কুরআনুল কারিমের সবচেয়ে বড় ও দ্বিতীয় সুরা হলো সুরা বাকারা। আর তার পরবর্তী তৃতীয় সুরা হলো সুরা আল-ইমরান। সুরা বাকারার পর কেন সুরা আল-ইমরানকে কুরআনে সন্নিবেশিত করা হল?
তত্ত্ব তথ্যগত দিকগুলোর বিবেচনায় যে সব ঘটনা সুরা আল-ইমরানে আলোচিত হয়েছে, তার সঙ্গে সুরা বাকারার রয়েছে রয়েছে চমৎকার মিল। এ সুরার মিলগুলো আল্লাহর প্রতি মানুষের বিশ্বাসকে আরো বাড়িয়ে দেয়। ফলে মানুষের ঈমান হয়ে ওঠে সুদৃঢ় ও মজবুত।
বিভিন্ন তাফসিরের আলোকে এ দুটি সুরার যে তত্ত্ব ও তথ্যের মিলগুলো ওঠে এসেছে, তার উল্লেখযোগ্য কিছু হলো-
- সুরা বাকারায় আল্লাহ তাআলা তার তাওহিদ তথা একত্ববাদের সত্যতার ওপর প্রমাণ পেশ করেছেন। আর সুরা আল-ইমরানে তার একত্ববাদ সম্পর্কে সব সন্দেহ দূর করা হয়েছে।
- সুরা বাকারায় মানব জাতির সৃষ্টির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আর সুরা আল-ইমরানে মানুষকে তার মাতৃগর্ভে আকৃতি দানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
- সুরা বাকারায় হজরত আদম আলাইহিস সালামের সৃষ্টির ইতিকথা বর্ণিত হয়েছে। আর সুরা আল-ইমরানে আদম সন্তানদের সৃষ্টির কথা বর্ণিত হয়েছে।
- সুরা বাকারার শুরুতে আল্লাহ তাআলা পিতামাতা ছাড়া মানুষ সৃষ্টির দৃষ্টান্তস্বরূপ হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টির বর্ণনা দিয়েছেন। আর সুরা আল-ইমরানের শুরুতেও পিতা ছাড়া মায়ের পেটে সন্তান সৃষ্টির দৃষ্টান্তস্বরূপ হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের সৃষ্টির বর্ণনা তুলে ধরে সৃষ্টির ধারাবাহিকতা তুলে ধরেছেন।
- সুরা বাকারায় হজরত আদম আলাইহিস সালামের উল্লেখ বিশেষভাবে করা হয়েছে, কেননা এটি কুরআনের ভূমিকা সুরা ফাতেহার পর প্রথম সুরা আর হজরত আদম আলাইহিস সালাম প্রথম মানুষ ও আদি পিতা।
আর সুরা আল-ইমরানে হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের ঘটনা বুঝাতে আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলালাইহিস সালামের ঘটনার দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। তাই প্রথমে সুরা বাকারায় তার বর্ণনা করা হয়েছে।
- সুরা বাকারায় দোজখের বিবরণ দেয়া হয়েছে এভাবে যে, দোজখ কাফেরদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আর সুরা আল-ইমরানে বেহেশতের বিবরণ এভাবে দেয়া হয়েছে, সেই জান্নাত, যার প্রশস্ত হলো আসমান-জমিনের সমান। যা তৈরি করা হয়েছে পরহেজগারদের জন্য।
- সুরা বাকারা শুরু করা হয়েছে মুক্তাকি বা পরহেজগার লোকের বিবরণ দ্বারা আর তারাই যে সফলকাম হবে একথাও ঘোষণা করা হয়েছে। ঠিক এমনিভাবে সুরা আল-ইমরানের উপসংহারে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা আল্লাহকে ভয় করতে থাক হয়তো তোমরা সফলকাম হবে।
অর্থাৎ আল্লাহর ভয় যার অন্তরে থাকবে, যে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে জীবন-যাপন করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে জীবন সাধনায় সাফল্য দান করবেন। অতএব জীবন সংগ্রামে সাফল্যের জন্য আল্লাহর ভয় হলো পূর্বশর্ত। উভয় সুরাতেই বিষয়টির ঘোষণা এসেছে।
সুতরাং সুরা বাকারার তাওহিদের ঘোষণা ও শিক্ষাকে সন্দেহাতীতভাবে পালনে সুরা আল-ইমরান যথাযথভাবে অধ্যয়ন করা জরুরি। এ কারণেই এ সুরা দুটিকে আলোকময় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনুল কারিমের ধারাবাহিক অধ্যয়নের অগ্রযাত্রায় সুরা আল-ইমরানের অধ্যয়নে নিজেদের সম্পৃক্ত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৪ নভেম্বর ২০১৮, ১:০৪ অপরাহ্ণ ১:০৪ অপরাহ্ণ
মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…
ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…
বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…