রাজনীতি

‘অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন হেফাজত নেতারা’

হেফাজতে ইসলামের সদ্যোবিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ও অর্থ সম্পাদক মনির হোসেন কাসেমী মাদরাসার শিক্ষার্থী ও রোহিঙ্গাদের অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মানবিক সহায়তার কথা বলে প্রাবাসীদের কাছ থেকে এই টাকা সংগ্রহ করেন হেফাজত নেতারা। তবে শিক্ষার্থী বা রোহিঙ্গাদের না দিয়ে ওই অনুদান নিজেরাই তছরুপ করেছেন।

মামুনুলের ব্যাংক হিসাবে ছয় কোটি টাকার লেনদেনসহ আর্থিক জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ ছাড়া সাম্প্রতিক নাশকতায় হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতার সম্পৃক্ততা পেয়েছেন তদন্তকারীরা। কয়েকটি মামলার তদন্তও এখন শেষ পর্যায়ে। গতকাল রবিবার ডিবি কার্যালয়ে যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম তদন্তের অগ্রগতি জানাতে গিয়ে এসব তথ্য দিয়েছেন।

ডিবির এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমপ্রতি হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে অনেক মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে।

এর মধ্যে হেফাজতের আর্থিক বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করছি।’ তিনি জানান, মামুনুল হকের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন ছাড়াও সমপ্রতি গ্রেপ্তার করা হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির অর্থ সম্পাদক মনির হোসেন কাসেমীর বেশ কিছু হিসাবের খোঁজ পাওয়া গেছে। সেগুলোরও তদন্ত চলছে।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম আরো বলেন, প্রবাসীরা মাদরাসা বা মাদরাসা-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কাজে হেফাজতের কাছে দান করে থাকেন। রোহিঙ্গাদের জন্যও তাঁরা দান করেন। এ ছাড়া হেফাজতের জন্যও কিছু কিছু টাকা বিদেশ থেকে আসে। এই টাকাগুলো বিদেশ থেকে আসার পর সেগুলো নেতারা সঠিকভাবে ব্যবহার করতেন না।

তাঁদের নিজের ইচ্ছামতো টাকাগুলো নেওয়ার পর খরচ করতেন। তাঁরা এই টাকাগুলো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করেছেন। রোহিঙ্গাদের টাকাও হেফাজত নিজেদের কাজে ব্যবহার করত। বিপুল পরিমাণ টাকা তাঁরা তছরুপ করেছেন। টাকাগুলো দিয়ে হেফাজত নেতারা নিজেদের বাড়ি-গাড়ি করেছেন।

তদন্তের বরাত দিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, মাদরাসার সংগঠন বেফাক বা হায়াতুল উলয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন; কিন্তু এসব সংগঠনও হেফাজতের কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে।

ফলে এসব সংগঠন তাদের সঠিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এ ধরনের অর্থ যাদের হাতে চলে যাচ্ছে বা অর্থের নিয়ন্ত্রক যারা তারাই রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। আবার ক্ষেত্রবিশেষে তারাই এই টাকাগুলোর মালিক হচ্ছে। এসব বিষয়ে আলাদা মামলা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

মাহবুব আলম বলেন, ‘২০১৩ সালের ১৪টি মামলা আমরা তদন্ত করছি। এ ছাড়া নতুন বেশ কয়েকটি মামলা আমরা পেয়েছি।’ খুব দ্রুতই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান তিনি।

নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচি থেকে নাশকতার পর সোনারগাঁয় নারীসহ আটক হয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন হেফাজত নেতা মামুনুল হক। পরে পুলিশ পুরনো একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৩১ মে ২০২১, ৫:৪৮ অপরাহ্ণ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ