুক ভাসায়। বাবুল শেখকে বকাবকি করে। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি বলে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে। বাবুল শেখ তাই করেন। মেয়েটি তখন বলে দেয়, আর কোনো দিন যাতে তার খোঁজ না করেন। বাবুল শেখ সম্মতি জানিয়ে ফিরে আসেন। আর কোনোদিন মেয়েটির খোঁজ নেননি।

সেই মেয়েই এখন ডাক্তার এবং ভাগ্যের খেলায় বাবুল শেখকে চিকিৎসা দিতে এসেছিলেন তিনিই। বাবুল শেখ প্রথমে চিনতে পারেননি। পরে মেয়েটিই নিজের পরিচয় দিয়েছে, সেদিনের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে। বাবুল শেখ বলেছেন, ডাক্তার মেয়েটি তাকে বাবা বলে ডেকেছে। তাকে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তুলেছে। অসাধারণ এই গল্পটি নাড়া দিয়ে গেছে বহু পাঠককে।

শেয়ার করুন: