সোশ্যাল মিডিয়া

মুহাম্মদ আলী বক্সার না হলে একজন ইমাম হতেন: মেয়ে মারিয়াম

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় মরহুম বক্সার মুহাম্মদ আলীর মেয়ে মারিয়াম আলী বলেছেন, তার পিতা জীবিত থাকলে বর্তমানে আমেরিকান সমাজের মধ্যকার বিভক্তি দেখে মোটেও অবাক হতেন না। বর্ণবাদ কোনো নতুন কিছু নয়। একদল আরেক দলের চেয়ে বড় এই ধারণা নতুন কোনো আবিষ্কার নয়। তার পিতা ঠিক এরকম বিশ্বেই বসবাস করতেন যেখানে তিনি প্রতিনিয়ত এসব ঘৃণামূলক আক্রমণের শিকার হতেন। চূড়ান্তভাবে তিনি জানতেন- ‘সৃষ্টিকর্তা আপনার কর্ম দ্বারাই আপনার বিচার করবেন।’

মুহাম্মদ আলীর বড় মেয়ে মারিয়াম আলী আরও বলেন, ‘তিনি শুধু অপ্রতিরোধ্যই ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক মানুষ।’ ‘তিনি জীবিত থাকলে বলতেন, জনগণকে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঘুরে দাঁড়াতে হবে এবং এভাবে তাদের জীবনকে আরও সুন্দর করা যায়। তিনি শুধুমাত্র সৃষ্টিকর্তাকেই ভয় পাওয়ার জন্য আহ্বান জানাতেন এছাড়া অন্য কাউকে নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও নয়। কোনোভাবেই শ্বেতাঙ্গদের বড়ত্ব মেনে নিও না। তারা আমাদের চাইতে শক্তিশালী নয়।’

মুহাম্মদ আলীর বড় মেয়ে মারিয়াম আলী যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে বসবাস করেন। চলতি মাসের ১০ তারিখে ‘Islamic Speakers Bureau of Atlanta’ এর বার্ষিক সভায় আমন্ত্রিত মারিয়াম আলী এসব কথা বলেন। মারিয়াম আলী একজন সমাজকর্মী হিসেবে তরুণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য অলাভজনক সংস্থা ‘DMTL’ প্রতিষ্ঠা করেন।

মারিয়াম আলী জানান, তিনি এবং তার পিতা মুহাম্মদ আলী যিনি ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন সবসময় জীবন এবং আধ্যাত্মিকতা নিয়ে গভীর আলোচনা করতেন। তার পিতার সাথে তার এসব আলোচনা এখন তার কাছে গুপ্তধনের মতই দামী বলে মনে হয়।
মারিয়াম আলী’র ভাষায় মুহাম্মদ আলী ছিলেন- ‘খুবই মজার একজন মানুষ, তিনি ছিলেন একজন স্পষ্টবাদী মানুষ, তিনি ছিলেন একজন দাতা, তিনি গভীর ভাবে আধ্যাত্মিক একজন মানুষ ছিলেন।’

মারিয়াম আলী বলেন, ‘পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত হয়ে মুহাম্মদ আলী তার জীবনের শেষ কয়েক বছরে বাকরুদ্ধ ছিলেন। যখন কথা বলতে পারতেন তিনি তার প্রতিবাদের ভাষার মাধ্যমে অনেক কিছুই করেছিলেন।’ ‘একজন ক্রীড়াবিদ থেকে একজন আধ্যাত্মিক মানুষে পরিণত হওয়া নিয়ে তিনি লোকজনের সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতেন না। তিনি শুধুমাত্র সঠিক কাজটাই করতেন।’ মুহাম্মদ আলী জানতেন বিশ্বের সকল মানুষ তাকে ভালোবাসে। তিনি বলেছিলেন- ‘আমি তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছি, তাহলে কেন আমি আমার ধর্মীয় বিশ্বাসে আমি সৎ থাকবো না?’

একদিন রাতের বেলা মারিয়াম আলী তার পিতা মুহাম্মদ আলীর সাথে গাড়ি করে কোথাও যাচ্ছিলেন। তখন তিনি হঠাৎ করেই দেখতে পেলেন দুজন লোকের মধ্যে তুমুল মারামারি হচ্ছে। মুহাম্মদ আলী তাদের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং তিনি সত্যিকারের মুহাম্মদ আলীর মত করেই কথা বলা শুরু করে দিলেন। তিনি তাদের জানালেন যে, তিনিই মুহাম্মদ আলী, দ্যা গ্রেটেস্ট। তিনি তার বাহু উঁচু করলেন এবং বক্সিং খেলার মত করে ভঙ্গি করলেন। তিনি তাদের বললেন যে, তারা তার সাথে যুদ্ধ করতে চায় কিনা।

কিছু সময় পরেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়ে গেল ঝগড়ায় লিপ্ত দুজন স্বাভাবিক হয়ে গেল এবং তারা আনন্দের সাথে মুহাম্মদ আলীর সাথে কৌতুকে মেতে উঠেছিল। মারিয়াম আলী বলেন, ‘যদি তিনি বক্সার না হতেন তবে আমার মতে তিনি একজন ইমাম হতেন। তিনি মানুষের জন্য নিজেকে অনেক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির ঠেলে দিয়েছিলেন এবং তিনি এরকমই ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, সকলের জীবনই গুরুত্বপূর্ণ।’- মারিয়াম আলী শেষে এমনটি জানান।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১২:০৭ অপরাহ্ণ ১২:০৭ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ