আন্তর্জাতিক

২৪ ঘণ্টাই দিন, কিভাবে রোজা রাখেন তারা

চলতি রমজানের মধ্যেই নতুন একটি চাকরিতে যোগদান করবেন ৩৪ বছর বয়সী সোফি ক্লাউজার দার। ডেনমার্কের এই বাসিন্দা চিন্তায় আছেন কিভাবে নতুন চাকরিতে গিয়ে ১৭ ঘণ্টা রোজা পালন করবেন। স্ক্যান্ডেনেভিয়া অঞ্চলের দেশটিতে এখন ১৭ ঘণ্টা লম্বা দিন হয়। এত দীর্ঘ সময় রোজা রাখতে হয় ডেনিশ মুসলমানদের।

একটি বেবি কেয়ার সেন্টারে চাকরি শুরু করবেন সোফি। নওমুসলিম এই নারীকে সেখানে বাচ্চাদের দেখাশোনার কাজ করতে হবে। দেশটিতে রাত এতই ছোট এখন যে রাতের কাজগুলো ঠিক মতো করাও কষ্টকর। সোফি বলেন, রাতের খাবার ও সেহেরী খাওয়া, মাগরিব, এশা ও তারাবির নামাজ- এতসব কাজের জন্য রাত খুবই ছোট। সময় দ্রুতই শেষ হয়ে যায় এখানে। রাতে ঘুমানোর সময়ই পাওয়া যায় না।

শুধু ডেনমার্ক নয়, স্ক্যান্ডেনেভিয়া অঞ্চলের আরো কয়েকটি দেশেও একই চিত্র। নরওয়ে, আইসল্যান্ডের মুসলমানরাও রোজা রাখা নিয়ে এই সমস্যার মুখোমুখী। এই অঞ্চলটিতে এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে বছরের এই সময়টাতে সূর্যই অস্ত যায় না। আর্কটিক সাগরে নরওয়ের এসভালবার্ড দ্বীপমালা তেমনি একটি অঞ্চল। এপ্রিল থেকে আগস্ট- বছরের এই সময়টাতে ২৪ ঘণ্টাই দিন থাকে সেখানে। এছাড়া নরওয়ের মূল ভূখণ্ডের ট্রোমসো শহরের অবস্থাও একই।

এই রকম অঞ্চল যেখানে ‘মধ্যরাতের সূর্য’ও দেখা যায় না তারা কিভাবে রোজা রাখবেন। কিভাবে সেহেরী ও ইফতার করবেন বিষয়টি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে তাদের জন্য তিনিটি অপশন রয়েছে বলে জানান নরওয়ের রাজধানী অসলোর একটি মসজিদের ইমাম ও মুসলিম স্কলার অসিম মোহাম্মাদ। তিনি বলেন, যে অঞ্চলে সূর্য ডোবেই না, তারা হয়তো নিকটস্থ শহরের সূর্যদয় ও সূর্যাস্ত দেখে রোজা রাখা ও ইফতার করতে পারেন। কিংবা মুসলিমদের কেবলার নগরী মক্কার সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে অথবা তাদের এলাকায় কিছুদিন আগে যখন সূর্যাস্ত হত সেই সময় হিসাব করে করতে পারেন।

এই ইমাম জানান, তার আশাপাশের অনেকেই রমজান মাসে চাকরি থেকে ছুটি নেয়ার চিন্তা করছেন। কারণ ১৭ ঘণ্টার বেশি রোজা রেখে চাকরি করা কঠিন। তিনি বলেন, অবশ্য চাকরিতে কাজের ধরনের ওপর এটি অনেকটা নির্ভরশীল। যারা অফিসের অভ্যন্তরে ডেক্স জব করে। এয়ার কন্ডিশনারের ভেতর তাদের খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে যারা এই গরম আবহাওয়ায় বাইরে কাজ করেন তাদের জন্য কঠিন।

গরমে দীর্ঘক্ষণ রোজ রাখতে গিয়ে অনেকেই পানিশূন্যতা, ক্লান্তিসহ অনেকভাবে অসুস্থ বোধ করতে পারেন। এই পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সোফি দার বলেন, রাত এত ছোট যে পরের দিন রোজা রেখে সুস্থ্য থাকার মতো পর্যাপ্ত পানি ও খাবার গ্রহণ করা হয় না। যে কারণে রোজা রাখা সত্যিই কঠিন। রাত ছোট হওয়ার কারণে ঘুম হয় না বললেই চলে সেটিও রোজাদারদের জন্য কষ্টকর। ধরুন আমার বাচ্চাকে সকাল আটটায় স্কুলে দিয়ে আসতে হয় কাজেই বিষয়টি কঠিন। তবে কয়েকদিন গেলে তখন রোজার একই কষ্টে অভ্যস্ত হয়ে যান বলে জানান এই মুসলিম নারী। তখন আর কষ্ট অনুভব হয়না।

নরওয়েতে গ্রীষ্ম কিংবা বসন্তের দিকে দিন বড় হয়; কিন্তু শীতে এই চিত্রটা একদমই উল্টো। তাই যখন শীতে রোজ হয় তখন তাদের জন্যে সেটি খুবই সহজ হয়ে যায়। ইমাম মোহাম্মদ বলেন, নরওয়েতে গ্রীষ্ম ও শীতে দিন-রাতের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য। ডিসেম্বরের শীতে সোয়া তিনটার মধ্যেই সূর্য ডোবে। যে কারণে শীতে রোজা রাখতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে সবাই।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৯ মে ২০১৯, ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ