ভাত

ভাত খাওয়ার মাঝে পানি খেলে কি হয়?

ভাত খাওয়ার মাঝে পানি খেলে- আমরা সাধারণত এক গ্লাস পানি নিয়ে ভাত খেতে বসি। আর পান্তা ভাত তো পানিতে ভাসে। কিন্তু অনেকে বলেন, খাওয়ার মাঝে পানি খেলে ক্ষতি হয়।

পানি তাহলে কখন খাওয়া উচিত? খাবার খাওয়ার সময় পানি পান করা যাবে নাকি যাবে না তা নিয়ে আছে অনেক মত। অনেকের ধারণা খাবার খাওয়ার মাঝে পানি পান করলে ওজন বেড়ে যায়। কিন্তু আসলে কি?

হজম প্রক্রিয়া মূলত শুরু হয় যায় পরবর্তী খাবারের কথা ভাবা শুরু করলেই। খাবারের কথা ভাবলে মুখে লালা তৈরি হয়। খাবার চিবাতে শুরু করলে তা মুখের লালার সঙ্গে মিশে যায়।

লালায় থাকে হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমসমূহ। চিবিয়ে নরম করা খাবার গিলে ফেলার পরে তা পাকস্থলীতে পৌঁছায় এবং পাকস্থলীর এসিডের সঙ্গে মিশে যায়। সাধারণত খাবার হজম করতে গড়ে চার ঘণ্টা সময় লাগে পাকস্থলীর।

পানি পান করার পরে তা পাকস্থলীতে গিয়ে খুব বেশি সময় স্থায়ী হয় না। দশ আউন্স পানি খুব বেশি হলে দশ মিনিট পাকস্থলীতে থাকে। তাই খাওয়ার সময় পানি পান করলে তা দীর্ঘসময় পাকস্থলীতে থাকেনা বরং খুব দ্রুতই খাবারগুলোকে ভিজিয়ে পাকস্থলী ত্যাগ করে।

অনেকের ধারণা খাওয়ার সময় তরল পান করলে শক্ত খাবার ঠিক মতো হজম হওয়ার আগেই পাকস্থলী থেকে বের হয়ে যায়। ফলে খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া যায়না। তবে এখন পর্যন্ত এই ধারণা কোনো গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি।

যেহেতু শক্ত খাবারের আগেই পানি বা যে কোনো তরল পাকস্থলী থেকে বের হয়ে যায়, সেহেতু পাকস্থলীর শক্ত খাবারের উপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না তরল খাবার। পানির তাপমাত্রাও হজম প্রক্রিয়া কিংবা পুষ্টি গ্রহণে কোনো প্রভাব ফেলে না।

তবে অটোয়া ওয়েস্ট নিউট্রিশনের মতে, খাবার খাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে পানি খাওয়া উপকারী। কারণ খাওয়ার সময় পানি পান করলে তা পাকস্থলীতে যেয়ে গ্যাস্ট্রিক জুসের সঙ্গে মিশে সেটার কার্যকারিতা কিছুটা কমিয়ে দিতে পারে। গ্যাস্ট্রিক জুস খাবারের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

মায়োক্লিনিকের মতে, খাবারের মাঝে পানি পান করলে পানি পানের পরে আধা ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আবার খাওয়া স্বাস্থ্যকর। কারণ খাবার মুখে দেয়ার ঠিক আগে পানি পান করলে মুখের এনজাইম সমৃদ্ধ লালা ধুয়ে যায়। এতে হজম প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

খাবার সময় পানি পান করার কিছু উপকারিতাও প্রমাণিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গবেষণায়। খাবার খাওয়ার বিরতিতে পানি পান করলে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার প্রবণতা কমে যায়। ফলে যারা অতিরিক্ত ওজন সমস্যায় ভুগছেন তাদের বেশি খেয়ে ফেলার ঝুঁকি কমে যায়।

শেয়ার করুন: