জাপানের মানুষদের গড় আয়ু বেশি। কারণ তারা কঠোর পরিশ্রমী এবং সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে ভালবাসেন। জাতি হিসেবে তারা অনেক সফল। নানাবিধ কারণের মধ্যে সর্ব প্রথম হল নিয়ম তান্ত্রিক জীবন যাপন। আপনি জাপানে মোটা মানুষ দেখবেন না খুব একটা, তার মানে কি তারা সকলেই ডায়েটিং করে? আসলে তাদের প্রাত্যহিক খাদ্যাভ্যাসই হলো প্রচুর পুষ্টি উপাদানে ভরপুর খাদ্য অল্প পরিমাণে আহার করা।
আর তারা তাদের প্রাত্যহিক চলাফেরায় অনেক কিছু এমন ভাবে পালন করে যাতে করে তাদের আর আলাদা ভাবে ব্যায়াম করতে হয় না। যেমন, অল্প দূরত্বের পথ তারা হেটে অতিক্রম করে, মোটর চালিত যান থেকে তারা সাইকেল বেশি পছন্দ করে। এই অভ্যাসগুলো তাদের শারীরিক ভাবে আরো সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আমরা আজ জাপানের প্রধান খাবারের রেসিপি নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব-
উপকরণ:- ১) মাছ, ঝিনুক বা মাংসসহ আপনার পছন্দের যে কোনো কিছু। ২) সুশির ভাত রান্না করার জন্যে ছোট দানার আতপ চাল। ৩) লবনবিহীন শুকনো সামুদ্রিক শৈবালের লেয়ার (সুশি তৈরির জন্যে এটি বিশেষভাবে প্রস্তত অবস্থায়ই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়) ৪) চিনি ৫) লবন ৬) সয়া সস ৭) ভিনেগার
প্রণালী:- ১) দুই ধরনের সবজি বাছাই করুন (শসা ও গাজর হতে পারে) এবং এক ধরনের মাছ বা মাংস। ২) আতপ চাল ঠান্ডা পানি দিয়ে বার বার ধুয়ে নিন যতক্ষন না চাল ধোয়া পানি সম্পূর্ন পরিস্কার হচ্ছে। তারপর চাল সেদ্ধ করে ফেলুন। প্রথমে ঢাকনা না দিয়ে ২ কাপ চালের সাথে ২ কাপ পানি দিয়ে উচ্চ তাপে চুলায় চড়িয়ে দিন। যখন এটি সেদ্ধ হতে শুরু করবে চুলার আঁচ একেবারেই কমিয়ে দিয়ে ঢাকনা দিন। ১৫ মিনিট এভাবে সেদ্ধ করার পর চুলা থেকে নামিয়ে ১০ মিনিট সাধারন তাপমাত্রায় রেখে দিন। ভাতটা একদমই আঠালো ধরনের হবে।
৩) শসাগুলোকে চপিং বোর্ডে নিয়ে চিকন ও লম্বা করে কাটুন। চিংড়ি/কাঁকড়া ইত্যাদি ব্যবহার করতে চাইলে সিদ্ধ করে খোলস থেকে ছাড়িয়ে নিন। মাংস ব্যবহার করতে চাইলে পাতলা স্লাইস করে সিদ্ধ করুন বা আপনার পছন্দমতন মশলা মাখিয়ে ভেজে নিন। মাছকেও একই উপায়ে প্রস্তত করতে পারেন। জাপানীরা কাঁচা ও সেদ্ধ, উভয় প্রকারেই মাছ খেয়ে থাকে। ৪) এবার ছোট একটি বাটিতে ২ টেবিল চামচ ভিনেগার, ২ টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ সয়াসস ও ১ টেবিল চামচ লবন মিশিয়ে হাল্কা গরম করে নিন।
৫) একটি কাঠের বা কাঁচের পাত্রে ভাত নিয়ে এই মিশ্রনটি ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে মেশান। যাতে প্রতিটি ভাতে মিশ্রনটি লাগে। হয়ে গেল আপনার সুশি রাইস। একে রুম তাপমাত্রায় রেখে বাকি কাজ করুন। ৬)একটি বাঁশের ছোট্ট ম্যাটের ওপর শুকনো শৈবালের লেয়ারটি রাখুন। এবার এর ওপর ভাত বেশ পুরু করে ছড়িয়ে দিন, রুটিতে মাখন মাখাবার মতন করে। খেয়াল রাখবেন যাতে কোন ফাঁকা জায়গা না থাকে। এবার ভাতের উপর কয়েকটি গাজর/শসা/অন্যান্য সবজির টুকরো দিন ও তার মাঝখানে দিন কাঁকড়ার টপিং।
৭) এবারে বাঁশের ম্যাটটি সাবধানে রোলের মত করে মুড়ে নিন। মোড়াবার সময় চেপে চেপে মোড়াতে হবে। একটু মোড়াবেন, বাঁশের ম্যাটটি সরিয়ে নিবেন। তারপর আবার মোড়াবেন, যাতে এর ভেতরে ভাতটা টিউবের মত মুড়ে গিয়ে সবজি ও কাঁকড়ার টুকরোগুলো ঠিক মাঝে থাকে। মোড়ানো হয়ে গেলে দেখবেন বেশ সুন্দর একটা টিউবের আকার পেয়েছে।
৮) সুশি রোলটিকে ছোট ছোট টুকরোয় কাটার সময় অবশ্যই ধারালো ছুরি ও চপিং বোর্ড ব্যবহার করবেন। কারন, আপনার কাটার কৌশল ও দক্ষতার উপরেই এর পরিবেশনের সৌন্দর্য নির্ভর করবে, এবং সব চেয়ে বড় কথা এই রোল থেকে উপাদানগুলো যাতে ভেঙ্গে ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৯) পরিবেশনের সময় উপরে দিতে পারেন একটু সস/ জাপানী মেয়নেজ/ ফিস সস। আর পাশে রেখে দিতে পারেন সুন্দর করে কাটা টমেটো, লেবু ও দু একটি লেটুস পাতা।