কখনও কি ভেবেছেন, একজনকে দেখে অন্যের হাই ওঠে কেন? জেনে নিন আসল রহস্য..

কখনও দেখেছেন আপনি হাই তুলছেন আর আপনার পাশের ব্যক্তি হাই তোলেনি! বা আপনি ফোনে কথা বলছেন, ওপার থেকে হাইয়ের আলতো শব্দে অাপনিও হেলো বলার ঢঙে হাই তুলে প্রতিক্রিয়া জানাননি!

কারও জীবনে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি কেউই বোধহয় হলফ করে বলতে পারবে না। কিন্তু কখনও কি ভেবেছেন কেন এমনটা হয়? হাই কেন এত ছোঁয়াচে? একজনের দেখাদেখি অন্যের হাই কেন ওঠে?

সাধারণ মানুষ এর কোনও উত্তর খুঁজে পান না। অনেকে নানা যুক্তিও খাড়া করেন। তর্কও বেধে যায় মুহূর্তে। এত দ্রুত ছোঁয়াচে কিছু আছে কি না তা সত্যিই গবেষণার বিষয়। এই বিষয়ে নিরন্তর গবেষণাও চলছে। কী বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসকরা?

বিশিষ্টদের মতে, এটা এক ধরনের ‘সোশ্যাল বিহেভিয়ার’। এটা হওয়ার মূল কারণ আমাদের শরীরে মিরর নিউরোনের ভূমিকা। সামাজিক ভাবে দলবদ্ধ আচরণ করতে মানুষ ভালোবাসে।

আদিমকাল থেকেই মানুষের অভ্য়াস দলগত ভাবে শিকারে যাওয়া, ঘুমানোসহ নানা কিছু। তারই প্রতিফলন এই দেখাদেখি হাই তোলা। এই বিষয়ের ওপরে নিউরো সায়েন্টিস্টরা অনবরত গবেষণা করছেন।

নিউরো সায়েন্স রিসার্চ করলেও এখনও জানার অনেক কিছু বাকি রয়েছে। হিউম্য়ান ব্য়বহার খুব ‘কমপ্লেক্স সাবজেক্ট’।

বিশিষ্ট চিকিৎসক রবীন্দ্র জৈন বলেন, কোন নারী বা শিশুকে মারলে আপনিও ব্যথা অনুভব করেন। শারীরিক ভাবে না হলেও মানসিক ভাবে। এটা সমব্যথী বিহেভিয়ার। আপনার ব্যথা আমি অনুভব করছি।

তিনি বলেন, শিম্পাঞ্জির ওপর জুরিখে গবেষণা করা হয়েছিল। ওদের হাই তোলার ভিডিও দেখানো হয়েছিল। পাঁচ-ছয়জন বসে হাই তুলছে। এটা মিররিং বিয়েভিয়ার।

ওরাও ওই ভিডিও দেখে হাই তুলেছে। এটা সোসাইটি থেকে আলাদা নয়। একমাত্র সমাজবিরোধী মানসিকতা থাকলে ওটা না-ও হতে পারে। সমাজে থাকলে এটা হতেই হবে।

বিষয়টাকে ঠিক মেক্সিকান ওয়েভের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। ওটা একটা সংগঠিত কার্যকলাপ। বলছেন ডা. রবীন্দ্র জৈন। তার মতে, হাই তুলছে আর হাসছে, তাহলে দু’ ধরনের মিররিং হয়।

একটা ফিজিক্যাল আর একটা মেন্টাল। ইমোশনাল রেসপন্স শুধু নয় ফিজিক্যাল রেসপন্স। অভিনয় করে হাই তুললেও আপনি ভাবছেন ঘুমিয়ে পড়ছেন।

বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, আমরা সব সময় দলগত ভাবে চিন্তা ভাবনা করে কাজ করি। আগে একটা বিষয় ছিল পরের দিন শিকার করতে যেতে হবে। তাহলে সন্ধ্যা বেলায় একসঙ্গে ঘুমাতে হবে।

ভোরবলোয় একসঙ্গে উঠতে হবে। একসঙ্গে খেতে হবে। টাইমিং এরকমই রাখতে হবে। আমরা এসব যে বুঝে করি এমন নয়, আনকনসাসলি করে ফেলি। দেখে হাই ওঠা এরকমই একটা বিষয়। যুগ যুগ ধরে আমাদের অভ্য়াসের মধ্য়ে এটাও একটি। এটা একসঙ্গে ঘুমানোর সিগন্যাল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই দেখাদেখি হাইয়ের জন্য দায়ী মিরর নিউরোন। যা রয়েছে মানুষের মধ্যে। শিম্পাঞ্জীদের মধ্যেও আছে। বায়োলজিক্যালি সিগনিফিকেন্ট। সব কিছুই যেন একটা কপি হয়ে যায়।

যে খাবারগুলো আপনি খালি পেটে খাবেন না

দেখে নিন যে খাবার গুলো আপনি সকালে খালি পেটে খাবেন না –

১. কফি: খালি পেটে কফি রক্তে অ্যাড্রিনালিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে চাঙ্গা করার বদলে আপনাকে স্ট্রেসড করে দেয়।

২. চা: চা ক্ষার জাতীয় হওয়ার কারণে শরীরে ভিটামিন বি ১ ও থিয়ামিনের শোষণে বাধা দেয়। অন্য দিকে ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে শরীরে।

৩. টোম্যাটো: প্রচুর পরিমাণ পেকটিন, সাইট্রিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড রয়েছে টোম্যাটোতে। যা গ্যাসট্রিক জুসের সঙ্গে বিক্রিয়ায় বদ হজমের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

৪. আ্যালকোহল: খালি পেটে অ্যালকোহল সারা শরীর ও মস্তিষ্ক অবশ করে দিতে পারে।

৫. স্পাইসি খাবার: খালি পেটে অতিরিক্ত তেল মশলাযুক্ত খাবার খেলে অালসার, এমনকী গল ব্লাডার স্টোন পর্যন্ত হতে পারে।

৬. দই: দইয়ের মধ্যে প্রচুর ভাল ব্যাকটেরিয়া থাকে। কিন্তু খালি পেটে খেলে অতিরিক্ত অ্যাসিডে এই সব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বদ হজমের সমস্যা হতে পারে।

৭. কলা: কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেশিয়াম। খালি পেটে খেলে শরীরের ক্যালসিয়াম-ম্যাগনেশিয়াম সাম্য নষ্ট হতে পারে। যার ফলে হার্টের সমস্যা পর্যন্ত হতে পারে।

৮. লাল আলু: রাঙা আলু খালি পেটে খেলে এর মধ্যে থাকা ট্যানিন ও পেকটিন অ্যাসিডের ফলে বুক জ্বাল ও গ্যাসট্রিক অ্যাসিডের সমস্যা হতে পারে।

৯. সোডা: খালি পেটে সোডা খেলে রক্ত পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। যদি হার্টের সমস্যা থাকে তাহলে প্যারালিসিস পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

১০. লেবু জাতীয় ফল: খালি পেটে লেবু জাতীয় ফল খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুগতে পারেন। গ্যাসট্রিক অ্যালার্জিও হতে পারে।

১১. কাঁচা শাক সব্জি: সালাড বা কাঁচা সব্জি খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল। কিন্তু খালি পেটে নয়। এর মধ্যে থাকা অ্যাসিড হজমের গন্ডগোল বাধাতে পারে।

১২. মিষ্টি: মিষ্টি হজমের যে পরিমাণ ইনসুলিন প্রয়োজন খালি পেটে তা উত্পন্ন হয় না। ফলে বদ হজম হয়ে যেতে পারে।

শেয়ার করুন: