ক্যাটেগরীজ: সারাদেশ

কক্সবাজারে এইডসে আক্রান্ত ৭১০

কক্সবাজারে এইচআইভি (এইডস) ভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগ। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত এইডস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১০ জন যার মধ্যে ৬১২ জনই রোহিঙ্গা। আর সব মিলিয়ে মারা গেছেন ১১৮ জন। জুন মাসেই শুধু এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন।

গেলো সোমবার (২৫ জুলাই) কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ৭১০ জনের মধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছে ৫০৫ জন ও উখিয়া হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে ২০৫ জন। এদের মধ্যে ৬১২ জন রোহিঙ্গা, বাকি ৯৮ জন স্থানীয় নাগরিক। আর মারা যাওয়া ১১৮ জনের মধ্যে ৬১ রোহিঙ্গা এবং ৫৭ জন স্থানীয় বাসিন্দা।

জানা গেছে, এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোহিঙ্গার সংখ্যা বেশি। রোহিঙ্গাদের অসচেতনতার কারণে তাদের কাছ থেকে এ রোগ কক্সবাজারের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাফেরার কারণে এ রোগের সংখ্যা কক্সবাজারে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা তরুণীর যাতায়াত। আর এ কারণে এই রোগটি এখানে ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করছেন অনেকেই।

এছাড়াও পর্যটন শহর হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা আয়ের উদ্দেশ্যে যৌনকর্মীদের ব্যাপকহারে কক্সবাজার আগমন ও এইডস বিস্তারের আরেকটি অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তালিকায় শুধু যুবক যুবতী নয় আছে শিশুও। কারণ, কোনোভাবে এই ভাইরাস তাদের শরীরে গেছে। ভাসমান যৌনকর্মী ছাড়াও প্রবাসী অনেকেই এইডস আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরছেন।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রোহিঙ্গারা পুরো কক্সবাজার এলাকা জুড়ে রয়েছে।ফলে তাদের সঙ্গে স্থানীয়দের মেলামেশা হচ্ছে। এমনকি যৌন সম্পর্কেও জড়াচ্ছে অনেকে। এছাড়াও কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় শত শত রোহিঙ্গা নারীদের অবাধ বিচরণ। যদি সচেতনতা অবলম্বন ও যৌনকর্ম থেকে বিরত থাকা যায় তবে এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান জানান, বিশ্ব এখন রোহিঙ্গাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি তাদের সুন্দর স্বাস্থ্য সুরক্ষার। রোহিঙ্গা আসার আগে তেমন এই রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল না। রোহিঙ্গাদের কাছে এইচআইভি রোগের প্রাদুর্ভাব থাকার কারণে ও তাদের অবাধ মেলামেশা ও এক জায়গা বেশি সংখ্যক জনবল হওয়ার কারণে এইচআইভি ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ রোগটি দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ছে। যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের আলাদা না করার কারণে এ রোগ আরও ব্যাপকভাবে ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের আলাদা রাখতে হবে। তাদের যদি আলাদা করা না হয় তবে দেশের জন্য এটি বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তবে এ নিয়ে জাতীয় এইডস এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এইডস-এসটিডি) কাজ করছে। এ প্রোগ্রামে এটিকে আমরা বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছি। এ চ্যালেঞ্জে রয়েছে- আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের চিকিৎসা প্রদান করা এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২৬ জুলাই ২০২২, ৭:০৫ অপরাহ্ণ ৭:০৫ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ