দূর্বাঘাস

ঔষধি গুণে ভরপুর দূর্বাঘাসের যত গুনাগুন

আমাদের চারপাশেই নানা প্রজাতির ঔষধি গাছপালা, লতাপাতা, ঘাস ইত্যাদি রয়েছে। যেগুলো হাতের নাগালেই পাওয়া যায়। এগুলো হতে পারে পুষ্টিকর খাবার কিংবা ঔষধি গুণে ভরপুর। তেমনি গুণ সম্পন্ন একটি উদ্ভিদ হচ্ছে দূর্বাঘাস। দূর্বাঘাস শুধুমাত্র প্রাণিদেরই খাদ্য নয়। এটি মানুষেরও পুষ্টিকর আহার! ঔষধি গুণে ভরপুর হওয়ায় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে একে মহাঔষধ বলে। আজ জানব এই দূর্বাঘাসের বিভিন্ন গুণাগুণ। দূর্বাঘাসের গুণাগুণ:

চিকিৎসায় দূর্বাঘাস ব্যবহারের উপায়: দূর্বাঘাসের রস: ১০-২০ মি.লি., দূর্বা মূল চূর্ণ: ৩-৬ গ্রাম, পাতার চূর্ণ: ১-৩ গ্রাম, পানি: ৪০-৮০ মি.লি। সবগুলো একত্রে মিশিয়ে জুস তৈরি করে পান করবেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: দূর্বা ঘাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে বিদ্যমান ভাইরাস ও ব্যকটেরিয়ারোধী ক্ষমতা শরীরকে যেকোন ধরনের রোগের বিরুদ্ধেই লড়ার শক্তি প্রদান করে। পুষ্টিতে ভরপুর থাকায় দূর্বাঘাস শরীরকে সক্রিয় ও শক্তিপূর্ণ রাখতে সহায়ক। এটি অনিদ্রা, ক্লান্তি, স্ট্রেস ইত্যাদি রোগের জন্য লাভজনক।

ত্বকের সমস্যা: দূর্বাঘাসে বিদ্যমান প্রদাহরোধী ও জীবাণুরোধী গুণের কারণে তা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন চুলকানি, লাল লাল ফুসকুড়ি, একজিমা ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। এজন্য দূর্বাঘাস ও হলুদ পিসে ত্বকে লাগাবেন। দূর্বার রস পান করলে ঘনঘন পিপাসা লাগা থেকে মুক্তি মেলে।

মহিলাদের জন্য: দূর্বাঘাস মূত্রনালীর সংক্রমণের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী। এটি প্রোল্যাকটিন হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। ফলে স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী। মেয়েদের লিউকোরিয়া বা সাদাস্রাব, পাইলস ইত্যাদি থেকে মুক্তি মেলে। সাধারণত এক্ষেত্রে, দধির সাথে দূর্বাঘাস মিশিয়ে সেবন করতে হয়।

রক্তশূণ্যতা: দূর্বার রসকে সবুজ রক্ত বলা হয়। কারণ রস পান করলে রক্তশূণ্যতার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। এই রস রক্ত পরিষ্কারক এবং লোহিত রক্তকণিকা বাড়াতে সাহায্য করে। এগুলো ছাড়াও চোখের জ্যোতি বাড়াতেও সহায়তা করে। এজন্য নগ্ন পায়ে ঘাসের উপর হাঁটতে হয়। শীতের সকালে নরম-কোমল দূর্বাঘাসের উপর হাঁটতে পারেন।

মানসিক রোগে: দূর্বার রস মৃগী, হিস্টিরিয়া ইত্যাদি মানসিক রোগের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী। মাথায় দূর্বাঘাস পিসে লেপ দিলে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়!

হজম শক্তি বৃদ্ধি: দূর্বাঘাস নিয়মিত সেবন করলে পেটের অসুখ থেকে মুক্তি মেলে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। এর রস পানে পিত্তজনিত কারণে সৃষ্ট বমি ঠিক হয়ে যায়।

অন্যান্য ব্যবহার: উপর্যুক্ত উপকারীতা ছাড়াও দূর্বাঘাস নিম্নোক্ত উপকারও করে। দূর্বাঘাসে প্রচুর ফ্লেভিনয়েডস থাকে। যা আলসার প্রতিরোধে কার্যকর। এটি গ্লুকোজে রপরিমাণ কম করতে সহায়ক। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে হৃদপিণ্ড কে সুস্থ রাখে। সর্দি-কাশির সমস্যা দূর করে। কেটেগেলে দূর্বাপিস লাগিয়ে দিলে রক্তপাত বন্ধ হবে।

শেয়ার করুন: