সেফুদা

সেফুদার উল্লেখযোগ্য কিছু উক্তি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেলিব্রেটি বনে যাওয়া একজন অস্ট্রিয়া প্রবাসী সিফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদা। দীর্ঘ ২৫ বছর থেকে রয়েছে পরবাসে। নিজেকে তিনি মুক্তিযোদ্ধাও দাবি করেন। তবে তার এ মুক্তিযোদ্ধা দাবিটি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে লোকসমাজে।

কে এই সিফাত উল্লাহ? সেফুদার পুরো নাম সিফাত উল্লাহ সেফুদা, পদবী চৌধুরী। মূলত ফেসবুকে সিফাত উল্লাহ সেফুদা নামের আইডি থেকে লাইভ ভাইরাল হওয়ায় এই নামেই অধিকাংশ মানুষের কাছে পরিচিত তিনি। এছাড়াও তার কিছু নিকনেম রয়েছে। যেমন- প্রেম সম্রাট, কবি, গায়ক, সাহিত্যিক। সেফুদা খুলনার সোনাডাঙ্গায় ৫ নভেম্বর ১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। ১৯৮৫ (মতান্তরে ১৯৮৮) সালে প্রথম সৌদি আরব যান এবং সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে (মতান্তরে ১৯৯১) সালে অস্ট্রিয়ায় যান।

এরপর আর তিনি কখনো দেশে ফিরে আসেননি। বিদেশের মাটিতে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় বসবাস করেন। তথ্য অনুযায়ী, সেফাত উল্লাহ ১৯৭৯/১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে ভিয়েনায় এক স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর হিসেবে রয়েছেন।

পাশাপাশি একটি অনলাইন শপে পার্টটাইম কাজ করেন। স্বীকৃত কাজ ছাড়াও তিনি কবিতা লেখেন, গান লেখেন, স্থানীয় গনমাধ্যম তথা টেলিভিশনে কাজ করেন। সেফুদার স্ত্রী এবং এক সন্তান রয়েছে। যদিও বর্তমানে তার স্ত্রী-সন্তান কিংবা পরিবারের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। পারিবারিক সম্পর্কবিহীন সিফাত উল্লাহ দেশের ওপর রাগ করে একাকী প্রবাস যাপন করছেন দীর্ঘদিন।

সেফুদার উল্লেখযোগ্য কিছু উক্তি: ১) মদ খাবি মানুষ হবি ২) আমার মতো হতে চাও ৩) আমাকে দেখে হিংসে হয় ৪) মদ খাও আর পরী...(অশ্লীল) ৫) শুটকি খাও আর পেত্নি ৬) ট্রস ট্রস করে মারবো ৭) কত মেয়েরা আমাকে ভালবাসে। আমি কি সবাইকে ভালবাসতে পারি? ৮) আমি প্রেম সম্রাট ৯) অকেয়?

জানা গেছে, তার মুক্তিযোদ্ধা দাবিটি ভুয়া। ২০১০ সালে বড় ধরনের স্ট্রোক করেন সিফাত উল্লাহ। তার কিছুদিন পর মাথার চুল পড়ে যায় আবছাভাবে। যদিও পূর্বে তার মাথার সামনে টাক ছিল এবং যৌবনকালে ঘাড়ের দিকে লম্বা বাবরি চুল রাখতেন। স্ট্রোকের পর তার মাথা হঠাৎ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং উল্টাপাল্টা কাজ করে বসেন। তারই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিককালে ফেসবুক লাইভে আসেন, যা সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয় এবং তিনি হয়ে যান লাইভ সেলিব্রেটি।

উল্লেখ্য, ফেসবুক ও ইউটিউবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, অশ্লীল কথাবার্তা ছড়ানোর দায়ে সেফুদার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জার্মান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মুন্না। সোমবার (২০ আগস্ট) জার্মান বোন পুলিশ স্টেশনে এই মামলাটি করা হয়।

মেহেদী হাসান মুন্না জানান, যে ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নিয়ে গালাগালি করছে তার ছবি দিয়ে বাঙালিরা ট্রল করে মজা নিচ্ছে। ইউরোপে বসে একজন ব্যক্তি এসব কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছে, দেশটিতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আছে।

তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এই বিষয়ে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক ভিপি এবং ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. বিদ্যুৎ বড়ুয়ার সঙ্গে পরামর্শ করে মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

তিনি বলেন, বর্তমানে সিফাত উল্লাহ মানসিক রোগে আক্রান্ত এমন দাবি করেছে তার পরিবার। কিন্তু আমি বিদেশের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন এই ব্যক্তি তেমন কোনো রোগে আক্রান্ত নয়। কোনো পাগল এতো পুরনো ইতিহাস মনে রাখতে পারে না। সে এসব পরিকল্পিতভাবে করছে।

শেয়ার করুন: