চাকরি

বাবরের পদত্যাগ পত্র ছিড়ে ফেলেন তারেক

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে ’রাজনৈতিক হারিকিরি’ (জাপানের সামরিক বাহিনীতে প্রচলিত একটি আত্মহত্যার নাম) বলে উল্লেখ করেছিলেন ড. কামাল সিদ্দিকী। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব ছিলেন তিনি। ঘটনার পর দিন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা নিয়ে ৪০ মিনিট বৈঠক করেন তিনি বেগম জিয়ার সঙ্গে।

ঐ বৈঠকে বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠ এবং রাজনৈতিক সচিব মোসাদ্দেক আলী ফালুও উপস্থিত ছিলেন। বেগম জিয়া ড. কামাল সিদ্দিকীর কাছে সহায়তা চান। বেগম জিয়া বলেছিলেন, ‘এই ঘটনায় কোন ভাবেই যেন তাঁর পুত্র তারেক জিয়ার নাম না আসে।’

এজন্য তিনি দলের এবং সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেও রাজি ছিলেন। ড. কামাল সিদ্দিকী সহ বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে কথা বলে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রথম বৈঠকে বেগম জিয়া ঘটনাটি তারেককে মিসগাইড করে করানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এ বিষয়ে একটি সমাধান প্রস্তুত করার জন্য দুই দিন সময় চান। এই সময়ের মধ্যে ড. কামাল সিদ্দিকী বিএনপির চারজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলেন।

এরা হলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, বিএনপির সিনিয়র নেতা এবং তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

প্রতিটি বৈঠকেই তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফালু। ২৫ আগস্ট ড. কামাল সিদ্দিকী বেগম জিয়াকে ৪ করণীয় সম্পর্কে একটি নোট দেন। তাতে, এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটি গঠন, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে কয়েকজন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের পদত্যাগের সুপারিশ ছিল। ড. কামাল সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘এই ব্যবস্থাগুলো নিলে বিএনপি এবং তারেক দুজনকেই ঘটনার দায় থেকে সরানো যাবে।’

বেগম জিয়াও প্রথমে এই প্রস্তাবে খুশি হন। বেগম জিয়া ড. সিদ্দিকীকে পথ বের করার জন্য ধন্যবাদও দেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া তাঁর মূখ্য সচিবকে বলেন, ‘কাল এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবো।’ পরদিন সকালে বেগম জিয়া তাঁর মূখ্য সচিবকে তাঁর কক্ষে ডেকে নেন। সেসময় তারেক জিয়াও উপস্থিত ছিলেন।

যেহেতু বেগম জিয়া পদক্ষেপগুলোর ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন, সেহেতু ড. সিদ্দিকী তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কাছ থেকে একটি পদত্যাগ পত্রও লিখিয়ে আনেন। বেগম জিয়ার কক্ষে প্রবেশ করতেই তারেক জিয়া তাঁর দিকে (ড. কামাল সিদ্দিকি) তেড়ে আসেন। নোংরা ভাষায় তাঁকে গালাগালিও করেন।

বলেন, ‘তুই আওয়ামী লীগের এজেন্ট। তোকেও গ্রেনেড দিয়ে মারা উচিৎ।’ এক পর্যায়ে বাবরের পদত্যাগ পত্রটি টেনে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন তারেক। বলেন, ‘কাউকে কিছু করতে হবে না, যা করার আমি আমি করবো।’ অপমানিত ড. কামাল সিদ্দিকী বেরিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রীর কক্ষ থেকে।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ