নারী

কে এই রহস্যময়ী নারী?

গায়ের রং শ্যামলা, মাথায় স্কার্ফ, কাঁধে সাদা ব্যাগ ও হাতে কাগজ-কলম। বয়স আনুমানিক ত্রিশ। সুপ্রিমকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে অবস্থিত গ্রিক দেবীর ভাস্কর্যের কাছে অবস্থান নিয়ে শুধু লিখেই যাচ্ছেন। ভাস্কর্য পাহারায় নিয়োজিত দুই পুলিশ সদস্য জানান, মহিলাটি প্রতি কর্মদিবসে সকালে আসেন আবার বিকালে চলে যান। এ সময়ের মধ্যে তিনি শুধু লিখতেই থাকেন। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেন না।

তবে মাঝে মধ্যে সুপ্রিমকোর্টের লিগ্যালএইড অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। সারা দিন যা লিখেন, তা বিকালে লিগ্যাল এইড অফিসের ডাস্টবিনে ফেলে যান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রহস্যময়ী এ নারী টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা চাঁনমিয়ার মেয়ে। নাম ইরানী। একসময় স্বামীর সঙ্গে ৩৩৫/বি খিলগাঁও তালতলা লোহারগেট এলাকায় থাকতেন। তাদের সংসারে এক ছেলে ছিল। স্বামী ইব্রাহিম খলিল মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাচিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। আড়াই বছর আগে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসেন ইরানী। এখন থাকেন মোহাম্মদপুরে বোনের বাসায়।

এ নারী প্রতিদিন কেন সুপ্রিমকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্যের কাছে অবস্থান নেন, তা কেউ বলতে পারছেন না। কেউ কেউ বলছেন, মহিলাকে মাঝেমধ্যে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। সুপ্রিমকোর্টে এভাবে প্রতিদিন এসে বসে থাকার কারণ জানতে চাইলে ওই নারী কোনো জবাব দেন না। সারক্ষণ শুধু কাগজে লিখেই যান।

লিগ্যাল এইড অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, এ নারীকে দুই বছর ধরে এখানে দেখছি। সকাল ৯টার দিকে আসে আর রাত ৮টার দিকে চলে যায়। এখানেই কাপড়চোপড় শুকায়। সে একেক সময় একেক কথা বলে। এই নারীকে ঘিরে অনেক রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ মে রাতে হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামপন্থী দলের দাবির মুখে ভাস্কর্যটি অপসারণ করার পর সেটি এনেক্স ভবনের সামনে স্থান পায়। সেই থেকে দু’জন পুলিশ সার্বক্ষণিক পাহারা দিয়ে আসছেন। আর এ ভাস্কর্যের কাছেই রহস্যময়ী নারীর অবস্থান।

শেয়ার করুন: