‘ক্যান্সার আল্লাহর দেয়া আমার জন্য গিফট, এটি আমার চোখ খুলে দিয়েছে’

অফুরন্ত প্রাচুর্যের মধ্যে থাকা একজন যুবকের যদি জানতে পারে তার আয়ু আছে আর ৭ মাস তাহলে কেমন ধাক্কা লাগাতে পারে? তেমনই একজন আলী বানাত।

আলী বানাত যিনি মিলিয়ন ডলারের ব্যবসায় করতেন। সে যে ব্রেসলেটটা পরতো সেটার দাম বাংলাদেশি টাকায় ৫০ লাখ, জুতা পরতো তার দাম লাখ টাকার উপরে, এমনকি আমরা যে স্যান্ডেল পরি, এইরকম একটা স্যান্ডেল সেও পরতো যার দাম ছিল ৬০ হাজার টাকার মতো।

ফেরারি স্পাইডার মডেলের যে গাড়িটি সে চালাতো তার মূল্য ৫০ কোটির উপরে। একদিন চা খেতে গিয়ে ফোসকা পড়লো, ডাক্তারের কাছে গিয়ে জানতে পারলো তার পুরো শরীরে ক্যান্সার নামক মরণ ব্যাধি বাসা বেঁধেছে। ডাক্তার সময় বেঁধেদিলো ৭ মাস।

সেই মুহূর্তে তিনি আল্লাহর কথা ভাবলেন। ক্যান্সারটাকে সে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া উপহার মনে করে নিলেন। এর মাধ্যমে আল্লাহর দেয়া প্রতিটা নেয়ামতের গুরুত্ব বুঝেছে। ‘মুসলিমস অ্যারাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড’ নামে প্রজেক্ট চালু করে সেখানে নিজে সব সম্পত্তি দান করে দিয়েছেন।

টোগোতে মসজিদ আর স্কুল বানালেন। লাখ লাখ টাকা দামের জিনিস মানুষকে দিয়ে দিয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে গত ২৮ মে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।

এর আগে মৃত্যুর কয়দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে আলী বানাত বলেছিলেন, আমি এখন এমন এক অবস্থায় আছি যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি একটি উপহার পেয়েছি। আমার সারা শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে। এখন আমি আমার পুরো জীবনকে পাল্টে ফেলেছি মানুষকে সাহায্য করার জন্য।

ক্যান্সারকে কেন উপহার বলছেন? এর জবাবে তিনি বলেন, এটা উপহার কারন ক্যান্সারের মাধ্যমে আমাকে আল্লাহ সুযোগ দিয়েছেন নিজেকে বদলানোর।

ক্যান্সার কোন বিষয়গুলোর ব্যাপারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে? জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, সবকিছুর ব্যাপারেই আমার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে গেছে। জীবনের সবচেয়ে ছোট বিষয়গুলোর ব্যাপারেও বুক ভরে নিশ্বাস নিতে পারাও।

আমি কবরস্থানে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম কবরে আপনি কোন কিছু সাথে করে নিয়ে যেতে পারবেন না। মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ আপনার পাশে থাকবে না। আমল ছাড়া আপনি কবরে আর কিছুই নিয়ে যেতে পারবেন না। আপনি কবরে একটি টাকাও নিয়ে যেতে পারবেন না। কিন্তু সাদাকায়ে জারিয়া আপনি কবরে নিয়ে যেতে পারবেন। আর বিচার দিবসের আগ পর্যন্ত, চূড়ান্ত ফায়সালার আগ পর্যন্ত এ সাদাকায়ে জারিয়াহই আপনার কাজে আসবে।

শেয়ার করুন: