হতাশায় পোল্ট্রি খামারিরা, ফুলছে ওষুধ কোম্পানি

অস্তিত্ব সংকটে দেশের পোল্ট্রি শিল্প। খামারি, ওষুধ কোম্পানি, ব্যবসায়ী- কারও জন্যই তেমন কোন নীতিমালা নেই। যা আছে, তাও মানছেন না কেউ। এতে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফুলে ফেঁপে উঠছে ওষুধ কোম্পানি ও ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে অন্ধকার ভবিষ্যত যেন হাতছানি দিচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বড় শিল্পটিকে।

নব্বইয়ের দশকে বিনিয়োগ ছিলো এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।আর ২০২০-২১ সালে প্রয়োজন ৫৫-৬০ হাজার কোটি টাকা। ভোক্তাদের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে খাতের পরিধি। পরিণত হয়েছে, দেশের দ্বিতীয় বড় শিল্পে। আছে অপার সম্ভাবনাও।

এখন পর্যন্ত এ শিল্পে নিয়োজিত ৬০ লাখ মানুষ, যার প্রায় ৪০ ভাগ নারী। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি- ১৫ শতাংশ। জিডিপিতে পোল্ট্রি খাতের অবদান- ২.৪ শতাংশ। তবে, খাতটি বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জটিলতা।

খামারিরা বলছেন, মুরগির বাচ্চা ওঠানোর পর থেকে শেষ সময় পর্যন্ত অতি মাত্রায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া বাচ্চা বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের হাতে অন্য কোনও উপায় থাকে না। আর এটা করতে গিয়ে বড় অংকের অর্থও চলে যায়।

তারা বলছেন, বর্তমানে মুরগি ব্যবসায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। দারুণ সম্ভাবনাময় হওয়ায় পোল্ট্রি শিল্পকে ঘিরে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক পণ্যের বাজার, খাবার সরবরাহ, ওষুধ কোম্পানি ও মধ্যসত্ত্বভোগী।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর তার ৩০ শতাংশ মানুষ ভোগ করে। আর ৭০ শতাংশ এগ্রিকালচার ও পোল্ট্রি ফার্মে ব্যবহৃত হয়। সাধারণ খামারিরা বলছেন, সবাই ভালো থাকলেও যাদেরকে ঘিরে এত আয়োজন, তারাই হতাশায় ভুগছেন।

এক খামারি জানান, খাবারের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। লাভবান হচ্ছে ওষুধ কোম্পানিরা। এছাড়া বাচ্চার দাম বেশি নেয়া হচ্ছে। মুরগিকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি খাতটিকে গোছানোই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল- বিপিআইসিসি।

সংগঠনটির সভাপতি মশিউর রহমান বলেন, যারা বাচ্চা, খাবার ও ওষুধ বিক্রি করে, তাদের আবার টেকনিক্যাল সেবায় ডাক্তার আছে। আবার সরকারি পর্যায়েও কিছু ডাক্তার আছে। তারা বেশির ভাগ সময় ওষুধের কথা লিখতে গিয়ে এন্টিবায়োটিক দিয়ে দেন। তারা ভাবেন না- মুরগি বাঁচলো কি মরলো।

পরিসংখ্যান বলছে, এক দশক আগেও দেশের পোল্ট্রি খামারের সংখ্যা ছিলো প্রায় এক লাখ ২০ হাজার। বর্তমানে তা নেমে এসেছে, ৬০ হাজারে। তবে পণ্যের দামের ওঠা-নামার সঙ্গে সঙ্গে এই পরিসংখ্যানে কিছুটা তারতম্য হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মধ্যে একে আনতে না পারলে অন্ধকারে ডুবে যাবে খাতটি।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৩১ আগস্ট ২০১৮, ১:৫০ অপরাহ্ণ ১:৫০ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ