থাইরয়েড হরমোনজনিত রোগীর সংখ্যা দেশে প্রায় পাঁচ কোটি। শহরের ২০ থেকে ৩০ ভাগ গর্ভবতী এ রোগে আক্রান্ত বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি (বিইএস) নামক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংগঠন। গতকাল শুক্রবার বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ তথ্য প্রকাশ করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জাতীয়ভাবে কোনো জরিপ না হলেও দেশে এ রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে হরমোন ঘাটতিজনিত ‘হাইপোথাইরয়েডিজম’ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিইএস নেতারা জানান, দেশের অন্তত তিন কোটি রোগীই জানেন না তাদের এ সমস্যা রয়েছে। সাধারণত একজন পুরুষের বিপরীতে ১০ জন নারী থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা বলেন, এ রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় জনসচেতনতাই মুখ্য। থাইরয়েড হরমোন কম বা বেশি নিঃসৃত হওয়া উভয়ই এ রোগের সৃষ্টি করে। বিয়ে ও গর্ভধারণের আগে নারীদের অবশ্যই থাইরয়েড পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সব বয়সের মানুষের স্ক্রিনিং, আয়োডিনের অভাব, ভেজাল খাদ্য ও আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করা এ রোগের প্রধান কারণ। এ ছাড়া সরকার খুব সহজে থাইরয়েডের বাধ্যতামূলক স্ক্রিনিং চালু করতে পারে। পাশাপাশি বাজারের লবণগুলোর আয়োডিনের মান নিশ্চিত করতে পারে। আমাদের গবেষণা বলছে, বাজারের লবণে সঠিক আয়োডিনের মাত্রা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, এ রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। দেশে আয়োডিনের ডোজ মাত্র ৩০০ টাকা আর সিঙ্গাপুরে এ খরচ ৫০ হাজার টাকা। এ রোগের পরীক্ষা করাতে দেশের সরকারি হাসপাতালে খরচ মাত্র ২৫০ টাকা আর বেসরকারিতে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা।
অন্যদিকে শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ বিষয়ে চিকিৎসক ও রোগীদের সচেতনতা বাড়াতে এক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিইএস সভাপতি ডা. ফারুক পাঠান, সহ-সভাপতি ডা. ফরিদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ডা. হাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহজাদা সেলিম প্রমুখ।