আনারস-দুধ একসঙ্গে খাবেন না। এ কথাটি আমরা সব সময় শুনে থাকি। আনারস-দুধ একসঙ্গে খেলে নাকি হতে পারে বিপত্তি। তবে কথাটি কি সত্যি। কী বিপত্তি হতে পারে, তা কি আপনার জানা আছে।
আনারসে রয়েছে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম ও ফসফরাস। আর দুধকে আমরা সুষম খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করি। তবে আনারস আর দুধ একসঙ্গে খেলে মানুষ বিষক্রিয়া হয়ে মারা যায়-এ রকম একটি ধারণা প্রচলিত আছে।
জানা আছে, দুধ-আনারস একসঙ্গে খেলে কি সমস্যা হয়? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন, ঢামেক টেলিমেডিসিন বিভাগের কো-অর্ডিনেটর সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ যায়েদ হোসেন। আসুন জেনে নেই দুধ আনারস একসঙ্গে খেলে কী হয়?
দুধ-আনারসে বিষক্রিয়া: আনারস ও দুধ একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়া হয়ে কেউ মারা যায় এই ধারণা ভুল। এগুলো একধরনের ফুড ট্যাবু বা খাদ্য কুসংস্কার। দুধ আর আনারস একসঙ্গে খেলে কেউ মারা যায় না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
বদ হজম, পেট ফাঁপা, পেট খারাপ: আনারস ও দুধ একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়া হয় না। আনারস একটি অ্যাসিডিক এবং টকজাতীয় ফল। দুধের মধ্যে যে কোনো টকজাতীয় জিনিস দিলে দুধ ছানা হয়ে যেতে পারে বা ফেটে যেতে পারে। হতে পারে বদহজম, পেট ফাঁপা, পেট খারাপ।, তবে বিষক্রিয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
গ্যাসট্রিকের সমস্যা: দুধ ও আনারস খেলে বিষক্রিয়া সমস্যা নেই। তবে যাদের গ্যাসট্রিকের সমস্যা রয়েছে, খালি পেটে আনারস খেলে তাদের এই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই খালি পেঠে আনারস ও টকজাতীয় কোনো খাবার খাবেন না।
কুসংস্কার: এমন কখনো দেখিনি যে দুধ-আনারস একসঙ্গে খেয়ে মানুষ মারা গেছে। এটা একটা কুসংস্কার। ডেজার্ট, কাস্টার্ড বা স্মুদিতে আনারস-দুধ একত্রে মিশিয়ে খাই। এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয় না।এটি এটি সম্পূর্ণ কুসংস্কার।
খাদ্যের সমন্বয়: পাইনঅ্যাপেল কাস্টার্ড, ডেজার্ট, পাইনঅ্যাপেল স্মুদি, পাইনঅ্যাপেল মিল্ক সেক, পাইনঅ্যাপেল সালাদ, পাইনঅ্যাপেল ইয়োগার্ট ইত্যাদি ফলগুলো আমরা একসঙ্গে খাই। এই ফলগুলোর মধ্যে খাদ্যের সঠিক সমন্বয় থাকে। তাই কোনো সমস্যা হয় না।
অন্যদিকে এক গ্লাস দুধ খেলেন, পাশাপাশি আনারস খেয়ে নিলেন তাহলে সঠিক খাদ্যের সমন্বয় হয় না। এ ক্ষেত্রে সঠিক সমন্বয় না হওয়ার ফলে পাতলা পায়খানা, বদ হজম, অ্যাসিডিটিসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিরতি: দুধ-আনারস একসঙ্গে না খেয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিরতি দেয়া যেতে পারে। কারণ একসঙ্গে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে খাদ্যে বিষক্রিয়া হওয়ার কোনো কারণ নেই।