চাকরি

সংলাপ: লাভ শেখ হাসিনার, ক্ষতি খালেদার

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক সংলাপ শেষ হলো। ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই সংলাপ চলল আজ ৭ নভেম্বর পর্যন্ত। এই সংলাপে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দুবার বসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে।

বিকল্পধারা যুক্তফ্রন্ট একবার, বাম জোট একবার, ইসলামি ফ্রন্ট একবার করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এছাড়াও ১৪ দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠতেই পারে সংলাপের অর্জন কী? কী পেলো বাংলাদেশ? কারা লাভবান হলো?

এই সংলাপে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সংলাপের মাধ্যমে তিনি নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় তুলতে সক্ষম হয়েছেন। এই সংলাপের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করতে পেরেছেন যে, রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় তিনি বাংলাদেশে অবিসংবাদিত নেতা। এই সংলাপের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের নেতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে মেনে নিলেন।

সংলাপের পর সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, ধৈর্য্য এবং প্রাজ্ঞতায় মুগ্ধতার কথা বলেছেন। এই সংলাপ শেখ হাসিনাকে জাতির অভিভাবকের মর্যাদা দিয়েছে।

বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি শেখ হাসিনার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি দেখেছি।’ সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রথমবার এসেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ‘তিনি সংলাপে আমাদের সামনে এসেছিলেন প্রস্তুতি নিয়ে। সত্যি বলতে কি আমাদের ঐ প্রস্তুতি ছিল না।’ ঐক্যফ্রন্টের অন্য নেতা আ. স. ম. আবদুর রব বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার ধৈর্য দেখে আমি অবাক হয়েছি।

আমি ৯৬-২০০১ সালে তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি। সে সময়ের তুলনায় এখন তিনি অনেক পরিণত।’ শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বাম মোর্চার নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমও বলেন,

‘তিনি সত্যি সত্যি জনগণের অভিভাবক হিসেবে কথা বলেছেন।’ এই সংলাপে দ্বিতীয় লাভবান হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল।

আওয়ামী লীগের নেতাদের আচার আচরণ কথা বার্তায় এক ধরনের ‘অহংকার’ দৃশ্যমান ছিল। এই সংলাপে আওয়ামী লীগের বহু নেতা ‘মন্ত্রী’ থেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে দাঁড়ালেন। সবচেয়ে বড় কথা এই সংলাপ কিছুটা হলেও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে আড়াল করল।

এই সংলাপে লাভবান হয়েছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও। এই সংলাপের মধ্যে দিয়ে সদ্যজাত জোটটি প্রধান বিরোধী জোট হিসেবে আবির্ভূত হলো। এতদিন ২০ দলীয় জোটকেই প্রধান জোট হিসেবে মনে করা হতো। এবার আসা যাক, এই সংলাপে কার ক্ষতি হলো।

এই সংলাপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিটির নাম বেগম খালেদা জিয়া। এই সংলাপে তিনি এখন অনুকম্পায় বাঁচা, করুণ ‘রাজনীতিবিদ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেন। যার জন্য শুধু করুণা ভিক্ষাই করা হলো। তাঁকে ছাড়া সংলাপ করে বিএনপি প্রমাণ করল, বেগম জিয়া তাদের জন্য অনিবার্য নন।

সংলাপে দল হিসেবে বিএনপিও ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এই সংলাপে বিএনপি গেছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলের ভাড়া করা নেতা নিয়ে সংলাপ এ বছরের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রহসন। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ দল। যারা মূলধারার রাজনীতি থেকে কার্যত ছিটকে পড়ল।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৭ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৩৯ অপরাহ্ণ ১১:৩৯ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ