বাসে প্রকাশ্যে হস্তমৈথুন, প্রতিবাদী ছাত্রীর পাশে দাঁড়ায়নি কেউ!

হঠাৎ তাদের নজরে পড়ে, পেছনের আসনে থাকা এক প্রৌঢ় সহযাত্রী অদ্ভুত ভঙ্গিতে তাদের দিকে তাকিয়ে হস্তমৈথুন করছেন।

ভারতের কলকাতার দমদম মেট্রো রেলওয়ে স্টেশনে এক প্রেমিক যুগল আলিঙ্গন করায় মারধরের ঘটনার রেশ এখনও থামেনি। কিন্তু মাত্র ১২ দিনের মাথায় চলন্ত বাসে প্রকাশ্যে হস্তমৈথুন করেছেন এক ব্যক্তি। এ সময় কেউ প্রতিবাদও করেনি, বাসে থাকা দুই ছাত্রী চিৎকার করার পরেও এগিয়ে আসেনি কেউ!

১২ মে, শনিবার কলকাতার শ্যামবাজারের কাছে চলন্ত বাসে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ঘটনার শিকার ওই দুই ছাত্রী জানান, হেদুয়া থেকে কোচিং থেকে দমদমে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ছিল তার এক বান্ধবী। হঠাৎ তাদের নজরে পড়ে তাদের পেছনের আসনে থাকা এক প্রৌঢ় সহযাত্রী অদ্ভুত ভঙ্গিতে তাদের দিকে তাকিয়ে হস্তমৈথুন করছেন।

টিউশনি শেষে দমদমের বাড়িতে ফিরছিলেন উত্তর কলকাতার একটি কলেজেপড়া বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। ৩০বি/১ রুটের ওই বাসে এক বান্ধবীর সঙ্গে সামনের দিকের আসনেই বসেছিলেন তিনি। হঠাৎ এক ছাত্রীর নজরে পড়ে, পেছনের আসনে বসে থাকা এক প্রৌঢ় সহযাত্রী অদ্ভুত ভঙ্গিতে তাদের দিকে তাকিয়ে হস্তমৈথুন করছেন।

ওই ছাত্রী বলেন, ‘দুপুর তখন ১২টা হবে। টিউশন নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। হাতিবাগান ঢোকার আগে হঠাৎ দেখি আমাদের দেখিয়ে দেখিয়ে ওই লোকটি অমন করছে। আমি চিৎকার করি। কেউ কোনো প্রতিবাদ না করায় ভিডিও করতে শুরু করি।

তাতেও লোকটা থামেনি। আমার বন্ধুটি ভয় পাচ্ছিল। ও ভিডিও করতে বারণ করে। এরপর ভয় পেয়ে আমরা দুইজনে মিলে চিৎকার করি। কিন্তু বাসের কোনো যাত্রীই তখন এগিয়ে আসেননি।’

পরে হস্তমৈথুন করা ওই ব্যক্তি বাস থেকে নেমে গেলে ওই ছাত্রী বাসের কন্ডাক্টরকে বিষয়টা জানান। কিন্তু কন্ডাক্টর ওই ছাত্রীকে অবাক করে দিয়ে বলেন, ‘কী করব বলুন, কার মনে কী আছে, কী করে বুঝব?’

ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমি চিৎকার করে বলি, ওকে ধরুন। কিন্তু কেউ তাকে আটকালো না। তারপর লোকটি আসন ছেড়ে উঠে যায়। বাস তখনও চলছিল। শ্যামবাজার মোড়ের আগেই বাসটি একটু স্লো হতেই তিনি নেমে যান।’

ওই ছাত্রীর দাবি, এটাই প্রথম নয়, ১৫ দিন আগেও ওই ব্যক্তিই একই কাজ করেছিলেন। কিন্তু সেবার ভয় পেয়ে কাউকে কিছু বলেননি। তবে এবার সাহস করে ভিডিও করেছেন। ছাত্রীটির অভিযোগ, লোকটি বারবার যৌনাঙ্গ বার করেই প্রকাশ্যে বাসের ভেতর হস্তমৈথুন করছিলেন।

এদিকে ছাত্রীর করা ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরই মধ্যে কোনো এক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে পোস্ট করলে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই ছাত্রীকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে মেসেঞ্জারে ভিডিও এবং আমার অভিযোগ জানিয়েছি। এখনও কেউ কোনো যোগাযোগ করেননি। আমি শ্যামপুকুর থানায় লিখিতভাবে অভিযোগও করছি।’

তবে এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ‘বাসে অশালীন অঙ্গভঙ্গির বিষয়ে এক ভদ্রমহিলা আমাদের মেসেজ করেছেন। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করারও প্রয়োজন নেই। তার পাঠানো ওই পোস্ট এবং ভিডিও আমাদের জন্য যথেষ্ঠ। আমরা ইতোমধ্যে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছি। যত দ্রুত সম্ভব ওই পুরুষকে চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি রইল।’