মাসুদা ভাট্টিকে চরিত্রহীন বলায় যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

নারী সাংবাদিককে চরিত্রহীন বলে কী করে পার পেয়ে যায়। আপনারা নারী সাংবাদিকরা কী করেন। একটা মামলা কেন, আরো তো মামলা হতে পারে। আপনারা মামলা করেন, আমরা যা করার করবো। কথাগুলো বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার গণভবনে নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে চরিত্রহীন বলা নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরো বলেন, মইনুল হোসেন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের হয়ে দালালি করেছেন। তিনি ইত্তেফাক অফিসে একটা খুনও করেছেন।

এ সময় মইনুলের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, মইনুল হোসেন গেলেন বিদেশে ব্যরিস্টারি পড়তে। দেশে ফিরে তিনি সাহেব হয়ে গেলেন। তফাজ্জল হোসেন মানিক চাচা পান্তা ভাত খেতেন।

কিন্তু মইনুল বিদেশে থেকে এসে সাহেব হয়ে গেলেন। তিনি দেশি খাবার আর খেতে পারেন না। মানিক চাচা আমাদের বাসায় এসে বলতেন কি করি ছেলেকে নিয়ে, সেতো বিদেশি খাবার ছাড়া খায় না। সেসময় ১০০ টাকা বেতন দিয়ে তার জন্য বাবুর্চি রেখে বিদেশে খাবার রান্না করতে হতো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মইনুল হোসেন বিদেশ থেকে সাহেব হয়েছিলেন কিন্তু সভত্য শেখেননি। এ সময় মাসুদা ভাট্টির বিরুদ্ধে উল্টো মইনুলের আইন নোটিশ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং নোটিশে উল্লেখিত জামায়াত সংশ্লিষ্টতার প্রমান চাওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি সেসময়কার পত্র-পত্রিকা এবং ভিডিও খুঁজে বের করে বিষটি প্রমাণ করতে বলেন সাংবাদিকদের।

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, নিবাচন নিয়ে যারা সংশয় সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা সেটা যেন না থাকে। তবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সময় মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নির্বাচনকালীন মন্ত্রীসভা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাকে যে ছোট করবো সেটাইতো বুঝতে পারছি না। বড় থাকলে অসুবিধা আছে? সোমবার গণভবনে সাংবাদিকে নঈমুল ইসলাম খানের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নাঈমুল ইসলাম খানের প্রশ্ন ছিলো নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রীসভা গঠন নিয়ে। তিনি জানতে চান, কবে নাগাদ মন্ত্রীসভা ছোট হবে। উত্তরে প্রধানমন্ত্রী হেসে বলেন, কাকে যে ছোট করবো সেটাইতো বুঝতে পারছি না। বড় থাকলে অসুবিধা আছে?

এরপর তিনি উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রীসভা ছোট করলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে কিনা সে আশঙ্কার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। এসময় বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।

বলেন, দেখা যাক কি হয়। যদি অপজিশন ডিমান্ড করে তখন করবো। আর না করলে কিছু করার নাই। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে রাজনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে মানুষ স্বাধীনতা ভোগ করছে। এটাকে আমি স্বাগত জানাই। সম্প্রতি গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, মানুষ সব ক্ষেত্রে স্বাধীন। যারাই যা করছে আমি স্বাগত জানাই। তবে একটু ভেবে দেখা দরকার কারা কারা জোট করছে। তাদের কথাবার্তা, স্বভাব সবকিছু ভেবে দেখা উচিৎ।

এমনকি নারীদের সম্পর্কে অনেকের বিরুপ মনোভাব রয়েছে। জোটে এমন আছে যারা নারী সাংবাদিককে নিয়ে যে ধরণের মন্তব্য করতে পারে সেটাও ভেবে দেখা দরকার। উল্লেখ্য, সম্প্রতি সৌদি আরবে ৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সৌদি আরবের দেশটির বাদশাহ এবং দুটি পবিত্র মসজিদের খাদেম সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় সফরের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার সৌদি আরব যান প্রধানমন্ত্রী।

সফরে প্রধানমন্ত্রী সৌদি রাজপ্রাসাদে বাদশাহর সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সৌদি যুবরাজ, উপপ্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশ চ্যান্সেরি ভবনের উদ্বোধন এবং জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ওমরাহ হজ্ব পালন শেষে তিনি দেশে ফেরেন।