ক্যাটেগরীজ: স্বাস্থ্য

বন্ধ্যাত্ব রোগের বা গর্ভবতী হওয়ার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ

আজকে আমরা বন্ধ্যাত্ব রোগের বা গর্ভবতী / সন্তান হওয়ার , গর্ভধারনের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ সর্ম্পকে জানব।

বন্ধ্যাত্ব কি?
বন্ধ্যাত্ব হল শরীরের একটি প্রজননগত সমস্যা। যার ফলে প্রজনন চক্র কাজ করে না বা বাধাগ্রস্থ হয়। এর ফলে সন্তানের জন্ম দেওয়া যায় না।

কোন মহিলা যদি জন্মনিয়ন্ত্রন ব্যতীত এক বছর চেষ্টা করেও যদি গর্ভধারন না করতে পারে তখন তাকে বন্ধ্যাত্ব বলে। কখনো বা কিছু নারীর দ্বিতীয় বার সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রেও এই অসুবিধা হতে পারে।

অনেক নারী বুঝতেই পারেন না যে কেন তারা মা হতে পারছেন না এবং অন্যের সাথে এটি আলোচনা করতে লজ্জা বোধ করেন। শুধু নারীরা না পুরুষের শারীরিক সমস্যার কারনে এই সমস্যা হতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব রোগের বা গর্ভবতী হওয়ার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
স্বামীর গণােরিয়া রােগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস পেলে, স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই পর্যায়ক্রমে খুজা (Thuja Occidentalis) ও মেডােরিনাম (মেডােরিনাম) উচ্চ শক্তিতে বেশ কিছু দিন খেতে হবে।

খুজা (Thuja Occidentalis): গনােরিয়া চাপা দেয়ার কুফলে জননেন্দ্রীয়ের ফ্যালােপিয়ান টিউবে প্রদাহ, বসন্তের টিকা দেবার যাবতীয় কুফল, শীর্ণবৃত্তের উপর মাংসালাে আঁচিল বা রক্তাবুদ, ডিম্বাকোষের প্রদাহ- বামদিকে বেশী, প্রত্যেকবার ঋতুকালে বৃদ্ধি, স্বপ্নবহুল নিদ্রা বা মৃত্যু ব্যক্তিকে স্বপ্ন দেখে, যুমে বিছানার উপর ভেসে উঠে ধপ করে পড়ে ঘুম ভেঙ্গে যায় তাদের বন্ধ্যাত্ব রোগে খুজা (Thuja Occidentalis)।

এম, আর, করার পরে গর্ভধারণ না করলে স্ট্যাফিসেগ্রিয়া (Staphysagria) ২০০/১০০০ শক্তি এক ঘণ্টা অন্তর ২ মাত্রা প্রয়ােগ করে ১০ দিন বাদে খুজা (Thuja Occidentalis) ১০ M, ১ ঘণ্টা পর পর ২ মাত্রা ব্যবহার করলে ভাল ফলের আশা করা যায়।

মাসিকের গােলমাল ও জরায়ুর স্থানচ্যুতিতে ভাইবার্নাম প্রুনিফোলিয়াম (Viburnum Prunifolium) Q, ৫/১০ ফোটা মাত্রায় দিনে ২ বার ২/৩ মাস ব্যবহার করলে গর্ভ সঞ্চারের আশা করা যায়।

আয়োডিয়াম (Iodium): রাক্ষুষে ক্ষুধা রোগিনী ঠিকমত খায় তবুও শরীর ক্রমশঃ শুকিয়ে যায়। স্তন শুকিয়ে চুপসে যায়, গরম সহ্য করতে পারেনা, ডিম্বকোষ, জরায়ুর রোগে ভোগে ইত্যাদির কারনে নারী সন্তান জন্মদানে অসমর্থ হলে আয়োডিয়াম (Iodium) উপযোগী।

নেট্রাম কার্ব (Natrum Carb): বীর্য নারীর জরায়ুতে না গিয়ে বের হয়ে যাওয়ার কারনে সন্তান জন্মদানে অসমর্থ হলে নেট্রাম কার্ব (Natrum Carb) ফলপ্রসূ।

মেডােরিনাম (Medorrhinum): গনােরিয়ায় আক্রান্ত স্ত্রীদের কুচিকিৎসায় স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে ডিম্বকোষে বেদনা, ডিম্বাশয় ব্যথা, বাম দিকে বেশি, বা ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাশয় পর্যন্ত, ঋতু চক্র বা মাসিকের গন্ডগােল, রতিশক্তি বা কামােদ্দিপনা মােটেই থাকে না, মুখমন্ডল মােমের ন্যায় সাদা রক্তহীন হয়ে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয় তাদের বন্ধাত্ব রােগে এই ঔষধ কার্যকরী।

সিপিয়া (Sepia): স্বামী, সংসারের প্রতি উদাসীন, আপন জনের প্রতি অযত্ন ও অবঙ্গা, শান্ত, ভীরু, অলস্, কাজ-কর্মে অনিচ্ছা, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, শীতকাতর। টক, ঝাল খেতে পছন্দ করে, সবুজ বা শ্বেত প্রদর স্রাবে যোনিদ্বার হাজিয়া যায় চুলকায় ফুলে উঠে, সহবাসের সময় যোনি ব্যথা সহ অতিরিক্ত শুষ্ক, তল পেটে একটি ভারী বস্তু যা যােনী পথ দিয়ে বের হয়ে আসবে বলে মনে করে, জরায়ুর বৃদ্ধি, স্থানিচুতি ও ঝুলে পড়ে তথায় জ্বালা যন্ত্রণা হয়, যার জন্য পায়ের উপর পা রেখে চেপে বসে এরূপ নারীর বন্ধ্যাত্বে সিপিয়া (Sepia) কার্যকরী।

কোনিয়াম (Conium): বন্ধ্যাত্বের উৎকৃষ্ট ঔষধ। ডিম্বকোষের ক্ষীণতার জন্য বন্ধ্যাত্ব। নারীর অনিয়মিত মাসিক,মাসিক কম,মাসিকের সময় স্তনে বেদনা, জরায়ু ও ডিম্বাকোষ পীড়াগ্রস্থ নারীর মাথা ঘোরা এই লক্ষণ সমষ্টি যে নারীর মধ্যে পাওয়া যায় তার জন্য উপযোগী।

হেলোনিয়াস ডায়োইকা (Helonias Dioica): নির্দিষ্ট সময়ের আগে অত্যন্ত বেশী পরিমাণে স্রাব হয়। রক্তস্রাব হয়ে জরায়ু দুর্বল। প্রস্রাব প্রচুর, স্বচ্ছ ও শর্করাযুক্ত (ডায়াবেটিস), অত্যন্ত তৃষ্ণা, অস্থিরতা, দেহ শুকিয়ে যায়, খিটখিটে ভাব, সঙ্গম শক্তি লোপ, জরায়ুর স্থানচ্যুতি, জরায়ু গ্রীবায় ক্ষত, প্রচুর রজঃস্রাব সহ বন্ধ্যাত্ব।

বোরাক্স (Borax): সামান্য শব্দেও চমকে উঠা বোরাক্সের প্রধান লক্ষণ। সব সময় নিচে পড়ে যাওয়ার আশংকা করে। যানবাহনে, পাহাড়ে, সিঁড়িতে উঠতেও ভয়। এসিড স্রাবের কারণে নারীদের বন্ধ্যাত্বের জন্য উকৃষ্ট ওষুধ। এসিড স্রাবের কারনে শুক্রানু ক্ষতিগ্রস্থ হয় বা মারা যায়। প্রচুর স্রাব, ডিমের সাদা অংশের মত এবং উষ্ণ।

বন্ধ্যাত্ব রোগের বায়োকেমিক চিকিৎসা
স্বামী স্ত্রীর যৌনতন্ত্রে কোন গােলমাল না থাকা সত্ত্বেও সন্তান না হলে, মাসিক শেষে মহিলাদের ক্যালকেরিয়া কার্ব (Calcarea Carb) ৩০, প্রতি ৩ দিন অন্তর ১ মাত্রা করে ২/১ মাস খাওয়ালে এই দোষ কেটে যাবে।

প্রস্রাবে, স্রাবে অত্যাধিক এসিড হওয়ার কারণে গর্ভধারণ না করলে ন্যাট্রাম ফস (Natrum Phos) ৬x হইতে উচ্চ শক্তি ২/৩ বড়ি দিনে ২ বার ব্যবহারে সুফল পাওয়া যায়। এছাড়াও স্রাব হলুদ,পাতলা,অম্ল / টক গন্ধ যুক্ত ঘ্রানে বমি আসে এমন লক্ষনে ন্যাট্রাম ফস (Natrum Phos)।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২০ নভেম্বর ২০২৩, ৫:৩২ অপরাহ্ণ ৫:৩২ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ