এটি এমন একটি দেশ যেখানে কবরের থেকেও ছোট জায়গায় মানুষ বসবাস করে…

আমার একটি বন্ধু আছে ‘শ্রেয়া’ । সে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকে । প্রায়ই সে বলে যে তার বাড়িওলা খুব ঝগড়াটে । শ্রেয়ার ওনার সঙ্গে একদম বনে না । কখনো বিদ্যুৎ নিয়ে, কখনো কখনো পরিষ্কার নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকে ।

কাল তো ব্যাপার এত বেশি বেড়ে গিয়েছিল যে শ্রেয়া এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সে আর সেখানে থাকবে না। তারপর কি হল ? আমরা দুজন বেড়িয়ে পড়লাম তার জন্য একটি নতুন বাড়ি খুঁজতে ।

বাড়িটি পাওয়া গেছে, কিন্ত আমারা ভাড়া শুনেই ভয় পেয়ে গেছি । ছোট ছোট বাড়ির জন্য ভাড়া শুনেই আমারা অজ্ঞান হয়ে গেছি । তারপর ভাবলাম এখানে থেকে মানুষ খাবে কি আর বাঁচাবে কি ? তারপর, শ্রেয়া সিদ্ধান্ত নিল যে সে ঝগড়াটে বাড়িওলার সাথেই মিট মাট করে নেবে ।

এমনিতেও বড় বড় শহরে ভাড়া নেওয়া ঘর পাওয়া কঠিন। কিছু মানুষ ফুটপাথেই তাদের ঘর গড়ে তোলে। আপনি একবার ভাবুন কখনও এমন একটি বাড়িতে বাস করতে হবে যেখানে পা ছড়ানো কঠিন, আপনি তখন কি করবেন ? চিন্তা করেই ভয় লাগছে।

কিন্তু আজ আমরা এমন একটি স্থান সম্পর্কে আপনাকে বলতে যাচ্ছি। যেখানে মানুষ এমনই জায়গায় বসবাস করতে বাধ্য হয় ।

রান্নাঘর এবং টয়লেট একসাথে

আমরা দশম ক্লাসে উঠলেই বলি আমাদের নিজস্ব রুম প্রয়োজন । যদি সেটি না পাই তাহলে বাবার সাথে ঝগড়া হয়ে যায় । এই ছবিটি দেখুন। একটি ছোট জায়গায় সমগ্র বাড়ির জিনিসপত্র ঢোকানো ।

এটার চেয়ে তো আমাদের বাথরুম বড়। আসুন আমরা আপনাদের বলি যে হংকং এর প্রায় ২০০,০০০ মানুষ এই ধরনের জায়গায় বসবাস করতে বাধ্য হয়।

এটি হল কফিন হোম

হংকং এ এই ঘর গুলো কে কফিন হোম বলা হয়। কফিনকে আসলে বাক্স বলা হয় যেখানে মৃত্যুর পর খৃষ্টানরা দেহ বহন করে কবরস্থানে নিয়ে যায়। এই ঘরগুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে এই লোকগুলোর চেয়ে লাশের জন্য বেশী জায়গা থাকে ।

পাখির খাঁচার মত এই ঘর

মানুষ তাদের শখের জন্য অনেক বার খাঁচায় পাখি রাখে, কিন্তু এখানে এইসব মানুষদের জীবন সেই পাখিগুলির চেয়েও খারাপ হয়ে গেছে।

এই বড় বড় ভবনে আছে কফিন হোম

বাইরে থেকে রং বেরং এর দেখতে পাওয়া এই বিল্ডিং এ হাজার হাজার কফিন ঘর আছে, যার মধ্যে মানুষ ঠেসে ঠুসে থাকে ।

ঘুমানো তো দূর পা ছড়ানোও খুব কঠিন

আমরা আমাদের নিজস্ব বিছানার উপর ঘুমোতে পছন্দ করি । কিন্তু এনাদের দেখুন, সারাদিনের ভারী ক্লান্তির পরে তাদের পা ছড়িয়ে দেওয়াও বিপজ্জনক।

ময়লা হওয়া তো স্পষ্টতই

বিশ্বের সব দেশ পরিষ্কারের উপর প্রচার করছে। কিন্তু পরিস্থিতি যদি এমন হয় তবে কেউ কি করবে ?

এই ব্যক্তি জিনিসগুলির মধ্যে জিনিস হয়ে গেছে

এই ছবিটি দেখে আমার সরকারি কারাগার মনে পড়ে গেল । এই মানুষের তুলনায় ভালো আছে সেই বন্দীরা, যারা কোন ভাড়া না দিয়েই মজার সঙ্গে জেলে বাস করে ।

রাতে ঘুম আসেনা

প্রায়ই যখন একজন ব্যক্তি প্রেমে পড়ে তখন তার রাতে ঘুম আসে না। কিন্তু এখানে ঘুম না আসার কারণ প্রেম নয় বরং পর্যাপ্ত থাকার জায়গা ।

নিশ্বাস নেওয়াও খুব কঠিন

এই বৃদ্ধ মানুষটি বসে আছে যে ঘরের ভিতর, আমাদের এখানের অমন খাঁচায় মুরগি রাখা হয়।

হংকং হল থাকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল জায়গা

জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী হংকং বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল জায়গা। এইখানে এক ইঞ্চির বাড়িগুলির ভাড়াও খুব ব্যয়বহুল। বাধ্যতা এমন যে, ব্যয়বহুল হওয়ার পরেও বাড়িটি ভাড়া নিতে হয় ।

এই পরিস্থিতিতেও বাচ্চাটি হাল ছেড়ে দেয়নি

এটা হতে পারে শিক্ষার কারণে আগামীকাল এই শিশুরা কিছু হয়ে যায় । নিজের এবং অন্যদের জীবন পরিবর্তন করতে পারে ।

তারা এই অবস্থায়ও সুখী থাকার চেষ্টা করে

যাই হোক না কেন, যদি কেউ সুখী হতে চায় তাহলে সে তা পারে। এনাদের আরাম যদিও হারাম কিন্তু তারা খুশি থাকার চেষ্টা করছে ।

দেখুন আবার লাথি মেরে টিভি নাই ভেঙে দেন

এই অবস্থা দেখে শুধুমাত্র একটাই জিনিস মনে আসতে পারে ।

এরা কি আগামীকালের জন্য ভালো জীবন আশা করতে পারে ?

বলা হয় যে আশার উপর বিশ্ব নির্ভর করছে । কিন্তু জনসংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই লোকেদের জন্য একটি ভাল আগামীকাল আশা করা বেকার ।

ছোট পরিবার সুখী পরিবার

নিজে বসো বা জিনিস রাখো

উপর থেকে দেখলে মনে হচ্ছে এই মহিলা জিনিসপত্রের দোকানে বসে আছে।

দাদা একটু কোমর তো সোজা করে নিন

আপনি যদি মনে করেন যে এই লোকটি আলমারিটিতে বসে আছে, তাহলে তা সঠিক নয়। আসলে এটা ওনার বাড়ি ।

সরকারের কি কোন দায়িত্ব নেই ?

এই বৃদ্ধ মানুষটিকে দেখুন কিভাবে সে নিজেকে সামঞ্জস্য করে ঘুমাচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতি দেখে মনে হয় যে কেন হংকং সরকার তার জনগণের সমস্যা দেখতে পায় না।

শেয়ার করুন: