ক্যাটেগরীজ: স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ দিনে ৬-৭ বার পর্যন্ত প্রস্রাব করতে পারে ৷ খুব বেশি পানি খেলে ৮/৯ বার পর্যন্ত হতে পারে৷ তবে এর বেশি হলে এটাকে ঘন ঘন প্রসাব বলা যায়৷ সোজা কথা কেউ ২ লিটার পানি পান করে ২৪ ঘন্টায় ৭/৮ বারের বেশি প্রস্রাব করলে তার শারিরীক কোন সমস্যা আছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে । বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যা দুর্বল মূত্রস্থলীর লক্ষণ হতে পারে।

ঘন ঘন প্রস্রাব ব্যাপারটা বিরক্তির কারনও বটে, এর ফলে কাজ বাধাগ্রস্থ হয়, রাতের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব ঘন ঘন প্রস্রাবের যেমন রাতে বা দিনে ঘন ঘন প্রস্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঘন ঘন প্রসাব থেকে মুক্তির ঔষধ সর্ম্পকে।

ঘন ঘন প্রস্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ

Lycopodium (লাইকোপেডিয়াম): রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে লাইকোপেডিয়াম (Lycopodium) বেশ উপকারী হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। রোগী প্রস্রাবের জন্য প্রায়শই রাতে ঘুম থেকে ওঠে, প্রস্রাব অল্প পরিমাণে বা বেশি পরিমাণে হতে পারে তবে রাতে বৃদ্ধি। ঘন ঘন প্রস্রাবের সাথে আরো একটি বৈশিষ্ট্য হল পিঠ ব্যথা যা প্রস্রাবের আগে আরও বৃদ্ধি পায়, মিষ্টি , গরম পানীয এবং খাবারের আকাঙ্ক্ষা, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো গ্যাস্ট্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি ঘন ঘন প্রস্রাবের সাথে দেখা যায়, এরা জানালা খোলা রেখে ঘুমাতে পছন্দ করে

Helonias 200 (হ্যালোনিয়াস): বয়স্কদের ঘন ঘন প্রস্রাবে খুব ভাল কাজ করে।

Iodium 200 (আয়োডিয়াম): ডায়াবেটিস রোগীর সবসময় ক্ষুধা ও ঘন ঘন প্রস্রাবে খুব ভাল কাজ করে। এ ধরনের রোগী প্রচুর ক্ষুদা এবং খায়ও প্রচুর কিন্তু শরীর দিন দিন শুকিয়ে যায়, সামান্য পরিশ্রমেই ঘাম হয় ।

Natrum Sulph 3x (নেট্রাম সাল্ফ): খুব দুর্বল ও পানি পিপাসা বেশি থাকলে খুব ভাল কাজ করে।

Natrum Phos 3x (নেট্রাম ফস) : শিশু-বাচ্চাদের ঘন ঘন প্রস্রাবে এই হোমিও ঔষধটি খুব ভাল কাজ করে। এছাড়াও ক্রিমিতে আক্রান্ত বাচ্চারা বিছানায় প্রস্রাব করলে নেট্রাম ফস – 3X; ১/৪ বড়ি দিনে তিন বার বয়স অনুসারে সেব্য ।

Insolium 30 (ইনসুলিন): ডায়াবেটিস রোগীর প্রস্রাবে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে আস্তে আস্তে সুস্থ্য করে তোলে।

Rhus Aromatic Q - অধিক পরিমানে প্রস্রাব, বিছানায় প্রস্রাব করা, প্রস্রাবের বেগ ধরে রাখতে না পারা,অনবরত ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব ।

(কস্টিকাম) Causticum 200: ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাবের বেগ ধারণে অক্ষমতা ও হাটা চলা করতে করতে ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব নিঃসরন হলে (কস্টিকাম) Causticum 200 খুব ভাল কাজ করে। শীতকালে অনিচ্ছায় ঘন ঘন প্রস্রাব হয় এবং গ্রীষ্মে ভাল হয় তখন কস্টিকাম 200 (Causticum) দরকারী। প্রস্রাবের সাথে বিভিন্ন ভয় এবং আশঙ্কা থাকে, বিশেষত আশঙ্কা করে যে তাদের সাথে কিছু খারাপ হবে। অন্ধকারে বিছানায় যাওয়ার ভয় তাদের। কাশি বা হাঁচি বা হাসতে হাসতেও এই লোকেরা তাদের প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলে।

Acid Phos (এসিড ফস): জীর্ণ শীর্ণ দুর্বল হয়ে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব দিন অপেক্ষা রাতে বেশি ও পানি পিপাসা বেশি থাকলে খুব ভাল কাজ করে।​

Nux Vom (নাক্স ভোম): কেবল অল্প পরিমাণে প্রস্রাব, মূত্রাশয়ে জ্বলন্ত বা ছেড়ে ছেড়ে ব্যথা অনুভূত হতে পারে, প্রস্রাবের সময় মূত্রনালীতে চুলকানি অনুভূতি হয়। ব্যক্তি খুব খিটখিটে, অধৈর্য এবং ঠাণ্ডা অনুভব করে। উপসর্গ গরম পানিতে স্নান বা অন্যান্য ধরনের উষ্ণতা দ্বারা উপশম হতে পারে। গরমে উপশম।

এপিস মেল (Apis Mel): প্রস্রাব করার সময় মূত্রনালীর মধ্যে অত্যন্ত জ্বালা ও হুলফোটানো ব্যথা। ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ; প্রস্রাবের বেগ আসলে রোগী এক মিনিটও তা ধারন করতে পারেনা, জ্বালা যন্ত্রনার সাথে রক্তস্রাব।

Thuja (থুজা): যখন মূত্রথলি বড় হয় এবং মূত্রাশয়ের ঘাড়ে কাটা বা জ্বলন্ত ব্যথা অনুভূত হওয়ার সাথে সাথে ব্যক্তির ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ দেয় , তখন এই প্রতিকারটি শান্তি বয়ে আনতে পারে। কাঁটাযুক্ত বা ছেড়ে ছেড়ে প্রস্রাবের প্রবাহের জন্যও Thuja (থুজা)’র প্রয়োজন হয়।

Cantharis (ক্যান্থারিস): প্রস্রাবের প্রচুর চাপ, প্রস্রাবের আগে কাটার মত প্রচন্ড ব্যাথা, প্রস্রাবের সময় ও পরেও ব্যাথা হয়। ফোটা ফোটা প্রস্রাব, প্রস্রাব শেষ করার পরও মনে হয় যে প্রস্রাব শেষ হয় নি, মূত্রাশয় খালি হয়নি, প্রস্রাবের প্রচন্ড চাপ অনুভব করে।

Sarsaparilla (সারসাপারিলা): রোগের উপসর্গগুলি অস্পষ্ট হলে বা অন্যান্য ঔষধে কাজ না হলে এই ঔষধটি সাহায্য করে। এই ঔষধের উপসর্গগুলোর অন্যতম উপসর্গ, প্রস্রাবের শেষে জ্বলন্ত ব্যাথার সাথে ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ অনুভূত হয়। ব্যক্তি যখন দাঁড়িয়ে থাকে তখন প্রস্রাব হয়, তবে বসার সময় কেবল ফোটা ফোটা আসছে আসছে আসছে করে প্রস্রাব হয় বা ফোটা ফোটা আসছে আসছে অনুভূত হয়।

ঠান্ডা লাগলেই যদি কারাে ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ হলে ডালকামারা (Dulcamara)। মেডােরিনাম (Medorrhinum) CM ২টি মাত্রা এবং লাইকোপেডিয়াম (Lycopodium) 200 ।

স্যাতস্যাতে গৃহে বাস করে এমন রােগী পান এবং তার যদি ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ হয় তবে চোখ বন্ধ করে ডালকামারা (Dulcamara) দিন। রােগী খুশি মনে আপনাকে ধন্যবাদ জানাবেন। - হোমিওপ্যাথির দিগদর্শন – ডাঃ এম. হাসান মীর্জা

রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ

ঘন ঘন প্রস্রাব করা রাতের সময় সবচেয়ে বিরক্তিকর কারণ এটি ঘুমকে বিঘ্নিত করে। রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য লাইকোপেডিয়াম (Lycopodium), মার্ক সল (Merc Sol) এবং ক্রিয়োজোট (Kreosote) উত্তম ঔষধ।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ ১২:২৮ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন
দ্বারা প্রকাশিত
বিডিভিউ২৪ ডেস্ক

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

নোংরা শৌচাগার থেকে মূত্রাশয়ের সংক্রমণ

মূত্রাশয় বা মূত্রথলিতে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ প্রদাহ ও অস্বস্তি বাড়ায়। লক্ষণের মধ্যে রয়েছে- প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ঘন…

২৬ মার্চ ২০২৪, ১:০২ অপরাহ্ণ