নারী

মানুষ হিসেবে নারীর প্রকারভেদ

নারী সম্ভবত এক দীর্ঘ অমিমাংসিত রহস্যের নাম। যুগে যুগে হাজারো-লাখো মনিষীদের ভাবনায় নারীদের ভিন্ন ভিন্ন স্বরূপ ফুটে উঠেছে , ব্যাখ্যার অতীত এই চরিত্র কখনো কোমল কখনো রুদ্র কখনো হিংস্র আর কখনওবা মায়ায় ভরা। প্রায় সবার মতেই নারীদের চেনা আসলে কঠিন।

তবে প্রকারভেদ করে ফেললে চিনে ফেলাটা মনে হয় একটু সোজা হয়ে যায়। দীর্ঘ এই জীবনে আশে পাশে তো কম রমণী দেখা যায়না ,তাই তাদের দেখে যা অনুমিত হয় তাই তুলে ধরার ক্ষুদ্র প্রয়াস করেছেন একজন খ্যাতনামা ব্লগার। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি নাম প্রকাশেও অনিচ্ছুক।

আপনিও মিলিয়ে দেখুন কোথাও কোন অসঙ্গতি থাকলে অথবা আপনার অভিজ্ঞতায় কোন নতুন ভাবনা থাকলে জানান আমাদের। অথবা আপনার জীবনে আপনি সন্ধান পেয়েছেন কোন প্রকৃতির নারীর সেটাও জানান। এবার জানুন বিস্তারিত

ঘরপ্রিয় নারী:এই ধরনের নারীরা সাধারণত ঠাণ্ডা প্রকৃতির হয়। সাংসারিক কাজে আগ্রহ থাকে বেশি। বসে বসে টিভি সিরিয়াল দেখাই এদের বিনোদনের অন্যতম প্রধান উৎস। এরা অল্পতে অভিমান করে, অল্পতেই খুশিও হয়। কারো প্রতি কোন রাগ বা অভিমান থাকলে তা প্রকাশ না করে বছরের পর বছর মনের মধ্যে পুষে রাখতে পারে।

উচ্চাভিলাষী নারী:এই ধরনের নারীদের জনপ্রিয় হবার বাসনা প্রবল। সবার উপরে কিভাবে যাওয়া যায় সেই চেষ্টায় এরা সর্বদাই মগ্ন থাকে। এই শ্রেণীর নারীদের অর্থের প্রতিও বিশেষ দুর্বলটা দেখা যায়। বিত্তের জন্য এরা যে কোন কিছুই করতে সর্বদা প্রস্তুত। তবে ব্যক্তিগত জীবনে এরা তেমন সুখী হয়না। কারন উচ্চে উঠার বাসনা কখনো বাড়ে বৈ কমে না।

বুদ্ধিমতী নারী:সবচেয়ে কম সংখ্যক নারী এই শ্রেণীভুক্ত। বাস্তবিকভাবে অনেক নারী নিজেদের বুদ্ধিমতী ভাবলেও তারা এই শ্রেণিভুক্ত হতে পারে না। বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিমত্তা দুটো আলাদা জিনিস। বিচক্ষণতার সাথে অভিজ্ঞতা জড়িত, বুদ্ধিমত্তার সাথে নয়।

বুদ্ধিমতী নারীরা অনেক সময় জীবনের চরম সত্য গুলো আবিস্কার করে অনেক মূল্যহীনতায় ভুগে। অনেকে তাদের বুদ্ধির জোরেও এই সমস্যাকে মাথা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে। তবে এরা সাধারনত জীবনের চাওয়া পাওয়ার ব্যাপারে অনেক সন্তুষ্ট হয় অল্পতেও।

‘ফটকা’ নারী :এরা সাধারণত বন্ধু কিংবা বান্ধবী বেষ্টিত হয়ে থাকতে পছন্দ করে। সব ধরনের উৎসবমুখর কর্মকাণ্ডে এদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। দৈনন্দিন জীবনে এদের বেশিরভাগ সময় কাটে ইন্টারনেটে বিভিন্ন মেসেঞ্জার এ টাংকি বাজি করে। এরা খুবই অস্থির প্রকৃতির হয়ে থাকে। সাংসারিক কাজ এদের ভালো লাগে না যেমন ,তেমনি এক পুরুষকেও বেশীদিন ভালো লাগেনা এদের।

সহজ সরল নারী:বাংলাদেশে এ ধরনের নারীর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এরা সাধারণত খুব সহজেই অন্যর দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ কারনে এরাই সবচেয়ে বেশি প্রতারণার ও শিকার হয়। এদেরকে সৎ পথে ও ভালো রাখার জন্য অভিভাবকত্ব খুবই জরুরি। সাংসারিক জীবনেও এরা বেশ সুখী হয়।

ক্যাচাল প্রিয় নারী/ঝগড়াটে নারী:এরা সাধারনত সব ধরনের কাজেই ঝামেলা করে মজা পায়। দিনের মধ্যে না চিল্লাচিল্লি করলে এদের পেটের ভাত হজম হওয়া কষ্টকর। এরা আধিপত্য করতে ভালোবাসে। এসব নারী প্রেমিকা হিসেবে ভালো হলেও বৌ হিসেবে অত্যন্ত ভয়াবহ।

সন্দেহপ্রবন নারী: এদের জীবনের মুল লক্ষ্যই হল যেকোনো কাজের মধ্যে গভীর কোন অর্থ খুজে বের করা। এদের জীবন কাটে স্বামীর টেলিফোন ,প্যান্টের পকেট , ড্রয়ার প্রভৃতি জিনিস পত্র চেক করে। এরা তাদের স্বামীকে খুব সাবধানে আগলে রাখতে চায়। জায়গা জমি কিনবা ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিয়েও এরা প্রচুর দুশ্চিন্তায় ভোগে।

আত্মাভিমানী নারী: এরা কোন এক অজ্ঞাত কারনে সব দোষ নিজের উপর টেনে আনতে পছন্দ করে। এরা ইচ্ছা করে নিজেরা কষ্ট পেতে পছন্দ করে। কষ্টের জন্য চোখের জল ঠিকই পড়ে কিন্তু এটা যে নিজেরই তৈরি সেটা কখনো মনে করে না।
এরা সারা জীবনভর শুধু কষ্টই পায়। এদের জীবনে সুখ কম।

আহ্লাদী নারী: এরা সবসময় ছোট বাবুর মতো নাকি সুরে কথা বলতে ও শুনতে পছন্দ করে। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে আহ্লাদী নারী প্রায় জন্মায় না বললেই চলে। এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উচ্চবিত্ত বেশি হয়।

খুব সাধারণ ব্যবহার্য জিনিসে নাক সিটকানোর একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখা যায়। এরা আহ্লাদী হয় কারন এরা তাদের বাবা মা এর কাছ থেকে মানুষ হবার যোগ্য শিক্ষা পায় না।

দু মুখো নারী: এরা প্রচুর পরিমানে বানিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে । মুহূর্তের মধ্যেই কথা ঘুরিয়ে ফেলার আশ্চর্য এক ক্ষমতার অধিকারী এই শ্রেণীর নারীরা। এদের জন্য মানুষে মানুষে সাধারণত হানাহানি , ঝগড়া বিবাদ বেশি হয় । এদের দেখামাত্র ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করা প্রত্যেকের অবশ্য কর্তব্য।

জ্ঞানী নারী: সমাজে এদের অবস্থান বেশ উপরের দিকে। যদিও এরা নিভৃতে থাকতেই বেশি পছন্দ করে। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় তারা ব্যয় করে উচ্চশিক্ষার পিছে। অর্জিত যে কোন ধরনের জ্ঞান ই তারা ব্যবহার করে তাদের বাস্তব জীবনে আদর্শ নারী সমাজ গড়ে তোলার পিছে তাদের অবদান চিরদিন ছিল,আছে ,থাকবে।

পল্টিবাজ নারী: এরা খুব স্বার্থপর ধরনের হয়। স্বার্থের জন্য যেটা ভালো , সেটাই এরা করে ছাড়ে। কে কি বলল না বলল তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। এরা ন্যায় অন্যায় বিচার করতে পারলেও এটা নিয়ে মনে মনে দুঃখ করা ছাড়া এদের কার কোন কাজ নেই। এরাও খ্যাতির পিছেই ছোটে , কিন্তু খ্যাতিও এদের বোকাই বানায়।

কনফিউজড নারী: যে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে এরা হতাশায় ভোগে। এদের সবসময় মনে হয় সে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ,সেটা সঠিক নয়। এ ধরনের নারীরা খুব অল্প ব্যর্থতাতেই খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এদের জন্য কাউন্সেলিং জরুরী।

আত্মকেন্দ্রিক নারী: নিজেকে নিজের মাঝে গুটিয়ে রাখতে এরা পছন্দ করে। এদের পৃথিবীতে অন্যর হস্তক্ষেপ কিনবা অভিবাসন এরা একেবারেই পছন্দ করে না। এরা বেশিরভাগই কল্পনাপ্রবন হয়। এদের আত্মসম্মান বোধ অতিমাত্রায় প্রবল। এরা গৃহিণী হিসেবেও বেশ ভালো ।

ধার্মিক নারী: এদের সাধারণত আপাদমস্তক সবসময়ই ঢাকা থাকে। এরা সবাই রক্ষণশীল নীতি মেনে চলে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের মাঝে এধরনের নারী বেশি থাকলেও উচ্চবিত্তদের মাঝে এদের সংখ্যা কম নয়। এরা সাধারণত ঠাণ্ডা প্রকৃতির ও স্থির মেজাজের হয়। মাঝে মাঝে কিছু নারী এই ধার্মিকতার লেবাস ধরলেও তারা আসলে এই শ্রেণিভুক্ত নয়।

ছলনাময়ী নারী/প্রতারক নারী: পোশাক আশাক কিনবা আচার ব্যবহারে অন্যদের থেকে এদের আলাদা করা অসম্ভব কঠিন। এদের প্রায় পুরোটুকুই মিথ্যা। এরা বেশি থাকে বাস টার্মিনালে, লঞ্চ ঘাট কিনবা ট্রেন স্টেশনে। এসব জায়গায় যেচে পড়ে কেউ এগিয়ে এলে সতর্ক হোন। নিরপরাধ ও সহজ সরল মানুষেরা এদের শিকার হয় প্রায়শই। এদের দেখা আর ১০ নম্বর বিপদ সংকেত দেখা একই কথা।

ক্রিমিনাল নারী: এরা আমাদের দেশে কম। বাইরের দেশে এদের সংখ্যা বেশি। এরা সাধারণত ভেঙে যাওয়া পরিবারের সন্তান। শৈশবের কিংবা কৈশোরের কোন ঘটনা যা তাকে ভুগিয়ে থাকে, নির্দোষ হবার পরেও, তারা সাধারণত অনেক বড় ধরনের অপরাধী হয়। আর এর সাথে যদি যোগ হয় বুদ্ধিমত্তা, তাহলে তো খবরই আছে। এরা অনেক বেশি প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে থাকে।

লুল প্রিয় নারী: অবিশ্বাস্য ভাবে পুরো পৃথিবীতেই এদের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে। এরা সবসময় এদের চারপাশে একদল মুগ্ধ পুরুষ দেখতে ভালোবাসে। এরা নিজেরা নিজেদের সীমানা টুকু ভালোই চেনে, কিন্তু বেচারা ছাগল পাগল ছেলেরা পরে বাঁশটা খায়। এরা সর্বদাই সুখী হয়। দুঃখ এদের জীবনে থাকলেও তা হয় খুবই সাময়িক।

শেয়ার করুন: