ক্যাটেগরীজ: স্বাস্থ্য

পালসেটিলা হোমিওপ্যাথি: ব্যবহার, উপকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

গুরুপাক খাবার অর্থাৎ তেল-চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে পেট ব্যথা হলে পালসেটিলা খাওয়াতে হবে। গর্ভধারণের কারণে পেট ব্যথা হলেও ইহা প্রযোজ্য। পালসেটিলা চিকেনপক্সের আরেকটি সেরা ঔষধ। ইহার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো গলা শুকিয়ে থাকে কিন্তু কোন পানি পিপাসা থাকে না, ঠান্ডা বাতাস/ ঠান্ডা খাবার/ ঠান্ডা পানি পছন্দ করে, গরম-আলো-বাতাসহীন বদ্ধ ঘরে বিরক্ত বোধ করে ইত্যাদি। আবেগপ্রবন, অল্পতেই কেঁদে ফেলে এবং যত দিন যায় ততই মোটা হতে থাকে, এমন মেয়েদের ক্ষেত্রে পালসেটিলা ভালো কাজ করে। এসব লক্ষণ কারো মধ্যে থাকলে যে-কোন রোগে পালসেটিলা খাওয়াতে হবে।

পালসেটিলা ঔষধটিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে পারে। ঠান্ডা মেজাজী এবং কথায় কথায় চোখ দিয়ে পানি ঝরে এমন মেয়েদের ওপর এটি বেশী কাজ করে।

যারা অল্পতেই কেঁদে ফেলে এবং নানানভাবে সান্ত্বনা দিলে ভালো থাকে, তাদের টেনশানে পালসেটিলা প্রযোজ্য।

মাসিক বন্ধের চিকিৎসায় হোমিও ঔষধগুলোর মধ্যে পালসেটিলার স্থান এক নম্বরে। এটি স্নেহপরায়ন, কথায় কথায় কেদে ফেলে, খুব সহজেই মোটা হয়ে যায়….এই ধরণের মেয়েদের বেলায় ভালো কাজ করে। মাত্রা হবে নিম্নশক্তিতে (Q, ৩, ৬ ইত্যাদি) ৫ থেকে ১০ ফোটা করে রোজ তিনবার।

প্রাকৃতিক অবস্থা:- রেনানকুলেসিয়া।

প্রতিশব্দ:- অ্যানেমুন, প্রাটেন্সিস, হারবাডেন্টি, পাসসেটিলা, নাইগ্রীকেন্স, পালসেটিলা প্রাটেন্সিস, বায়ুকুল, মিডোএনেমন, উইন্ড ফ্লাওয়ার।

উৎস ও বর্ণনা:- ইহা এক প্রকার বর্ষজীবি পত্রমোচী গাছড়া, মূল টাকুর আকৃতির বিশিষ্ট ও বহু মাথাধারী। ইহা সাধারণতঃ ঘণ বাদামী বর্ণের হইয়া থাকে। পত্রসমূহ রৈখিক খণ্ড দ্বারা দ্বিপক্ষ বিশিষ্ট। মার্চ হইতে মে মাসে এই গাছে হালকা নীল হইতে ঘন বেগুনী বর্ণের ঘন্টাকৃতি ফুল ফুটিয়া থাকে। সমগ্র গাছড়াটি সিল্কের ন্যায় লম্বা চুলে ভূষিত, ইউরোপের বিভিন্ন স্থানের খোলা মাঠে ও সমতল ভূমিতে, তিব্বতের পশ্চিমাংশে, উত্তর এশিয়ার আর্মেনিয়া হইতে বৈকাল হ্রদ পর্যন্ত স্থানে এই সকল গাছড়া জন্মিয়া থাকে।

ঔষধ প্রস্তুতি:- এফ-৩ (আমেরিকান), এফ-১ (জার্মানী)।

প্রুভার:- ডাঃ হ্যানিমান প্রুভ করেন।

ক্রিয়াস্থান:- পাকস্থলী, অস্ত্র, চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, মূত্রযন্ত্র, জননেন্দ্রিয়, জরায়ু এবং সন্তান উৎপাদনকারী যন্ত্রসমূহের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী ও শিরাসমূহের উপর পালসেটিলার প্রধান ক্রিয়া প্রকাশ পায়। নম্র, ধীর, অভিমানী যাহারা সহজেই কাঁদে বা হাসে, চিকিৎসকের নিকট পীড়ার কথা বলিতে কাঁদে, অস্থির মতি, সামান্য অনুরোধেই সংকল্পচ্যুত হয় এবং পরিবর্তনশীল মনোভাব, এইরূপ ব্যক্তির পীড়ায় ইহা উপকারী।

ধাতুপ্রকৃতি:- যে সকল স্ত্রীলোক অত্যন্ত অভিমানিনী অর্থাৎ যাহারা সাধারণত বড়ই শান্ত ও মৃদু, স্বভাব, কিন্তু সামান্য কারণে কাঁদিয়া ফেলে এবং যাহাদের শ্লেষ্মার ধাতু, তাহাদের পীড়ায় পালসেটিলা উপযোগী। পাসলেটিলা ধাতুর স্ত্রীলোক কখনই ক্রোধ পরায়ন হয় না, তবে কচিৎ কোনও বিশেষ কারণে খিটখিটে হয়, রোগীর মন মেজাজও পরিবর্তনশীল, এই হর্ষ এই বিষাদ। ইহার রোগিনী অশ্রুপাত প্রবণা এবং রক্ত প্রধানা। আকৃতি হইতে পীড়িত হওয়ার বিষয় কিছুই বিশ্বাস করা যায় না। পরিবর্তনশীলতাই ইহার অন্যতম ধাতুগত লক্ষণ ।

মানসিক লক্ষণ বা স্বভাবগত লক্ষণ:- পালসেটিলা রোগীর মানসিক লক্ষণসমূহ পরিবর্তনশীল। এই হর্ষ এই বিষাদ। রোগী খুবই শান্ত ও মৃদু স্বভাবের, সামান্য কারণে কাঁদিয়া ফেলে। রোগী কখনও ক্রোধান্বিত হয় না। তবে কুচিৎ কোনও বিশেষ কারণে খিটখিটে হইয়া থাকে। ইহার রোগী অত্যন্ত আবেগপ্রবণ। মানসিক অবস্থা এমনই আনন্দদায়ক যেন বসন্ত বহিয়া চলিতেছে। চূড়ান্ত আমোদ এবং চূড়ান্ত বেদনার অনুভূতি পোষণ করিয়া থাকিতে ইচ্ছা করে । পালসেটিলা রোগিনী নিজের কষ্টের কথা কাহাকেও খুলিয়া বলে না, নিজের মনেই কাঁদিয়া চলে। রোগিনী খুব অভিমামিনী, শাস্ত ও মৃদু স্বভাবের । মেজাজের পরিবর্তনশীলতার কারণে নিজের কারণে রোগী হয়ত এইমাত্র রাগিয়া উঠিল ও অভিমানে তাহার চক্ষু হইতে জল পড়িতে লাগিল, আবার পরক্ষণেই বেশ রাগ-দেশ শূন্য হইয়া নম্র ও বিনীত স্বভাবের পরিচয় দিল। সামান্য সান্ত নায় ও সামান্য সহানুভূতিপূর্ণ আচরণে তাহার সকল দুঃখের অবসান ঘটে। পালসের রোগিনী মনে মনে ভাবে সবাইর দুঃখের ইতিহাস শোনার লোক আছে কিন্তু তার নাই। বড় করুন ও মধুর এই সংসারের মায়া ত্যাগ করার কথা সে কল্পনাই করিতে পারে না। ধর্ম সম্পর্কে রোগীর এক আশ্চর্য খেয়াল। ধর্ম সংক্রান্ত সংস্কারগুলি সম্বন্ধে তাহার আলোচনা করার খুব ঝোঁক। সে মনে করে
যে, সে মনের এক আশ্চর্য শুদ্ধ অবস্থায় আছে অথবা পাপ করিয়া করুণা পাওয়ার দিনই হারাইয়া ফেলিয়াছে।

চরিত্রগত লক্ষণ:-
(১) রোগ লক্ষণের পরিবর্তনশীলতা ইহার প্রকৃতিগত বিশেষ লক্ষণ ।
২) রোগী সর্বদাই খোলাবাতাসে থাকিতে ইচ্ছা করে এবং তাহাতে সুস্থবোধ করে।
৩) ক্রমাগত পরিবর্তনশীল বেদনা, বেদনা প্রায় শরীরে একধারে হয়।
৪) কর্ণে বেদনা, তৎসহ বধিরতা, যেন কান বৃদ্ধ হইয়া গিয়াছে।
৫) দত্ত বেদনায় মুখে ঠাণ্ডা জল রাখিলে উপশন হয়। গরম ঘরে গেলে বেদনার বৃদ্ধি ও মুক্ত বায়ু সেবনে উপশম বোধ ।
৬) আধ কপালে মাথা ধরা, তৎসহ মুখে বিশ্বাস এবং তৃষ্ণার অভাব ভালভাবে রজঃস্রাব না হইলে মাথা ধরা।
৭) শীতল দ্রব্য খাইলে পীড়া লক্ষণের উপশম ও গরম দ্রব্য ভক্ষণে বৃদ্ধি। প্রাতঃকালে মুখে বিশ্বাস, কোন প্রব্যেরই ভাল স্বাদ পাওয়া যায় না।
৮। ঘৃত গড় ও চর্বিযুক্ত খাদ্যাদি আহার করিয়া উদরাময়, বমন অজীর্ণ ইত্যাদি পীড়ার উৎপত্তি। উদরাময়ে প্রতিবারই মলের রঙ পরিবর্তনশীল। রাত্রিতে উদরাময়ের বৃদ্ধি।
৯) সকল লক্ষণ সন্ধ্যাকালে প্রকাশ পায়।
১০) আমাশয়ে রক্ত ও আম মিশ্রিত বাহা, সন্ধ্যাকালে শীত শীত বোধ ।
১১) অসাড়ে প্রস্রাব নির্গত হয় বিশেষ করিয়া শিশুদের শযায় প্রস্রাব।
১২) অনিয়মের ফলে রজস্রাব পীড়া, রজঃস্রাব অত্যন্ত বিলম্বে ও অম্ল পরিমাণে হয়। পা জলে ভিজিলে রজঃস্রাব বন্ধ হয় বা থাকিয়া হয়। তৎসহ সন্ধাকালে শীত শীত বোধ ।
১৩) শ্বেতপ্রদর, ঘন মাখনের মত, রজঃস্রাবের পর উহার বৃদ্ধি।
১৪) শিশু স্তন্য পান করিলে মাতার বুকের ভিতর বেদনা বোধ, ঘাড়ে পিঠে টনটনানি। এই বেদনা একস্থান হইতে অন্যস্থানে পরিচালিত হয়।
১৫) প্রমেহ স্রাব বন্ধ হইয়া অণ্ডকোষ, স্পার্মাটিক কর্ড ইত্যাদির স্ফীতি ও বেদনা।
১৬) নাসিকা হইতে পাকা সর্দি নির্গমন ও নাসিকায় কোন বস্তুর গন্ধ না পাওয়া।
১৭) পিপাসা শূন্য সবিরাম জ্বর-বৈকাশে ও সন্ধ্যাকালে জ্বর, জ্বরে শীতই প্রবল ।

প্রয়োগক্ষেত্র:- রমনীদের যাবতীয় পীড়া, যেমন- বাধক বেদনা, শ্বেতপ্রদর, প্রসব বেদনা, ভ্যাঁদাল ব্যথা, ফুল আটকান, সুতিকা স্ত ভু, ঋতু বন্ধ হইয়া অন্যস্থান হইতে রক্তস্রাব, গর্ভাবস্থায় নানা প্রকার পীড়া, প্রভৃতিতে ইহা ব্যবহৃত হয়। ইহা ছাড়া অজীর্ণ, উদরাময়, অণ্ডকোষ প্রদাহ, প্রমেহ, অণ্ডকোষে জল সঞ্চয়, কর্ণের পীড়া নাসিকার পীড়া, সর্দিকাশি, চক্ষুপীড়া, জ্বর, সবিরাম জ্বর, কোষ্ঠবদ্ধতা, বাত, শিরঃপীড়া, স্ফোটক, প্রভৃতি ক্ষেত্রেও ইহা প্রয়োগ হয়।

স্ত্রীপীড়ায় লক্ষণ:- পালসেটিলার অধিকাংশ লক্ষণই স্ত্রীলোকদের ক্ষেত্রে দৃষ্ট হয়। সেজন্য পালসেটিলাকে মূলতঃ স্ত্রীলোকদের ঔষধ বলা হয়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে কার্যকরী নয় এরূপ ধারণা করা ভুল। লক্ষণ পাওয়া গেলে স্ত্রীপুরুষ উভয় ক্ষেত্রেই ইহা প্রয়োগ করা যায়। তবে পুরুষ অপেক্ষা স্ত্রীলোকদের ক্ষেত্রে ইহার কার্যকারিতা বেশী এবং লক্ষণাবলীও অধিক দৃষ্ট হয়। স্ত্রীলোকদের যাবতীয় পীড়ায় যেমন-বাধক বেদনা, শ্বেতপ্রদর, প্রসব বেদনা, ভ্যাদাল ব্যথা, ফুল আটকানো, সূতিকা স্তম্ভ, ভূতবন্ধ হইয়া অন্যস্থান হইতে রক্তস্রাব, গর্ভাবস্থার নানা প্রকার পীড়া, ডিম্বাধারের প্রদাহ, স্তনদুগ্ধের স্বল্পতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ইহা মহৌষধ। ইহা ছাড়া ইহার রোগিনী নিজের কষ্টের কথা কাহাকেও খুলিয়া বলে না, নিজের মনেই কাঁদিয়া চলে। মেজাজের পরিবর্তনশীলতার জন্য হয়ত এই মাত্র রাগিয়া উঠিল, অভিমানে চক্ষু হইতে জল পড়িতে লাগিল আবার পরক্ষণেই রাগদ্বেশ শূণ্য হইয়া নম্র ও বিনীত স্বভাবের পরিচয় দিল। সামান্য সান্তনায় রোগিনীর সকল দুঃখের অবসান ঘটে। পালসের রোগিনী মনে মনে ভাবে সকলেরই দুঃখের ইতিহাস শোনার আছে কিন্তু তাহার নাই। বড় করুণ ও মধুর সংসারের মায়া ত্যাগ করার কথা ইহার রোগিনী কল্পনাই করিতে পারে না। উপরোক্ত লক্ষণসমূহ একমাত্র রমনীদের ক্ষেত্রেই অধিকতর পরিস্ফুট। তাই পালসেটিলাকে রমণীদের ঔষধ বলা হয়।

বাধক বেদনায় লক্ষণ:- পালসেটিলায় যথাসময় অপেক্ষা অনেক বিলম্বে ঋতুস্রাব হয় এবং উহা পরিমাণে অতি অল্প। ঋতুস্রাব থাকিয়া থাকিয়া হয়, অর্থাৎ ক্ষণকাল স্রাব হইয়া আবার ক্ষণকালের জন্য ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে। জরায়ুতের বেদনা, প্রসব বেদনার মত বেগ, ভয়ানক খামচানি ব্যথা, জরায়ুর আক্ষেপ, কটিদেশে বেদনা, মাথাব্যথা ইত্যাদি কতকগুলি আনুষঙ্গিক লক্ষণ থাকে। ঋতু প্রকাশ পাইবার পূর্বে এই বেদনার উদ্ভব ঘটে। কখনও ঋতুস্রাব কাল রঙ এর চাপচাপ রক্ত, আবার কখন বা জলের মত বর্ণহীন তরলযুক্ত। রোগিনী খোলাবাতাস ভালবাসে, কিন্তু তাহাতে আবার শীতও বোধ করে। যুবতীদের ক্ষেত্রে প্রথম ঋতু আরম্ভ হইয়াই অনিয়মিত ঋতু। ক্রমে ক্রমে ঋতুস্রাব একেবারে বন্ধ হইয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথম ঋতুস্রাব আরম্ভ হইয়াই উহা বন্ধ হইয়া যায় এবং উহার ফলে রোগিনী অত্যন্ত রুগ্ন হয়, রক্তশূন্যতা দেখা দেয় এবং ফুসফুসের নানাবিধ পীড়া দেখা দেয়। জিহ্বা শুষ্ক, পিপাসাহীনতা, পেট ব্যথা, শীতভাব প্রভৃতি লক্ষণাবলী থাকিলে পালসেটিলা প্রযোজ্য।

প্রসব বেদনায় লক্ষণ:- পালসেটিলার বেদনা ঠিক নিয়মিত ভাবে না হইয়া কখনও কম, কখনও বেশী, কখনও একেবারে কিছুই থাকে না। জরায়ু যেন ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছে, রোগী আর বেগ দিতে পারে না। বেদনা যখন আক্ষেপজনক হয়, বেদনার কোন জোর থাকে না এবং প্রস্ত্ৰৰ পথ ভালভাবে খোলে না ও সস্তান অগ্রসর হয় না তখন পালসেটিলা মহৌষধ । বেদনা একবার পিঠ বাহিয়া উপরে উঠিলে আবার অঙ্গাদি বাহিয়া নিচে নামিতে থাকিলে প্রসবের প্রথম অবস্থা বা প্রসবোদ্যম দীর্ঘ স্থায়ী হইলে সর্বক্ষেত্রে ইহার প্রয়োজন হয়। 'ক্যামোমিলা' অতিরিক্ত উত্তেজনাপ্রবণ স্ত্রীলোকদের পক্ষে উপযোগী। কিন্তু মানসিক অবস্থা নম্র ও শান্ত থাকিলে এবং বেদনা অনিয়মিত হইলে, জরায়ু মুখ বিস্তৃত হইয়া ও সংকোচন কমিয়া গেলে, বেদনা খুব অল্পক্ষণ স্থায়ী হইলে পালস অল্প সময়েই প্রসব কার্য সমাধা করিবে।

শ্বেতপ্রদর:- কোমর বেদনা ও যোনীদেশ ফুলিয়া উঠে। স্রাব দুধের সরের মত ঘন এবং রক্ত মিশ্রতি। এই স্রাবে জ্বালা থাকে।

ফুল আটকানো:- প্রসবের পর যদি ফুল আটকাইয়া থাকে। তাহা হইলে পালসেটিলা প্রয়োগে ফুল অবশ্যই নিষ্ক্রান্ত হইবে এবং জরায়ু বলবর্তী হওয়ার ফলে আর অধিক রক্তস্রাব হইতে পারিবে না।

সূতিকা:- প্রসবের পর সূতিকা পীড়া দেখা দেয়। ইহাতে শরীরে খুব বেদনা হয়, প্রস্রাব কমিয়া যায় এবং কিছু কাল পর পায়ের কোন স্থান ফুলিয়া যায়। এই ফোলা উপরে ও নিচে বিস্তৃত হইয়া ক্রমশঃ সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফুলিয়া যায়। রোগিনী ফ্যাকাশে স্নান ও মোমের মত সাদা হয়। ফোলাস্থানে অল্প বেদনা থাকিলে পালসেটিলা এবং অধিক বেদনা থাকিলে হ্যামামেলিস আভ্যন্তরীণ ও বাহ্য প্রয়োগ করা উচিত। ঋতু বন্ধ হইয়া অন্যস্থান হইতে রক্তস্রাব ঋতু বন্ধ হইয়া মুখ, নাক বা পাকস্থলী হইতে রক্তস্রাব হইলে পালসেটিলা উপযোগী ।

গর্ভাবস্থায়:- গর্ভাবস্থায় মধ্যে মধ্যে পেটে টাটানি বেদনা হইলে হ্যামামেলিসের ন্যায় পালসেটিলাও উপযোগী। গর্ভাবস্থায় জরায়ু যখন বাড়িতে থাকে, তখন উহা কখন কখন কোন একটি বিশেষ দিকে হয়ত অধিক বাড়ে, সেই জন্য জরায়ু অনিয়মিত বৃদ্ধির সঙ্গে ভ্রুণও যে কোন দিকে অনিয়মিতরূপে অবস্থিত হইবে। এইরূপ অবস্থায় পালসেটিলা পেশীর উপর ক্রিয়া প্রকাশ করিয়া জরায়ুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধন করে এবং কোন বিশেষ দিকে অস্বাভাবিক ভাবে জরায়ু বৃদ্ধি পাইতে না দিয়া গৰ্ভস্থ ভ্রুণকে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখে।

স্ত্রীলোকদের সঙ্গমেচ্ছায়:- স্ত্রীলোকদের সঙ্গম প্রবৃত্তি অত্যন্ত বর্ধিত, কামোন্মাদনা। তিনি সঙ্গম চিন্তায় আত্মহারা হইয়া পড়েন, সঙ্গম প্রবৃত্তি দমন করিতে পারেন না। ডিম্বকোষ ও জরায়ু প্রদাহিত হইয়া পড়ে।

পাকাশয়িক বা উদর:- পরিপাক যন্ত্রের নানাবিধ পীড়ায় ইহা উপযোগী। অজীর্ণ ও উদরাময়। পালসেটিলা জ্ঞাপক পাকস্থলী ধীরে ধীরে হজম করে। আহারের কয়েক ঘন্টা পরেও পাকস্থলীতে এক প্রকার পূর্ণতাবোধ, একটি পিও থাকার অনুভূতি বর্তমান থাকে। উহা খোলা বাতাসে ধীরে ধীরে চলিয়া বেড়াইলে উপশমিত হয়। কিন্তু গরম ঘরে লক্ষণাবলীর বৃদ্ধি ঘটে। ঘৃতপক দ্রব্যাদি লুচি, পিষ্ঠক, ক্ষীর, চর্বিযুক্ত মাংস, বড়মাছের পেটি প্রভৃতি দ্রব্য আহার জনিত অজীর্ণ ও উদরাময়। আহারের পর অনেক লক্ষণের বৃদ্ধি। খাদ্যবস্তু পাকস্থলীতে কেবলমাত্র একটি পিণ্ডের ন্যায় অনুভূত হইলে মানসিক ও স্নায়বিক লক্ষণসমূহ বাড়িয়া উঠে। বমি ভাব ও বমন। বমিতে শ্লেষ্মা ও পিত্ত উঠে। পেটে টাটানি ব্যথা থাকে, বায়ু সঞ্চয় হয়, পেট ফাঁপিয়া উঠে, এই সকল লক্ষণ রাত্রির আহারের প্রায় ১ ঘণ্টা পর প্রকাশিত হয়। মুখে পিত্তের আস্বাদ, মুখে জল উঠা, ঢেকুরে ভুক্ত দ্রব্যের আস্বাদ, বুকজ্বালা প্রভৃতি লক্ষণাবলীও ইহাতে দৃষ্ট হয়। পাসলেটিলার উদরাময়ে মলের বর্ণ পরিবর্তনশীল। এই এক বর্ণ মল হইল পরক্ষণেই অন্য বর্ণ দেখা দিল। মলের পরিমাণও পরিবর্তনশীল। রাত্রি দুই প্রহরের পর ভেদ। ভয় পাইয়া উদরাময়ে এবং মল ঈষৎ সবুজ, হলুদ অথবা অন্যান্য বর্ণের। অনেক সময় বাহ্যের সাথে সবজু আম থাকে। বাহ্যের পূর্বে পেট ডাকে, পেট কামড়ায় ও কোমর ব্যথা করে। তাহা ছাড়া আহাদেরর পর আইসক্রীম খাইলে উদরাময়। রাত্রিকালিন উদরাময়ে ইহা অধিক উপযোগী এবং রাত্রি জাগরণের পর মৃতপক্ষ দ্রব্যের আহারে রাত্রি দুপুরের পর ভেদ হইতে থাকিলে ইহা বিশেষ উপযোগী। ইহাতে কখনও কোষ্ঠবদ্ধ কখনও উদরাময় লক্ষণ দৃষ্ট হয়। পালসের জিহ্বা মোটা, জিহ্বায় শ্বেতবর্ণের লেপ বা ফাটা ফাটা, পিপাসার অভাব, জিহ্বা শুষ্ক থাকে।

গ্রাফাইটিস- পালসেটিলার সহিত উদর সংক্রান্ত লক্ষণে গ্রাফাইটিসের যথেষ্ট পার্থক্য আছে। গ্রাফাইটিসের রোগীর মুখে প্রাতঃকালে দুর্গন্ধ থাকে। মাংসাহার করিলে রোগীর সহ্য হয় না, বিশেষতঃ মুখের গন্ধ ও অজীর্ণ রোগ। প্রবল হয়। কোন দ্রব্য মুখে দিলে ভাল লাগে না, বমি আসে। আহারের পরে পেটে যেন বায়ু জমে, পেট কামড়ায়, জ্বালা করে, শুলুনির ন্যায় বেদনা হয়। ঐ বেদনা কিন্তু আহার করিলে উপশম হয়। জিভের আগায় যেন ফোস্কা পড়া বা হাজিয়া যাওয়া ভাব, গলার বাম ভাগে যেন একটা পুটলী পাকাইয়া রহিয়াছে। সেজন্য ঢোঁক গিলিতে কষ্ট। আহারের পর পেটের কাপড় খুলিয়া না দিলে কষ্ট হয়, আহারে পর অম্বলের ব্যথা করে। অনেক সময় আহারে ঐ ব্যথার উপশম হয়। মদ্যপায়ীদের অজীর্ণ পীড়া, পেটে যেন তাল পাকাইয়া কি জমিয়া রহিয়াছে। পেট ফোলা, অজীর্ণে বাহ্য হয়। মল ছ্যাকড়া ছ্যাকড়া, আধ পাতলা ও চটচটে, যেন খাদ্য দ্রব্য জীর্ণ হয় নাই। কোন প্রকার চর্মরোগ মলম বা প্রলেপাদি দ্বারা বসিয়া গিয়া উদরাময়, অজীর্ণ, ভেদ, মল অত্যন্ত দুর্গন্ধ । পুরাতন উদরাময়।

শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর পীড়ায়:- পালসেটিলার ক্রিয়ায় শ্লৈষ্মিক ঝিল্পীতে একপ্রকার প্রাতিশ্যায়িক প্রদাহ জন্মে এবং অবশেষে অবিদাহী পীতবর্ণ বা পীতাভ হরিদ্রাবর্ণ শ্লেষ্মা সাবিত হয়। এই স্রাব লক্ষণে পালসেটিলা যে কোন শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর রোগে ব্যবহার করা যায়। চক্ষুর গুরুমণ্ডলের প্রদাহে গাঢ়, পীতবর্ণ বা পীতাভ হরিদ্রাবর্ণ অবিদাহী স্রাব লক্ষণে ইহা ব্যবহৃত হয়। নাসিকার শ্লৈষ্মিক ঝিল্পীতেও পালনের ক্রিয়া প্রকাশ পায়। নাসিকার সর্দি পরিপক্ক হইলে অর্থাৎ গাঢ়, শ্লেষ্মা ও পুঁজময়, পীতাভ হরিদ্রাবর্ণ এবং সম্পূর্ণ অবিদাহী প্ৰাৰ নিঃসৃত হইতে থাকিলে ইহা উপযোগী। কর্ণ প্রদাহেও সমলক্ষণে ইহা ব্যবহার্য।

স্নায়ুশূল বেদনায় লক্ষণ:- নিউরালজিয়া বা স্নায়ুশূলে চিড়িকমারা স্থান পরিবর্তনশীল বেদনা, এই বেদনা থাকিয়া থাকিয়া উপস্থিত হইলে এবং বেদনা যতই অধিক্ষণ থাকে ততই উহার আতিশয্য ও অসহ্যতা জন্মিলে পালসেটিলা ব্যবহৃত হয়।

উপদংশ ক্ষতে লক্ষণ:- ক্ষত সারিবার মুখে আহার বিহারের অনিয়মে বা অত্যাচারে যদি উহা আবার বাড়িয়া যায় এবং লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়ার ভিতরে ও বাহিরে চুলকায় ও জ্বালা করে, অণ্ডকোষে জ্বালা করে কিন্তু থাকে না তবে পালসেটিলা উপকার।

সর্দি স্রাবে লক্ষণ:- সর্দি যখন বেশ পাকিয়া যায় অর্থাৎ হলদে বা সবুজ বর্ণ হয় কিন্তু উহাতে নাক ঠোঁট হাজিয়া যায় না তখন পালসেটিলা বেশ উপকারী। পুরাতন সর্দিতে রোগী মুখে কোন স্বাদ পায় না, নাকেও ঘ্রাণ পায় না।

দাঁতের ব্যথায় লক্ষণ:- মুখে ঠাণ্ডা পানি রাখিলে দাঁত ব্যথার উপশম বোধ হয়। দাঁতের ব্যথা চলিয়া যাইবার পরও যদি গালের ফুলা থাকে এবং দাঁতে ব্যথার সময় মার্ক বা ক্যামো দেওয়া থাকে তবে পালসেটিলায় ফুলা দূর হয়।

অর্শ রোগের লক্ষণ:- অর্শের সহিত ভয়ানক কোষ্ঠবদ্ধতা থাকে। অর্শের বলিতে ভয়ানক ব্যথা হয়, শুইলে ও বিছানার গরমে ব্যথা বাড়ে। ধীরে ধীরে পায়চারি করিলে ব্যথার উপশম হয়। বায়ু জমিয়া পেট ফুলিয়া উঠে ও ঘড়ঘড় শব্দ হয়। অর্শ হইতে সহজেই রক্তস্রাব হয়, বিশেষতঃ মলত্যাগের পর।

হাম পীড়ায় লক্ষণ:- পালসেটিলা হামের শ্রেষ্ঠ ঔষধ। রাত্রে এত শুষ্ক কাশি হয় যে রোগী বিছানায় বসিয়া থাকিতে বাধ্য হয়। ঐ সঙ্গে কানে ব্যথা থাকে। জ্বর কমিয়া যাইবার পরে ইহার প্রয়োগ হয়। ইহা হামের উৎকৃষ্ট প্রতিষেধক।

অণ্ডকোষ প্রদাহে লক্ষণ:- অণ্ডকোষ প্রদাহ, অণ্ডকোষ সংকুচিত অথচ ফুলিয়া বড় হয় এবং ঘোর লালবর্ণ ধারণ করে, এত বেদনা হয় যে হাত পর্যন্ত ছোঁয়ানো যায় না। ইহা ছাড়া রেতঃরজ্জু, ফুলিয়া মোটা হয় এবং ভরানক টানা হেঁচড়াবৎ বেদনা হয়। এই সঙ্গে শীতভাব, গা বমি, কোমরে বেদনা প্রভৃতি লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এই সকল অবস্থায় পালসেটিলা প্রয়োগে রুদ্ধ যাব শুনঃ প্রকাশিত হইয়া যন্ত্রণার হ্রাস হয়। এই অবস্থায় রোগী অধিক নড়াচড়া না করিয়া অণ্ডকোষটি বাঁধিয়া রাখা উচিত।

প্রমেহ পীড়ায় বা পুংজননেন্দ্রিয় পীড়ায় লক্ষণ:- অপরিমিত ইন্দ্রিয় চালনাহেতু মাথায় পিঠে ব্যথা, সর্বাঙ্গে ভারবোধ। প্রমেহের শেষাবস্থায় প্লীট হইতে পালসেটিলা উপকারী। মূত্রনালী হইতে পুরু হলদে প্রাব নির্গত হয়। মূত্রনালীর সংকুচিত অথবা নিরূদ্ধ অবস্থা, প্রস্রাব ফোঁট ফোঁটা করিয়া নির্গত হয় এবং মূত্রের ধারা মাঝে মাঝে ব্যাহত হয়। প্রমেহের এই স্রাবের সহিত যদি কুঁচকীতে বেদনা থাকে তাহা হইলে ইহা আরও বেশী উপকারী। বেদনা সময়ে সময়ে উপর পাঁজরা পর্যন্ত পরিচালিত হয়। পালস প্রয়োগের পর বেদনা পাকস্থলী পর্যন্ত বিস্তৃত হইতে পারে। কিন্তু তাই বলিয়া ঔষধ নির্বাচন সম্পর্কে সন্দেহ করা উচিত হইবে না। এই অবস্থায় ঘন ঘন ঔষধ প্রয়োগ না করিয়া অনেকক্ষণ সময় শান্তর ঔষধ প্রয়োগ করিতে হইবে কিংবা ২/১ দিন ঔষধ সেবন বন্ধ রাখিয়া পুনরায় উহা প্রয়োগ করিতে হইবে।

কর্ণপীড়ায় লক্ষণ:- কর্ণপ্রদাহ, কর্ণের বাহির পিঠে প্রদাহ, ক্ষীতি ও আরক্তিমতা, সেই সঙ্গে কর্ণে ভয়ানক দপদপানি, খোঁচানি ব্যথা ও যন্ত্রণা। এই যন্ত্রণা রাত্রিকালে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। কর্ণে ঘন হলদে, দুর্গন্ধ, পুঁজের ন্যায় অবিদাহী যাব। অতি দুর্গন্ধ, সময়ে সময়ে রক্তাক্ত। মধ্য কর্ণের প্রদাহ, মধ্য কর্ণের ফোঁড়া। প্রচুর ঘন রক্তময় স্রাব, সবজেটে হলদে স্রাব। যে পর্যন্ত ফাটিয়া না যায় সে পর্যন্ত বাড়িতে থাকে। ইহা ছাড়া বধিরতা সেই সঙ্গে মনে হয়। যেন কান বন্ধ হইয়া গেল ও কানে সোঁ সোঁ শব্দ হওয়া প্রভৃতি লক্ষণে ইহা কার্যকরী।

নাসিকার পীড়ায় লক্ষণ:- সর্দি, নাসারন্ধ্র বন্ধ হইয়া থাকে। নাসিকার মূলদেশে চাপবোধ বেদনা। ঘ্রাণ শক্তির অভাব। নাসিকার মধ্যে বৃহৎ, সবুজাভ দুর্গন্ধময় শঙ্কসমূহ। সন্ধ্যাকালে নাক বন্ধ থাকে। হলদে সর্দি, প্রাতঃকালে স্রাবের পরিমাণ প্রচুর। নাসিকার অস্থিসমূহে টাটানি ব্যথা। স্ত্রীলোকদের ঋতুস্রাব বন্ধ হইয়া নাসিকা হইতে রক্তস্রাব হইলে এবং সেই রক্তের, বর্ণ যদি তত ঘোর উজ্জ্বল না হয় এবং অবিরাম অল্প অল্প রক্তস্রাব হয় তাহা হইলে পালসেটিলা উপকারী।

সর্দি কাশিতে লক্ষণ:- কাশিতেও ইহা উপকারী। কাশিতে যে গয়ার উঠে তাহা ঘন এবং হরিদ্রা বা সবুজ হরিদ্রা মিশ্রিত বর্ণের হইয়া থাকে। যখন দেখা যাইবে যে সর্দি বেশ পাকিয়াছে অর্থাৎ নাসিকা সাব বেশ ঘন গয়ারের মত ও উহা হরিদ্রাবর্ণের অথবা সবুজ হরিদ্রাবর্ণ মিশ্রিত এবং প্রদাহিত স্থান হাজিয়া না যায়, তখনই পালস উপকারী।

চক্ষু পীড়ায় লক্ষণ:- সর্দিজ লক্ষণ। চক্ষুর পাতার চারিদিকে, চক্ষু গোলকের উপর এবং কনীনিকার উপর পুঁজবটি, চক্ষু পীড়ায় চক্ষু হইতে মিউকাস ও পূঁজ মিশ্রিত স্রাব নির্গত হয়। এই স্রাব খুব ঘনও জুড়িয়া থাকে। ঠাণ্ডা লাগিয়া হোক কিংবা হামের পরে হোক কনজাংটিভাইটিস পীড়ার ঘন পুঁজের মত স্রাব চক্ষু নির্গত হইতে থাকিলে এবং চক্ষুর ভিতর লালবর্ণ কিংবা চক্ষুতে বিশেষ প্রদাহ না থাকিয়া প্রাতে চক্ষুর পাতা জুড়িয়া যাইলে পালসেটিলায় বিশেষ উপকার হয়। চক্ষুর শোথ, ঘা ও অস্তিনা রোগেও ইহা উত্তম ফলপ্রদ । ইহার চক্ষু প্রদাহ ঠাণ্ডা প্রয়োগে এবং খোলা বাতাসে উপশম হয়, চক্ষুর নিচের পাতাতেই ইহার অঞ্জিনা দৃষ্ট হয়। ছোট ছোট মেয়েদের ও আঁতুড়ে শিশুদের পূজ ভরা চক্ষু প্রদাহে পালস উপকারী। পালসে আরোগ্য না হইলে শেষে আর্জেন্ট নাইট ২০০ শক্তি সেবন করাইলে প্রায়ই পীড়ার আরোগ্য হয়। এই রোগে উপরোক্ত লক্ষণের সহিত যদি কর্ণিয়ায় ছিদ্র বা ক্ষত হইবার উপক্রম হয়, তখন মার্ক কর অধিক উপযোগী।

চক্ষু পীড়ায় অনেক সময় চক্ষুর পাতায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গুটি নির্গমন, সেই সঙ্গে আলোক ভীতি বা আলোক অসহিঞ্চুতা, কিন্তু চক্ষু হইতে জলপড়া থাকে না। মুক্ত বায়ুতে এইরূপ চক্ষু, রোগের লক্ষণের বৃদ্ধি। ঝাপসা দৃষ্টি সেই সঙ্গে মাথা ঘোরা, গা বমি, দ্বি-দৃষ্টি, চক্ষুর সামনে তারা বা অগ্নি গোলকের ন্যায় দ্রব্য, অথবা কল্পনাময় দৃশ্য দেখা প্রভৃতিতে এবং ক্রোফিউলা ধাতুগ্রস্ত লোকদের যদি কর্ণিয়া মধ্যস্থলে ক্ষত হয় তাহা হইলে পালসেটিলা বিশেষ উপযোগী ।

জ্বর পীড়ায় লক্ষণ:- স্বল্প বিরাম জ্বরে যদি বিকালে বা সন্ধ্যায় জ্বর বাড়িতে থাকে এবং সারা রাত্রি জ্বর থাকিয়া প্রাতে ছাড়িয়া যায় এবং বৈকালে বা সন্ধ্যায় জ্বর বাড়িবার সময়ে প্রথমে পিপাসা হইয়া শীত হইয়া জ্বর আসে এবং শীত বা উত্তাপাবস্থায় পিপাসার লেশমাত্র থাকে না তাহা হইলে ইহা উপযোগী। জ্বরের সাথে প্রায়ই চক্ষু ও হাত পায়ের জ্বালা থাকে। রোগী বাহিরের বাতাসে থাকিতে চায়। ঘরের দরজা জানালা খুলিয়া দিতে চায়। রোগীর মাথা গরম ও ঠোঁট শুষ্ক, সেজন্য জিহ্বা তারা ঠোঁট লেহন করে। তবুও জল পান করিতে চায় না।

সবিরাম জ্বরে লক্ষণ:- সর্দি বা পৈত্তিক জ্বর বৈকালে বা সন্ধ্যায় আসিয়া সারারাত থাকিয়া প্রাতে ছাড়িয়া যায়। আহারের দোষে ও বা গরম মশলাযুক্ত, চর্বিযুক্ত বা ঘৃতপক্ত খাদ্য ভোজনে জ্বর হইলে কিংবা এইরূপ আহারের অত্যাচারে জ্বর বন্ধ থাকিবার পর পূনঃ প্রকাশিত হইলে ইহা উপযোগী। ইহার জ্বর বেলা ১টা হইতে ৪টা, বৈকাশ ৪/৫টার দিকে প্রায়ই আসে। অনেক সময় বেলা ৮টা বা ১০টায়ও আসে। জ্বর আসিবার পূর্বে বমন, পিপাসা উদরাময় ও নিদ্রালুতা থাকে। সন্ধ্যায় জ্বর আসিলে শীতভাব ও পিপাসা থাকে, প্রাতঃকালে আসিলে পিপাসা তেমন থাকে না। শীতাবস্থায়, গরম ঘরে থাকিলেও শীত যায় না, এই সময় শরীর খুব বেদনা থাকে, শীতের সময় পিপাসা থাকে না।

শীতাবস্থায় হাত পা ঠাণ্ডা হয় । উত্তাপাবস্থায় শরীরের কোন অংশে গরম, কোন অংশে ঠাণ্ডা, পিপাসা শুন্যতা, গাত্রদাহ, অস্থিরতা, হাত, পা, মুখ, চোখের ভয়ানক জ্বালা, রোগী ছটফট করে, ঠোঁট শুকাইয়া যায়, কিন্তু পিপাসা তেমন থাকে না। দেহের উপরের দিকে যদিও ঠাণ্ডা, নিচের দিক গরম অথবা তাহার বিপরীত, কিংবা ডান হাত পা যদি গরম থাকে, তবে বাম হাত বা বাম পা ঠাণ্ডা হয়। এত উত্তাপ মনে হয় যেন শরীরে কেহ গরম জল ছড়াইয়া দিয়াছে। শীতের পর ঠিক উত্তাপাবস্থায় পূর্বে অর্থাৎ শীত ও উত্তাপের সন্ধিস্থলে যখন রোগী অন্তরে উত্তাপ অনুভব করে অথচ বাহিরের লোক গায়ে হাত দিয়া কিছুই উত্তাপ বুঝিতে পারে না, তখন পালসেটিলায় পিপাসা হয়। এই পিপাসা দেখিয়া এ কথা বুঝা উচিত নয় যে, পিপাসা যুক্ত জ্বরে পালসেটিলা উপযোগী নহে।

ঘর্মাবস্থায় তেমন ঘাম হয় না, যদিও হয় তাহা মাথায় কিংবা মুখে দেহের বাম দিকেই ঘাম বেশী হয়। নিদ্রাভঙ্গ হইলে ঘর্ম বন্ধ হয়। রাত্রে ঘর্ম হয়।জ্বর ছাড়িয়া যাওয়ার সময় শীত শীতভাব, মাথাব্যথা, কাশি, মুখে তিক্তাস্বাদ বুকে ভারবোধ, টক ঢেঁকুর, গা বমি উদরাময় প্রভৃতি থাকে। প্লীহার স্থানে বেদনা হয়। জিহ্বা সাদা বা হরিদ্রা বর্ণের লেপাকৃত।

বাত পীড়ায় লক্ষণ:- অজীর্ণতা বশতঃ যদি ক্রমেই গেঁটে বাত আসিয়া পড়ে তাহা হইলে পালস উপকারী। ইহা দ্বারা আরোগ্য না হইলে কলচিকাম ব্যবস্থেয়। সন্ধিস্থানের রাতে যদি আক্রান্ত স্থান ফুলিয়া যায়। এবং ঐ বেদনা যদি প্রবল হয় এবং মনে হয় যেন বেদনা স্থানে হুল কোটাইতেছে তাহা হইলে ইহা ব্যবহার্য। টাটানি, আজ একস্থানে কাল অন্যস্থানে বেদনা। সঙ্গিস্থানের বেদনায় সময়ে সময়ে চাপে আরামবোধ হয় এবং সন্ধ্যাকাল হইতে বেদনা বৃদ্ধি পায়। প্রমেহ স্রাব রুদ্ধ হেতু বা প্রমেহ বিষ দ্বারা দেহ আক্রান্ত হেতু কিংবা আঘাতজনিত বাতে পালসেটিলা কার্যকরী।

শিরঃপীড়ায় লক্ষণ:- অজীর্ণতাবশতঃ অথবা বাত কিংবা স্নায়ুর উত্তেজনা হেতু শিরঃপীড়ায় ইহা উপকারী। সন্ধ্যাকালে বা মানসিক পরিশ্রমে যন্ত্রণা বাড়িয়া যায়। অজীর্ণতা হেতু শিরঃপীড়া সকাল বেলায় ও বৃদ্ধি পায়। মাথা ব্যথায় বেদনা মাথার একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্তে পরিচালিত হয়। ঋতু বন্ধ হইয়া যদি মাথা গরম হয় ও ব্যথা হয় এবং ঐ বেদনা খোলা বাতাসে উপশম হয় তবে পালসেটিলা উত্তম ঔষধ।

নিদ্রা লক্ষণ:- রোগী চিৎ হইয়া মাথার উপর হাত দিয়া ঘুমায়। বিশৃঙ্খল ভীতিজনক, উৎকণ্ঠার স্বপ্ন দেখে। নিদ্রা দেরীতে আসে। অথচ সন্ধ্যার সময়ই রোগী ঘুমে কাতর হয়। অত্যন্ত গরম বোধ হয় এবং বিছানায় ছটফট করে। গাত্রবস্ত্র ফেলিয়া দেয় এবং হাত পা ঠাণ্ডা হইবার জন্য বাহিরে রাখে।

প্রান্তদেশে লক্ষণ:- প্রান্তদেশসমূহে পালসেটিলা সুন্দর ক্রিয়া করিয়া থাকে। জ্বর পীড়ার সহিত প্রায়ই রোগীর হাত পা ও চক্ষু জ্বালা করে। রোগীর মাথা গরম ও ঠোঁট শুষ্ক, সেজন্য সব সময় জিহ্বা দ্বারা ঠোঁট লেহন করে। সবিরাম জ্বরের শীতাবস্থায় শরীরে খুব বেদনা থাকে। শীতাবস্থার ঘরের হাওয়া গরম বোধ হয়, হাত পা ঠাণ্ডা হয়, যেন মনে হয় মরা মানুষের শরীর। সবিরাম জ্বরের উত্তাপাবস্থায় শরীরের কোন অংশে গরম, কোন অংশে ঠাণ্ডা, অস্থিরতা, গাত্রদাহ, হাত, পা, মুখ, চোখের ভয়ানক জ্বালা, ঠোঁট শুকনা। দেহের উপরের দিক যদিও ঠাণ্ডা নিচের দিক গরম অথবা তাহার বিপরীত কিংবা ডান হাত পা যদি গরম থাকে ও হাত পা ঠাণ্ডা হয়। শীতের পর ঠিক উত্তাপাবস্থার পূর্বে অর্থাৎ শীত ও উত্তাপের সন্ধিক্ষণে যখন রোগী অন্তরে উত্তাপ বোধ করে অথচ বাহিরের লোক গায়ে হাত দিয়া উত্তাপ বুঝিতে পারে না। ধর্মাবস্থায় তেমন ঘাম হয় না যদিও হয় মাথায় কিংবা মুখে বিশেষতঃ শরীরের বাম দিকে ঘাম হয়, জিহ্বার সাদা বা হরিদ্র বর্ণের লেগ। সবিরাম জ্বরাবস্থাতেই দেখা যায় পালসেটিলার প্রস্তুদেশের ক্রিয়া অনেক বেশী। ইহা ছাড়া অজীর্ণতাবশত গেঁটে বাত সন্দিরাত, আক্রান্ত স্থান ফুলিয়া যায়। অজীর্ণতা বশতঃ শিরঃপীড়া-মাথাব্যথায় বেদনা মাথার একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্তে পরিচালিত হয়। ঋতু বন্ধ হইয়া মাথা ব্যথা ও মাথা গরম হয়। স্বাভাবিক ভাবে পালসের রোগী চিৎ হইয়া মাথার উপর হাত দিয়া ঘুমায়। অত্যন্ত গরম বোধ, ছটফট করে, গাত্রবস্ত্র ফেলিয়া দেয় এবং হাত পা ঠাণ্ডা হইবার জন্য বাহিরে রাখে। প্রাপ্ত দেশের এই সকল লক্ষণ একমাত্র পালটিলাতেই দৃষ্ট হয়।

পালসেটিলার রমনী:- পালসেটিলার রমনী অত্যন্ত অভিমানী ভদ্র, সাধারণত, বড়ই শান্ত ও মৃদু স্বভাব, কিন্তু সামান্য কারণে কাঁদিয়া ফেলে। ইহার রোগিনী কখনও ক্রোধ পরায়ন হয় না, তবে কুচিৎ কোনও কারণে খিটখিটে হইতে পারে। রোগিনীর মন মেজাজ পরিবর্তনশীল। এই হর্ষ এই বিষাদ। ইহার রমনী অশ্রুপাত প্রবণা ও শ্লেষ্মা প্রধানা। আকৃতি হইতে পীড়িত হওয়ার বিষয় কিছুই বিশ্বাস করা যায় না। কখনও মানসিক অবস্থা এমন আনন্দদায়ক হয় যেন মনে বসন্ত বহিয়া যাইতেছে। চূড়ান্ত আমোদ ও চূড়ান্ত বেদনার অনুভূতি পোষণ করিয়া থাকিতে ইচ্ছা করে। নিজের কষ্টের কথা কাহাকেও খুলিয়া বলে না, নিজের মনেই কাঁদিয়া চলে। সামান্য সান্তনায় বা সহানুভূতিপূর্ণ আচরণে তাহার সকল দুঃখের অবসান ঘটে। পালসেটিলার রমণী ভাবে সকলেরই দুঃখের ইতিহাস শোনার আছে কিন্তু তাহার নাই। ধর্মসংক্রান্ত সংস্কার সম্বন্ধে তাহার আলোচনা করার খুবই ঝোঁক। মনে করে যে সে আশ্চর্য শুদ্ধ অবস্থায় আছে। পালসের স্ত্রীলোকদের সঙ্গম প্রবৃত্তি খুবই বেশী, কামোন্মাদনা। সঙ্গম চিন্তায় আত্মহারা হইয়া পড়েন। পালসের রোগিনীর ঋতুস্রাবের পরিপাণ অল্প, থাকিয়া থাকিয়া হয়। জরায়ুতে বেদনা, খামচানি ব্যথা, কটিদেশে বেদনা, শিরঃপীড়া প্রভৃতি। ঋতু প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে বেদনা উদ্ভব। পেট ব্যথা। খোলা বাতাস পছন্দ করে কিন্তু তাহাতে শীত শীত ভাব। পতু বন্ধু হইয়া নাক, মুখ বা পাকস্থলী হইতে রক্তস্রাব। পালসেটিলা যন্ত্রণার সময় শীত কাতর কিন্তু অন্য সময়ে গরম কাতর।

গ্রাফাইটিসের রমণী:- গ্রাফাইটিসের রোগিনী গৌরবর্ণ স্থূলদেহ ও মেদপূর্ণ অর্থাৎ Fair, Flabby, Fatty গ্রাফাইটিসের রোগিনী তিনটি F নির্দেশক লক্ষণ। রোগিনীর নখসমূহ পুরু পুরু ও বিবর্ণ। রোগিনী ক্রমেই মোটা হওয়ার প্রবণতা। যদিও দেখিতে মোটা কিন্তু রক্তশূন্য, হলুদ, পাণ্ডু ও রোগগ্রস্তা । রোগিনী ভাবপ্রবণ, বিষণ্ণতা ও নৈরাশ্যের মনটি নানা দুশ্চিন্তায় আন্দোলিত। পালসের সহিত ইহার বিভিন্নতা এই যে, পালসে চর্মরোগ প্রবণতা নাই, আর গ্রাফাইটিসে চর্মপীড়া ব্যতীত ইহার চিন্তাই করা যায় না। পালসেটিলাকে তিরস্কার করিলে কাঁদিয়া ফেলে আর গ্রাফাইটিস তিরস্কারে হাসিতে থাকে। ইহার ঋতু বিলম্বে প্রকাশিত হয়, পারিমাণে অল্প ও যন্ত্রণা থাকে। গ্রাফাইটিসের রমণীর মুখে ফুস্কুড়ির নায় একপ্রকার উদ্ভেদ থাকে। জরায়ু ও ডিম্বকোষে স্পর্শসহিষ্ণু বেদনা। গ্রাফাইটিস রক্তোচ্ছাসের অনুভূতির সময় গরম কাতর কিন্তু অন্য সকল সময়েই শীতকাতর।

উপচয় বা বৃদ্ধি:- উত্তাপে, গুরুপাক দ্রব্যে, ঘৃত ও চর্বিযুক্ত খাদ্যে, আহারের পর, সন্ধ্যাকালে, গরম ঘরে, বামদিকে শয়নে পা ঝুলাইয়া রাখিলে ।

উপশম:- মুক্ত বাতাসে, নড়াচড়ায়, শীতল স্থানে, শীতলদ্রব্য পানাহারে, ব্যথাযুক্ত পার্শ্বে শয়নে, ধীরে ধীরে অঙ্গ সঞ্চালনে ।

সম্বন্ধযুক্ত ঔষধ:- পালসেটিলার পূর্বে বা পরে কেলি মিউর ফলপ্রদ। ক্রন্দনশীলতায় নেট্রাম মিউর ও সিপিয়া তুল্য। চক্ষুপ্রদাহে আর্জেন্ট নাইট, ঋতুবন্ধে সিপিয়া এবং স্তনদুগ্ধ শূন্য হওয়ায় এগ্লাস তুল্য ।

অনুপূরক ঔষধ:- লাইকোপোডিয়াম, সাইলিসিয়া, আর্জেন্ট নাইট, স্ট্যানাম, ক্যামোমিলা, সালফার।

পরবর্তী ঔষধ:- সিপিয়া, সালফার, কেলি মিউর ।

ক্রিয়ানাশক ঔষধ:- কফিয়া, ক্যামোমিলা, নাক্স ভূমিকা, ইগ্নেশিয়া, স্ট্যানাম, এসাফিটিডা।

স্থিতিকাল:- ৪০ দিন।

শক্তি বা ক্রম:- ৩ হইতে ২০০ এবং তদুর্ধ শক্তি।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৯ নভেম্বর ২০২৩, ১:২০ অপরাহ্ণ ১:২০ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ