কাঠগোলাপ

কাঠগোলাপের যত্ন

কাঠগোলাপ দেশের ছোট-বড় সবার কাছে পরিচিত ফুল। কাঠগোলাপের ইংরেজি নাম Frangipani. পরিবার Apocynaceae এবং Plumeria বর্গের সদস্য। গাছটির কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখা নরম এবং শাখা-প্রশাখা কম হয় বলে সোজা উপরের দিকে উঠে যায়। ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বাকল মোটা ও পুরু। শীতে গাছের অধিকাংশ পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তে নতুন পাতা গজায়।

তা আকারে বেশ বড় ও পুরু। শিরা-উপশিরা স্পষ্ট। কাণ্ডের ডগায় একগুচ্ছ ফুল অন্যরকম সৌন্দর্য নিয়ে চুপটি করে বসে থাকে। ফুটন্ত ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মৌ মৌ করে। ফুলের আকার মাঝারি। পাঁচটি পাপড়ি থাকে। ফুলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল কোনো কোনো ফুল দুধের মতো সাদা, কোনোটি সাদা পাপড়ির ওপর হলুদ দাগ, আবার কোনোটি লালচে গোলাপি রঙের। আবার সাদা রঙের কিছু ফুল দীর্ঘ মঞ্জুরিদণ্ডের আগায় ঝুলে থাকে। প্রায় সারা বছর ফুল ফুটলেও গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শরতে বেশি ফুল ফোটে।

সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়। আবহাওয়ার সঙ্গে মিল থাকায় আমাদের দেশেরও কাঠগোলাপের দেখা মেলে। অঞ্চলভেদে এ ফুল কাঠচাঁপা, গরুড়চাঁপা, গুলাচ, গুলাচিচাঁপা, গোলাইচ, গোলকচাপা, চালতাগোলাপ ইত্যাদি নামে পরিচিত।

কাঠগোলাপের আকৃতি ও বিকাশ ঠিক রাখার জন্য সঠিক পরিচর্যা প্রয়োজন। গাছ রোপণের জন্য উঁচু জায়গা নির্বাচন করতে হয়। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও পানির প্রয়োজন হয়। কম-বেশি হলে কাঠগোলাপ গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। শাখা কাটিংয়ের মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটানো হয়। বসতবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাগান এবং বাড়ির ছাদের টবে কাঠগোলাপ গাছ রোপণ করা যায়।

মিডিয়া: ১ ভাগ মাটি, ১ ভাগ বালি, ২ ভাগ জৈব সার আর সাথে কিছু চা পাতা আর ডিমের খোসা গুড়া মিক্স করে মিডিয়া তৈরি করা যায়। গাছের সাইজ অনুযায়ী পাত্র নির্বাচন করতে হবে।

রোদ ও পানি: কমপক্ষে ৬/৭ ঘন্টার সরাসরি রোদের প্রয়োজন।মিডিয়া শুকালে পানি দিতে হবে।অতিরিক্ত পানিতে গোড়া পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো হতে হবে যাতে বৃষ্টি পানি গোড়ায় জমে না থাকে।

সার: মাসে ১ বার আমি গাছের গোড়া খুচিয়ে জৈব সার দিই আর ১৫ দিন পর পর ১ বার খৈল পচা পানি।

রোগ: পাতা কুকড়ে যাওয়ার বা মিলিবাগ এর আক্রমন বেশি দেখা যায়।পাতা কুকড়ে যাওয়ার জন্য যেকোনো মাকড়নাশক,আর মিলিবাগ এর জন্য সাবান পানি/ভাত পচিয়ে সেই পানি স্প্রে করলে তা দমন করা যায়।

শেয়ার করুন: