সময় পেলে চুটিয়ে প্রেম করবেন বকুল!

মুখচোরা অহনা থেকে ডাকাবুকো বকুল। বিপরীতধর্মী দুটো চরিত্র। দুটোতেই সমান সাবলীল ‘বকুলকথা’র বকুল। অর্থাৎ ঊষসী রায়। অন্যায় দেখলে এখন রে রে করে ওঠেন। অথচ দু’দিন আগেও তো এমনটা ছিলেন না।

সায় দিলেন কথায়, ‘‘না তো। যখন কাজ করতে এলাম, সদ্য কলেজ শেষ করেছি। অহনার সঙ্গে ভীষণ মিল পেতাম। নতুন এসেছি বলে হয়তো মজার ছলেই কেউ বোকা বানানোর চেষ্টা করত।

হয়েও যেতাম। দুম করে হয়তো এমন কিছু বলে দিলাম, যা বলা মোটেও উচিত নয়। তবে ধীরে ধীরে বদলে গেলাম। তাই বোধ হয় বকুলের মতো ম্যাচিয়োর্ড একটা চরিত্র করতে পারি এখন।’’

আশুতোষ কলেজের ইতিহাসের ছাত্রী ঊষসীর বড় হওয়াটা অন্য রকম। ‘‘বাবা-মা চাইতেন যেন অন্য রকম ভাবে বড় হই। ক্লাস টুয়ে চেতলা কৃষ্টি সংসদ নাটকের দলে ভর্তি করে দেন বাবা।

যখন অন্য বাচ্চারা নাচ-গান-আঁকা-সাঁতার শিখত, আমি নাটক শিখতাম। তখন ভাবিনি যে, অভিনেত্রী হবই। তবে অভিনয়টা অবশ্যই পছন্দ করতাম,’’ বলছেন ঊষসী।

চিত্রনাট্যকার, সহ-পরিচালক দেব রায়ের মেয়ে হওয়ার সুবাদে আলাদা গাইডেন্স পেয়েছেন ঊষসী। তবে চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে গেলে নিজের মতো করেই ভাবেন তিনি। ‘‘টমবয় মানেই আলাদা— এমন নয়। আমরা কি বাড়িতে মা-বাবাকে বলি না, ‘চাপ নিও না!’ বকুলও কিন্তু এ রকমই সহজ।’’

ধারাবাহিকের পরে কি বড় পর্দায় পা়ড়ি দেওয়ার ইচ্ছে? ‘‘নিশ্চয়ই। শুধু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কথা বলছি না। আমরা যাঁরা দর্শক, সিনেমা হলে গেলে কখনও কি নিজেকে ওই জায়গাটায় কল্পনা করে নিই না? ভাল সুযোগ পেলে বড় পর্দায় অভিনয় নিশ্চয়ই করব,’’ প্রত্যয়ী জবাব ঊষসীর।

আর এই ব্যস্ততাতেও কি অবসর মেলে? ‘‘আমাদের ইউনিট খুব ভাল। সপ্তাহে এক দিন ছুটি তো বাঁধাধরা। শুট থাকলেও তাড়াতাড়ি প্যাক আপ হয়। অবসরও পাই। তখন সিনেমা দেখা, বই পড়া, আড্ডা দেওয়া, গান শোনা, বেড়াতে যাওয়া, খাওয়া,’’ গড়গড়িয়ে বলে চলেন তিনি।

তাতেও শেষ নয়, ‘‘যাঁরা আমাকে চেনেন, তাঁরাই জানেন, আমি কেমন খাই। মানে আমি ফাটিয়ে খাই। যেটা দেবেন, সেটা অনেকটা পরিমাণে না খেলে ঠিক শান্তি হবে না আমার। জাঙ্ক, মিষ্টি, তেলতেলে খাবারেই নজর।

আর বিরিয়ানি এমন একটা জিনিস, ব্রেকফাস্ট থেকে মাঝরাত যখনই দেওয়া হোক, যে অবস্থাতেই থাকি, খেয়ে নিতে পারি আমি। চাইনিজ়, কন্টিনেন্টালটাও ছা়ড়তে পারি না।’’

প্রশ্নটা করেই ফেললাম, আপনি কি কথা বলতে খুব ভালবাসেন? চটজলদি জবাব, ‘‘কথা বলার মতো মানুষ পেলে সে আমার কথা শুনে পাগল হয়ে যাবে। আবার কোথাও মিলমিশ না হলে সেখান থেকে না বেরোনো পর্যন্ত মুখ বন্ধ।’’

লীলা মজুমদার, সত্যজিৎ রায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রীজাতর লেখার পাশাপাশি ঊষসী প্রেমে প়ড়েছেন নতুন এক জনের। ‘‘শাহরুখকে ছোটবেলা থেকে পছন্দ করি ঠিকই। তবে ইদানীং সলমনের উপরে অদ্ভুত ভাল লাগা তৈরি হয়েছে।’’

আর প্রেম? উত্তরটা কি রাখঢাক করেই দেবেন? ‘‘লুকোনোর কোনও ব্যাপারই নেই। সম্পর্কে সময় দেওয়া জরুরি। আর সেই সময়টা আমার কাছে এখন নেই। এটা মোটেও বলব না যে জীবনে প্রেম নেই। তারা দরজায় নকও করে।

কিন্তু তারা যেই দেখে যে আমার সময় নেই, তারা আবার ওই রাস্তা দিয়েই ফিরে যায়!’’ মানে, সময় পেলে চুটিয়ে প্রেম করবেন বলছেন? হেসে গড়িয়ে গেলেন নায়িকা।

‘‘রোম্যান্টিক তো আমরা সব বাঙালিই। তবে কেউ যদি শ্রীজাত, চন্দ্রবিন্দু, কবীর সুমনের লাইন তুলে আমার সঙ্গে কথা বলে, তা হলে তার টার্গেটটা ফুলফিল হয়ে যে-তে-ও পারে!’’

শেয়ার করুন: