ভারত

পুলিশের অবস্থা, একজনে গাজা খাচ্ছে আরেকজন পকেট মারতেছে

জমিদারি আমলে জমিদার ও তাঁর নায়েব-গোমস্তারা যা খুশি করতেন। যাঁকে ধরে আনতে বলা হতো, তাঁকে বেঁধে আনতেন। জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদ হলেও পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্যের মধ্যে সেই জমিদারি চালচলন এখনো রয়ে গেছে বলে প্রতীয়মান হয়।

আইন রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এই ব্যক্তিরা আইন লঙ্ঘনকেই অবশ্যকর্তব্য বলে মনে করেন এবং চাঁদাবাজি, নির্যাতন, হয়রানি ও জিনিসপত্র নিয়ে দাম না দেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছেন লাগামহীনভাবে।

সরকারের শেষ সময়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মতো একশ্রেণীর পুলিশ সদস্যও যে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন, প্রতিদিনের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত খবরই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

সাভারের আমিনবাজারে অপরাধ দমনের জন্য বসানো হয়েছিল একটি পুলিশ ক্যাম্প। ক্যাম্পটি সাভার মডেল থানার অন্তর্গত। এটি দায়িত্বশীলতার মডেল না হয়ে হয়ে উঠেছিল দুর্বৃত্তপনার আখড়া। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও যখন ফল পাওয়া যায়নি,

তখন রুখে দাঁড়িয়ে পুলিশের গুমর ফাঁস করে দিয়েছেন এলাকাবাসী। বহুদিন ধরে ক্যাম্পটির কর্মকর্তারা স্থানীয় বাজার থেকে জিনিসপত্র কিনে দাম না দেওয়া, লোকজনকে থানায় ধরে নিয়ে প্রহার,

মামলার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় ও শিশু-কিশোরদের আটক করে অর্থের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়াকে মোটামুটি নিয়মে পরিণত করে ফেলেছিলেন। অবশেষে উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে গত সোমবার বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্যাম্প ঘেরাও করে এর প্রতিকার চান।

জনবিক্ষোভ ও গণমাধ্যমের চাপে অবশেষে ওই দিন রাত ১২টার দিকে ক্যাম্পের ২৩ জন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়। যাঁদের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ, তাঁদের ক্যাম্প থেকে প্রত্যাহার করাই কি একমাত্র শাস্তি?

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও সেবা খাতগুলোর মধ্যে পুলিশ বিভাগ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে উল্লেখ করেছে।

সোমবার সকালে মহাসড়কে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে সাভার মডেল থানার সহকারী পুলিশ সুপার অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ক্যাম্প থেকে প্রত্যাহার ও শাস্তিদানের প্রতিশ্রুতি দিলেও সময়মতো তা রক্ষা করা হয়নি। যারা জেগে ঘুমায়, তাদের ঘুম ভাঙানোর উপায় কী?

দুর্ভাগ্যজনক যে, প্রত্যাহারের নামে শেষ পর্যন্ত দুর্বৃত্ত পুলিশ সদস্যদের রক্ষার চেষ্টাই করেছে পুলিশ প্রশাসন। প্রশ্ন হলো, পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অন্যায় আচরণকে এভাবে প্রশ্রয় দিলে অপরাধ দমন হবে কীভাবে? রক্ষক যখন ভক্ষক হয়, তখন জনতাই প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসে।

বিষয়টির তদন্ত চলছে। আমরা আশা করব, দোষী পুলিশ সদস্যদের এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে করে পুলিশ বাহিনীর ভেতরে অন্যায় কর্মকাণ্ড জবাবদিহির আওতায় আসে। নইলে পুলিশ বাহিনীর প্রতি জনগণের ন্যূনতম আস্থাও থাকবে না।

সূত্রঃ প্রথম আলো

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৬ জুন ২০১৮, ১০:০৩ অপরাহ্ণ ১০:০৩ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ