ক্যাটেগরীজ: লাইফস্টাইল

নোংরা শৌচাগার থেকে মূত্রাশয়ের সংক্রমণ

মূত্রাশয় বা মূত্রথলিতে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ প্রদাহ ও অস্বস্তি বাড়ায়।

লক্ষণের মধ্যে রয়েছে- প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ এবং ঘোলাটে প্রস্রাব। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা না হলে সংক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আর নারীদের আক্রান্তা হওয়ার মাত্রা বেশি থাকে।

মূত্রাশয়ের সংক্রমণের কারণ

অনিরাপদ যৌন ক্রিয়া: অনিরাপদ যৌন ক্রিয়া এবং ঘন ঘন অনিরাপদ যৌনতা মূত্রাশয়ের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

এই বিষয়ে হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রতীমা থামক বলেন, “বিভিন্ন ধরনের যৌন সামগ্রী ব্যবহার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এসব উপাদান পিএইচ’য়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে, ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধি করে।”

এছাড়াও, সহবাসের সময় সহজেই যৌনাঙ্গের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস: শৌচাগার ব্যবহারের ভুল অভ্যাস মূত্রাশয় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর কমোডের আসন ব্যবহার করা অথবা ভেজা অবস্থায় কমোডের আসনে বসা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

তাছাড়া পাবলিক টয়লেট বা গণ-শৌচাগার ব্যবহার মূত্রাশয় সংক্রমণের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিকর।

প্রস্রাব চেপে রাখা: অনেকেই মূত্রের বেগ ধরে রাখার প্রবণতা থাকে। এটা মূত্রাশয়ের সংক্রমণের জন্য উচ্চ ঝুঁকিকর। মূত্রের চাপ ধরে রাখা ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়। ফলে সংক্রমণ বাড়ে। তাই এই ধরনের অভ্যাস থাকলে, সেটা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে।

মূত্রাথলির সংক্রমণের চিকিৎসা না করা: কখনও মুত্রাশয়ে সংক্রমণ দেখা দিলে সম্পূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পন্ন না করার ফলেও এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং পুনরায় দেখা দেয়। তাই চিকিৎসা শুরু করা হলে শেষ হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে চালিয়ে যেতে হবে।

জীবনযাপনে ভারসাম্যহীনতা: জীবনযাপনে ভারসাম্যহীনতার ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ে, যা মূত্রাশয়ে সংক্রমণ বাড়াতেও ভূমিকা রাখে।

স্থূলতা দেহে বেশি ঘাম সৃষ্টি করে। ফলে ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধির জন্য আর্দ্র পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একইভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের ফলে দেহে ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধি পায় যা যোনিপথেও ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটায় এবং মূত্রাশয় সংক্রমণ সৃষ্টি করে।

মূত্রাশয় সংক্রমণের ঘরোয়া সমাধান

ভেষজ চা: ভেষজ চা প্রদাহ, ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাস বিরোধী উপাদান সমৃদ্ধ যা মূত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিকারের সহায়তা করে।

ভেষজ চা তৈরি করতে এক কাপ পান ফুটন্ত পানিতে লেবুর রস ও দারুচিনি মিশিয়ে ভালো মতো ছেঁকে পান করা যেতে পারে। লেবুর ব্যাক্টেরিয়া ও প্রদাহনাশক উপাদান সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। অন্যদিকে দারুচিনি ফোলা-ভাব ও অস্বস্তি কমাতে সহায়তা করে।

আর্দ্র থাকা: পর্যাপ্ত পানি পান সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিশেষ করে মূত্রাশয়ে সংক্রমণ দেখা দিলে। পানি পান বিষাক্ত পদার্থ ধুয়ে ফেলে, দেহ থেকে মূত্রের মাধ্যমে ব্যাক্টেরিয়া বের করে দেয়।

আর্দ্র থাকায় অবহেলা করা মূত্রাশয়ে ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়।

পরিমিত প্রোটিন গ্রহণ: মূত্রাশয়ে সংক্রমণ দেখা দিলে দুতিন দিন প্রোটিন গ্রহণ থেকে বিরত থাকা উচিত। পরিবর্তে প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি কাঁচা বা সেদ্ধ অবস্থায় খাওয়া উপকারী। এতে হজম ক্রিয়া উন্নত হয় এবং বিষাক্ত উপাদান বের হয়ে যায়।

ক্র্যানবেরি জুস: ক্র্যানবেরি জুস মূত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিকারে সহায়তা করে। এতে আছে ‘প্রোয়েন্থোসায়ানিডিন্স’, যা সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটা দেহ থেকে ব্যাক্টেরিয়া বের করে দেয়, অস্বস্তি কমায় এবং দ্রুত আরোগ্যে লাভে সহায়তা করে।

প্রতিকার অপেক্ষা প্রতিরোধ ভালো

মূত্রাশয় সংক্রমণের মূল কারণ খুঁজে বের করা এবং প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। পরিচ্ছন্নতা, আর্দ্র থাকা এবং কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এসব ঘরোয়া পদ্ধতি সংক্রমণের অস্বস্তি কমায়। তবে কোনো উন্নতি দেখা না দিলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২৬ মার্চ ২০২৪, ১:০২ অপরাহ্ণ ১:০২ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন
দ্বারা প্রকাশিত
বিডিভিউ২৪ ডেস্ক

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ