বায়োগ্রাফি

বুকের ওপর দিয়েই চলে যায় দ্রুতগতির বাস

যাত্রাবাড়ী থেকে গুলিস্তানের উদেশ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন নাজিম উদ্দিন(৩২)। মেয়র হানিফ উড়ালসড়কে উঠতেই নাজিম মঞ্জিল ও শ্রাবণ সুপার পরিবহন নামের দুই বাসের প্রতিযোগিতার মুখে পড়লেন।কিন্তু তখনও পর্যন্ত নাজিম জানতেন না বাস চালকদের মরিয়া এই প্রতিযোগিতা কয়েক সেকেন্ডেই কেড়ে নিবে তার প্রাণ।

মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানেই পেছন থেকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়লো নাজিম। মূহুতেই বেপরোয়া চালক তাঁর বুকের ওপর দিয়ে চালিয়ে দিলো দ্রুতগতির বাসটি। সড়কে দুঘর্টনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরও এক প্রাণ। যাত্রাবাড়ীর শ্যামপুর এলাকায় নাজিমের বাসা।

এই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষায় এটা কোন দুর্ঘটনা না ইচ্ছাকৃতভাবেই যেন ধাক্কাটা দিলো একটি বাস। তিনি বলেন, আমিও মোটরসাইকেলে চড়ে ফ্লাইওভারে উঠার পর দেখতে পাই যাত্রাবাড়ী থেকে দুটি বাস রেষারেষি করে চলছে। তিনি(নাজিম) ফ্লাইওভারের ডান পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাসগুলো একবার ডান, একবার বাম দিকে যাচ্ছিল।

তাই তিনি বারবার বাসগুলোকে হর্ন দিয়ে সতর্ক করছিলেন। মাঝে মাঝে আমিও হর্ন দিচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পর সায়েদাবাদের জনপদ মোড় বরাবর প্রায় ১০০ গজ আগে বাম পাশে থাকা বাসটি উনার বাইককে ধাক্কা দেয়।

তিনি বাইক থেকে রাস্তায় পড়ে যান। আমি দ্রুত আমার বাইক থেকে নেমে উনাকে তুলতে যাওয়ার আগেই ওই বাসের চালক তার ওপর পেছনের দুটি চাকা তুলে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এমন মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। এত জোরে চিৎকার দিলাম তবুও মনে হলো কেউ শুনেনি। আমার চোখের সামনে এখনও সেই দৃশ্যটা যেন ভাসছে।

চালক তাকে ধাক্কা দেয়ার পর যদি গাড়িটি থামাতো তাহলে ভাইটা প্রাণে বেঁচে যেত। কিন্তু ঘাতক চালক গাড়ি তো থামালোই না উল্টো গলার ওপর চাকা তুলে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল।

ওই লোক তখন আরও কয়েক জনকে সাথে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং নাজিমকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তি বলেন, এটা দুর্ঘটনা নয় হত্যা। এমন হত্যা কোনোভাবেই যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া পার না পায় সেজন্য সংবাদকর্মীদের ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন তিনি।

নিজামের গ্রামের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউপির বালুচরে। বাবার নাম আনিসুল হক। তারা তিন ভাই, পাঁচ বোন। ভাইদের মধ্যে সবার বড় ছিল নিজাম।

তিনদিন আগে রাজধানীর আদ দ্বীন হাসপাতালে রাইসা আক্তার নামে তার একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। এছাড়া মুনমুন নামে আট বছরের আরও একটি কন্যা রয়েছে। তার স্ত্রী এখনও আদ দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৭ মে ২০১৮, ৩:০৯ অপরাহ্ণ ৩:০৯ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ