ঘুম

রাতে দেরি করে ঘুমাতে যান?

‘আর্লি টু বেড আর্লি টু রাইস, মেক এ ম্যান হেলদি, ওয়েলদি এন্ড ওয়াইস’। সোজা বাংলায় রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে সকাল সকাল জেগে ওঠার অভ্যাস একজন মানুষকে স্বাস্থ্যবান, সচ্ছল ও জ্ঞানী করে তোলে। আধুনিক সমাজে দিনদিন মানুষের ব্যস্ততা বেড়েই চলেছে। কর্মব্যস্ততার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে অনেকেরই রাতে দেরি করে ঘুমানোর বদভ্যাস হয়ে গেছে। কারণ তারা রাত জেগে কাজ করে বাড়তি কাজের চাপ কিছুটা কমিয়ে নিতে চায়।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটনাটি ঘটে উল্টো। রাতে দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া যাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, তারা স্বাভাবিকভাবেই কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। যাদের এই অভ্যাস হয়ে গেছে তাদের জন্য এটি ত্যাগ করা সহজ নয়, তবে অসম্ভবও নয়। যুক্তরাজ্যের ৫ লাখ মানুষের ওপর পরিক্ষা করে দেখা গেছে সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা ব্যক্তিদের চেয়ে রাতজাগা মানুষের অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা ১০ শতাংশ বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার ফলে বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি হয়।

ঘুমের আগে শরীর ও মনকে রিলাক্স করাটা জরুরি। এইজন্য কিছু অভ্যাস আপনাকে তৈরি করতে হবে। যেমন: ঘুমের আগে কুসুম গরম জলে হাত মুখ ধুয়ে নেওয়া, গরম দুধ পান, মৃদু শব্দে গান শোনা কিংবা কোন বই পড়া। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার গ্রহণ করা উচিৎ। সম্ভব হলে রাতে খাবার পর একটু হাঁটাহাঁটি করা ভালো। রাতে শোবার অন্তত এক ঘণ্টা পূর্বে মোবাইল, টিভি ও অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এইসব ডিভাইসগুলোর স্ক্রিন থেকে যে আলো নিঃসৃত হয় তা মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং ঘুম আসতে দেরি হয়।

অফিসের ব্যস্ততা কমানোর জন্য অফিসের কাজ বাড়িতে না আনাই ভালো। অফিসের কাজের চাপের কারণে অনেকই রাত জেগে কাজ শেষ করার চেষ্টা করেন। আর এই কারণে তৈরি হয় রাত জাগার অভ্যাস। রাতে দেরি করে ঘুমাতে যান, তাহলে জেনে নিন কোন কোন বিপদ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে…

বর্তমানে মোবাইলের যুগে চ্যাটিং, ভিডিও দেখা, গেম খেলা, প্রেমালাপে কেটে যায় অর্ধেক রাত। আর তারপর ঘুমিয়ে সকালে উঠলে হয়না ঠিকঠাক ঘুম। তার ফলে নানান সমস্যা দেখা দেয়।

রাত জাগার অভ্যাসে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেকেই। সকালে দেরিতে ঘুম থেকে উঠলে সারা দিনের কাজ রিলাক্স মুডে করা যায় না। মেজাজ খিটখিটে থাকে অনেক বেশি। এছাড়া বিভিন্ন অসুখ বিসুখ যেমন: ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ, কিডনীর সমস্যা ইত্যাদি হতে পারে। রাতে দেরিতে ঘুমের অভ্যাসের ফলে মোটা হয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা হতে পারে যেমন: মেছতা, ব্রন, চুলপড়া এবং চোখের চারপাশে কালোদাগ ইত্যাদি। তাই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমের অভ্যাস করা প্রয়োজন।

শেয়ার করুন: