নারীদের সতীত্ব নিয়ে অনেকেই নানা ধারণা পোষণ করেন। আমাদের সমাজটাই এরকম যেখানে পুরুষদের সতীত্ব বিচার করা না হলেও নারীদের সতীত্ব অনেক পুরুষই বিচার কিওরে থাকেন। সাধারণত বিয়ের পর ফুলশয্যার রাতে মেয়েটির রক্তপাত হলে তবেই সে সত্যি বলে বিচার করা হয় আর নাহলে ভেবে নেওয়া হয় যে মেয়েটি দুষ্টচরিত্রের অর্থৎ সতী নন।
কিন্তু আপনাদের কি মনে হয়? পুরুষদের এই ধারণা কতটা যুক্তিযুক্ত? যুক্তিযুক্ত না হলেও এমন মানসিকতার মানুষ ভারতবর্ষের প্রায় সবজায়গায় পাওয়া যাবে। কিন্তু আসল ব্যাপারটি হলো যে এপুরুষদের নারী সম্বন্ধে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। প্রথমরাতে রক্তপাত হলেই যে মেয়েটি সত্যি হবে এমন কোনো কথা নেই। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। সব মেয়েরই যে ফুলশয্যার রাতে বা মিলনের প্রথম রাতে রক্তপাত হয়না তা বুঝতে হলে প্রথমে হাইমেন কি তার উত্তর জানা দরকার।
হাইমেন হলো এমন একটি পর্দা যেটি মেয়েদের যোনির মুখকে ঢেকে রাখে। কিন্তু অনেকেই মনে করেন যে এটি সম্পূর্ণ জনিকে ঢেকে রাখে-যে ধারণাটি ভুল। সব মেয়ের মধ্যে এই হাইমেনটি নাও থাকতে পারে আবার নারীভেদে হাইমেনের আকার গঠনও ভিন্ন ভিন্ন হয়। এটি মেয়েদের উচ্চতা, গঠন এবং ওজনের ওপর নির্ভর করে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাইমেনটি মিলিয়েও যায়। অধিকাংশ মেয়ের ক্ষেত্রে সাইকেল চালানো বা এক্সারসাইজ করা বা নাচ করা প্রভৃতির ফলে হাইমেনটি ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে।
সেইসব কারণে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের বকৰ্তব্য অনুযায়ী, প্রায় ৬৩ % ক্ষেত্রে বিয়ের প্রথমার্তে মেয়েদের রক্তক্ষরণ হয়নি। সুতরাং মেয়েটি যে অসতী তা বলা ভুল। অনেক সময় বয়স কম বলে একজন ১৬ বছরের মেয়ের ২৫ বছরের মেয়ের তুলনায় রক্তক্ষরণ বেশি হয়। আবার জোরপূর্বক সঙ্গম করলে বা কম বয়সী মেয়ের সঙ্গে সঙ্গম করলে তবেই রক্তপাত হবার সম্ভাবনা থেকে যায়, শরীরে যন্ত্রনাও হয়. আর মাত্র ৩৭% ক্ষেত্রে এইভাবেই রক্তপাত হয়ে থাকে।
কিন্তু রক্তপাত না হলে অনেক পুরুষ ভেবে নেন যে তার স্ত্রী সতী নন, অর্থাৎ তিনি এর আগেও কোনো পুরুষের সঙ্গে সঙ্গম করেছেন, অনেক ক্ষেত্রে ডিভোর্সের কথাও শোনা গেছে। সুতরাং, প্রতিটি পুরুষেরই হাইমেন সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা জরুরি।