মসলাপাতি রান্নায় যেমন অপরিহার্য, তেমনি ভেষজে অনন্য। বিভিন্ন মসলার ভেষজ গুণ বিভিন্ন। এগুলো জেনে ব্যবহার করলে অনেক প্রকার রোগের হাত থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়। তেমনি কালোজিরা; বরং এটি মসলা কেন, সব ভেষজের সেরা। ইসলামি মতে, কালোজিরায় মৃত্যু ছাড়া সব রোগের উপশম রয়েছে। তাই কালোজিরাকে মসলার সাথে সাথে ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করে অল্প পয়সায় অনেক বেশি উপকার লাভ করা যায়।
কালোজিরা গুণে তিক্তরসধারী, উগ্র সুগন্ধযুক্ত, ক্ষুধা বৃদ্ধিকারক, পেটের বায়ুনাশক ও মূত্রকারক। এটি উদরি বা ফুসফুসজনিত রোগে উপকারী। এ ছাড়া কৃমির উপদ্রব নিবারণের জন্যও এটি ব্যবহৃত হয়। কেউ কেউ কাশি ও জন্ডিসে এটি সেবনের কথা বলেন। ইউনানি মতে, এটি বিরেচক ও অর্শ্বে হিতকর। তা ছাড়া প্রসূতীর দুধ বাড়ায় এটির ব্যবহার রয়েছে। এর ব্যবহারবিধি নিচে দেয়া হলো
১.স্তন্যস্বল্পতা: পেটে আমদোষ থাকলে অথবা শরীরের রসধাতু শুকাতে থাকলে স্তন্য কমে যায়। এ সময় কালোজিরা সামান্য ভেজে গুঁড়ো করে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে ওই মাত্রায় সকালে ও বিকেলে সাত দিন ধরে খেলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।
২.মাসিক ঋতু: যেসব মহিলা অনিয়মিত অথবা স্বল্প অথবা অধিক স্রাবের জন্য কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাদের ঋতু হওয়ার পাঁচ-সাত দিন আগে থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে সামান্য গরম এমন পানিসহ সকালে ও বিকেলে খেতে হয়। তার পরও অসুবিধা থেকে গেলে পরপর ২-৩ মাস ওভাবে খেতে হবে।
৩.বাধক দোষ: এ দোষ হলে মেয়েরা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, কেউবা আত্মসুখে তৎপর থাকে, কেউবা শূচীবায়ুগ্রস্ত হয়, কারো কারো দেহটা স্থূল হয়ে যায় আবার কখনো বা তা হয় না। আবার সবাই যে শুকিয়ে যাবে, তাও নয়। কিন্তু মনের ওপর এ রোগের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এর ফলে কেউ কেউ কামজ উন্মাদ রোগেও আক্রান্ত হয়। আবার এ দোষে কোনো কোনো মহিলা জননগ্রন্থির ক্রিয়াশক্তি হারিয়ে ফেলে। সেই সাথে আরো অনেক উপসর্গ এসে জোটে। এ ক্ষেত্রে কালোজিরা সামান্য ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে সকালে ও সন্ধ্যায় ৭৫০ মিলিগ্রাম মাত্রায় খেতে হয় এবং তা মাসিকেও খেতে হবে। এভাবে ২-৩ মাস খেলে রোগের উপশম হবে।