আইন-আদালত

ক্যাসিনোকাণ্ড: কাজী আনিসের ১০০ কোটি টাকার অর্থ-সম্পদ জব্দ

অবৈধ উপায়ে সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসের ১০০ কোটি টাকার অর্থ-সম্পদ জব্দ করেছে দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এসব সম্পদ জব্দ করেন।

এর আগে, কাজী আনিসের বিরুদ্ধে দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে গত ২৯ অক্টোবর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে কাজী আনিসের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৯২০ টাকা এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

ওই মামলায় দুদকের তদন্তে রাজধানীর কলাবাগানে পাঁচতলা বাড়ি পাওয়া গেছে। ধানমন্ডি ও ওয়ারীতে দুটি ফ্লাট, এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লানে তিন দোকান ও ১৩ স্কোয়ার ফুট বাণিজ্যিক স্পেস, গুলশান-২ এলাকার একটি মার্কেটে দুইটি দোকান পাওয়া গেছে। এছাড়া রাজধানীর বাইরে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বোয়ালিয়ায় বিলসাবহুল বাড়ি, একটি পেট্রল পাম্প, ৩০ কোটি টাকার ১৫ বিঘা জমি ও কেরানীগঞ্জে ৪০ কাঠা জমি পেয়েছে দুদক। এছাড়া অনিসের ৫০ কোটি টাকার ব্যাংক লেনদেন পেয়েছে দুদক।

ক্লাবে ক্যাসিনোর জুয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবলীগের এই নেতাকে নজরদারিতে রেখেছিলেন র‌্যাব ও পুলিশের তদন্তকারীরা। গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তাঁকে আটক করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে দায়িত্বশীল কেউ ওই খবরের সত্যতা স্বীকার করেননি। একপর্যায়ে খবর আসে দেশের বাইরে তাঁর পালিয়ে যাওয়ার।

যুবলীগসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কাজী আনিস একসময় যুবলীগ অফিসের কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন। শীর্ষ নেতাদের আশীর্বাদে তিনি সংগঠনের নেতা বনে যান। তাঁকে সবাই 'ক্যাশিয়ার' বলেই চিনতেন। গত এক যুগে তিনি শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। কিছু যুবলীগ নেতার সব ধরনের অপকর্মের সঙ্গী এই আনিস।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের একাধিক নেতা বলেন, ক্ষমতাধর আনিসুর রহমান যুবলীগের চেয়ারম্যান বাদে কাউকেই পরোয়া করেন না। ২০০১ সালে যুবলীগের অফিসে কম্পিউটার অপারেটরের কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এরপর নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে বিভিন্ন কাজ ভাগিয়ে নেন। গত ১২ বছরে আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতোই বদলেছে তাঁর ভাগ্য। পাঁচ বছর আগেও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে টিনের ঘর ছিল তাঁর। এখন সুরম্য অট্টালিকা। আছে একাধিক বাড়ি। ময়মনসিংহের ভালুকা, ঢাকার স্বামীবাগ, ইত্তেফাক মোড়, যাত্রাবাড়ী, শুক্রাবাদ ও উত্তরায় আছে বাড়ি। লালমাটিয়া, ঝিগাতলা ও ধানমন্ডিতে আছে কয়েকটি ফ্ল্যাট। উত্তরা, মিরপুর ও গুলশানে মার্কেটে আছে দোকান। নারায়ণগঞ্জে চটের মিল আছে আনিসুরের।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জি কে শামীম, খালেদসহ কয়েকজনের সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়েন আনিসুর। তাঁর সিন্ডিকেট চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্লাবে জুয়ার আসর চালানোসহ সব অপকর্মে জড়িত ছিল। চাঁদার টাকা সংগ্রহ এবং বিভিন্ন মহলে পৌঁছানোর কাজ করতেন তিনি। এক শীর্ষ নেতা ছাড়া সবাই তাঁকে সমীহ করতেন। আনিসুরের কারণে ত্যাগী ও সৎ যুবলীগ নেতারা শীর্ষ নেতাদের কাছেও ভিড়তে পারতেন না।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২৩ নভেম্বর ২০২০, ১:২১ অপরাহ্ণ ১:২১ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ