ভারত

আলোচিত তিন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড

বিশ্বের অনেক আলোচিত রাজনীতিক ও বিখ্যাত নেতা আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছেন। নিজেদের উৎসর্গ করেছেন দেশ ও জাতির কল্যাণে। বিশ্বের আলোচিত তিন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে লিখেছেন সালমান রিয়াজ।

* বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড বাঙালির ইতিহাসে এক নির্মম ট্র্যাজেডি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরের সূর্য আলো ছড়িয়ে দেয়ার আগে এক নির্মম হত্যার শিকার হন বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের প্রায় সব সদস্য। পৃথিবীতে বহু নেতা রাজনৈতিক হত্যাকণ্ডের শিকার হয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, যা বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বিরল। সেনাবাহিনীর কিছু উচ্চাভিলাষী সদস্য বর্বর এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। শেখ মুজিব ছিলেন সাধারণ মানুষের হৃদয়ের সম্রাট। অবিসংবাদিত এ নেতা বিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত-নির্যাতিত জনতার মুক্তির ইতিহাসে কিংবদন্তি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এক ভাষণের মাধ্যমে জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো এ ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

* আব্রাহাম লিংকন: ১৮৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন ওয়াশিংটনের ফোর্ডস থিয়েটারে ‘আওয়ার আমেরিকান কাজিন’ নাটকের অভিনয় দেখছিলেন। রাত ১০টা ১৫ মিনিটে নাট্যাভিনেতা জন উইলকেস বোথ প্রেসিডেন্ট বক্সে ঢুকে পিস্তল দিয়ে লিংকনের মাথার পেছনে গুলি করেন। প্রেসিডেন্টকে বাঁচাতে সেনা কর্মকর্তা রাথবন এগিয়ে এলে তাকেও বোথ ছুরিকাঘাত করে লাফ দিয়ে মঞ্চে উঠে যান এবং পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তার সঙ্গে আরও তিন আততায়ী ছিল।

এর মধ্যে লিউইস পাওয়াল ও ডেভিড হেরোল্ডের দায়িত্ব ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম সিউয়ার্ডকে হত্যা করা। জর্জ এডজার্ডের দায়িত্ব ছিল ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসনকে হত্যা করার। তবে তাদের হত্যাচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে কনফেডারেট রাষ্ট্র তৎকালীন অস্বীকৃত উত্তর আমেরিকার সমর্থকদের ভূমিকা ছিল।

* মার্টিন লুথার কিং: কৃষ্ণাঙ্গদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করেছেন মার্টিন লুথার কিং। ১৯৫০ মধ্যবর্তী সময় থেকে আমৃত্যু তিনি ছিলেন আমেরিকান সিভিল রাইট মুভমেন্টের নেতা। বিখ্যাত ভাষণ, ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’। সর্বকনিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ নোবেলজয়ী হিসেবে ইতিহাসে তার নাম সবার আগে। ১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল।

মেমফিসে অবস্থিত লরাইন মোটেলে অবস্থান করছিলেন মার্টিন। মোটেলের ৩০৬ নম্বর কামরার বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জেমস আর্ল রে নামের শ্বেতাঙ্গ উগ্রবাদী যুবকের গুলিতে নিহত হন তিনি। বুলেটটি তার ডান গাল ভেদ করে স্পাইনাল কর্ড হয়ে ঘাড়ের শিরা ছিঁড়ে ফেলে। রাত ৭টা ৫ মিনিটে সেন্ট জোসেফ হাসপাতালে তিনি মারা যান। হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই মাস পর লন্ডন হিথরো এয়ারপোর্টে জেমস ধরা পড়ে। হত্যার দায়ে তার ৯৯ বছরের কারাদণ্ড হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় ১৯৯৮ সালে।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৫ আগস্ট ২০১৮, ২:০৪ অপরাহ্ণ ২:০৪ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ