রাজনীতি

এক নজরে পরশ বৃত্তান্ত

যুবলীগের নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শেখ ফজলে শামস পরশ। শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কংগ্রেসে নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হয়। কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে তার নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

যুবলীগের আগের ৬ সম্মেলনের চারটিতেই নেতৃত্বে দেখা গেছে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনি এবং তার নিকটাত্মীয়দের। পরশকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে সে ধারাবাহিকতা এবারো অক্ষুণ্ন থাকলো।

শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির জ্যেষ্ঠ পুত্র। বঙ্গবন্ধুর বোন শেখ আছিয়া বেগমের বড় ছেলে শেখ মনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা শেখ মনি ও মা আরজু মণিকে চিরতরে হারান পরশ। তখন তার বয়স মাত্র ৬। ছোট ভাই তাপস মাত্র ৪ বছরের শিশু।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয় পরশ-তাপসকে। কখনও আত্মীয়দের বাসায় লুকিয়ে থাকতে হয়েছে, কখনোবা পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। এভাবে দুই বছর কাটার পর ১৯৭৮ সালে তারা ভারতে চলে যায়।

শেখ আছিয়া বেগম তাদের ভারতে নিয়ে যান। চাচা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ ফজলুর রহমান মারুফ, ফুপু শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা তারাও তখন বিদেশে শরণার্থী। তার ছোট ভাই শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা-১২ আসনের সংসদ সদস্য।

শেখ পরিবারের উত্তরাধিকারী পরশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরে কলরাডো স্টেট ইউনির্ভাসিটি থেকে স্নাতকোত্তর করে দীর্ঘদিন শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় সংস্কৃতিমনা পরশ গান বাজনার প্রতিও বেশ সৌখিন।

সপ্তম কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে চাচা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ভাই শেখ ফজলে নূর তাপস, চাচাত ভাই শেখ ফাহিম, শেখ নাঈমসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সম্মেলন ভ্যেনুতে আসেন পরশ। ঝাঁকড়া চুলের দীর্ঘদেহী মানুষটি যখন মূল মঞ্চের দিকে যেতে থাকেন তখন সেখানে উপস্থিত জাতীয় নেতৃবৃন্দ তাকে অভিবাদন জানান।

এরপর যুবলীগের একজন নেতা পরশকে মূল মঞ্চে তুলে নেন। মঞ্চে থাকা যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে প্রথম সারির ৫টি চেয়ারের সর্বডানে বসেন তিনি।

তার বামে বসেন ওবায়দুল কাদের, তার বামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এরপর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম ও সদস্য সচিব হারূনুর রশীদ আসন গ্রহণ করেন। যুবলীগের বিদায়ী কমিটির কোনো পদে না থাকা পরশের মঞ্চে আসন গ্রহণ নিশ্চিত করে দেয় যে তিনিই হতে যাচ্ছেন যুবলীগের ভবিষ্যৎ কান্ডারি।

এরপর বাকিটা ছিল অনুষ্ঠানিকতা। দ্বিতীয় অধিবেশনের আগে ততক্ষণে পরশ ঘিরে শুরু হয় যুবলীগ কর্মীদের পরশ উন্মাদনা। ছবি, সেলফি আর স্লোগানে স্বাগত জানিয়ে নেতা-কর্মীরা তাকে দ্বিতীয় অধিবেশনের ভ্যেনু ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে নিয়ে যান।

এসময় পরশের সঙ্গে ছিলেন মামাতো ভাই বাগেরহাট ২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। এরপর বিকেল সোয়া চারটায় দ্বিতীয় অধিবেশনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

এর মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান রাজনীতিতে একদম নতুন পরশের রাজনৈতিক পথ চলা শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী তিন বছরের জন্য তিনি যুবলীগ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ