রানা প্লাজা
রানা প্লাজা

আজ সেই বিভীষিকাময় দিন, মনে পড়ে কি এ দিনের কথা?

দেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে বড় ট্র্যাজেডির নাম রানা প্লাজা ধস। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় এক হাজারেরও বেশি শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হয়। আজ সেই বিভীষিকাময় দিন, মনে পড়ে কি এ দিনের কথা? আহত হন কয়েক হাজার শ্রমিক। ওই ঘটনা শুধু বাংলাদেশকে নয়, পুরো বিশ্বকে নাড়া দেয়। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় শ্রমিকদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি। সমালোচনার মুখে পড়েন তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকরা।

এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার এই দুর্ঘটনার পাঁচ বছর পূর্তিতে নানা আয়োজনে স্মরণ করা হবে নিহতদের। আগের চার বছরের মতোই দাবি করা হবে বিচার আর সরকারের পক্ষ থেকে বিচারের আশ্বাসও আসবে। হয়ত আরও একটি বছর যাবে এভাবে। কিংবা তার পর আরও একটি বছর।

বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় এভাবেই তৈরি হচ্ছে হতাশা। যে বিষয়টি বারবার আইন বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে আট তলা রানা প্লাজা ধসে সেখানে থাকা কয়েকটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১১৭ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ১৭ দিনের অভিযানে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৯ জন মারা যান। সে হিসেবে নিহত হয় এক হাজার ১৩৬ জন।

অন্যদিকে আহত হয় এক হাজার ১৭০ জন। মৃত উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৮৪৪ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা রেখে ২৯১ জনের অশনাক্তকৃত মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে ৭৮ জন।

সারা বিশ্বেও অন্যতম ভয়াবহ এই শিল্প দুর্ঘটনার পর মামলা হয় মোট তিনটি। হত্যা, ইমারত নির্মাণ আইন এবং ইমারত নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে তিনটি মামলায় অভিযোগ গঠনও হয়েছে। কিন্তু এরপর আইনি জটিলতায় ঝুলে আছে বিচার। এর দুটি মামলার বিচার গত দুই বছরে একটুও আগায়নি। মামলাগুলোর ৪২ আসামির মধ্যে একমাত্র ভবনটির মালিক সোহেল রানা এখন কারাগারে। বাকিদের ৩২ জন জামিনে, সাত জন পলাতক এবং দুই জন আসামি মারা গেছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সেদিনের সেই ভয়াল স্মৃতি আর শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা বয়ে বেড়ানো মানুষগুলো এখনও আসেন এখানে। সহকর্মী, বন্ধু, বান্ধবী, স্বামী, স্ত্রীর স্মৃতিকাতরতা তাদের হয়তো ফিরিয়ে নিয়ে যায় অতীতের কোনো খুঁনসুটিতে, নয়তো কোনো আনন্দঘন মুহূর্তে। সারাদিন নিজেরা নানা দুঃখগাঁথা ভাগাভাগি করে আবার ফেরেন যার যার বাড়িতে।

শেয়ার করুন: