রেসিপি

তাজিনের স্বামীরা কোথায়? মানুষ কী এতই পর হয়!

তাজিনের স্বামীরা কোথায়- দাম্পত্য জীবনেও খুব একটা সুখী হতে পারেননি প্রয়াত অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। প্রথম জীবনে তাজিন আহমেদ ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন নাট্য নির্মাতা এজাজ মুন্নাকে।

বেশিদিন টেকেনি সেই সংসার। এরপর তিনি বিয়ে করেন মিউজিশিয়ান রুমি রহমানকে। এই সংসারেও হয়তো ঝামেলা ছিল। জীবন প্রদীপ নিভে যাবার আগে দ্বিতীয় স্বামীকেও পাশে পেলেন না তাজিন।

ফেসবুকে তাঁর শেষ স্ট্যাটাসগুলো দেখলে সেটা অনেকটা বোঝাও যায়। প্রায়ই তিনি রুমির সঙ্গের ছবি শেয়ার করতেন। জীবনের সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলো স্বরণ করতেন। কিন্তু কোথায় এই দুই স্বামী?

মানবতা কী এমনই? জানাজা ও দাফনের সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর সহকর্মীরা। কিন্তু দুই স্বামীর কোন খোঁজ নেই। একটিবারও আসেননি মুখখানা শেষবারের মতো দেখতে। মানুষ কী এতই পর হয়ে যেতে পারে? এতই নিষ্ঠুর হতে পারে?

অবশ্য তাজিনই হয়তো চলে যেতে চেয়েছিলেন। শেষ জীবনে পরিবার-পরিজন থেকে নিজেকে আড়ালে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অভিনয় জগতের প্রিয় অঙ্গনের সঙ্গেও ছিল দূরত্ব।

অল্প কিছু প্রিয় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হলেও সেটা মুঠোফোন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ ছিল। বেশ নীরবে নিভৃতেই কেটেছে তার শেষ দিনগুলো।

সেগুলো যে বিষাদময়, যাতনাময় ছিল তার প্রমাণ দেয় তাজিনের ফেসবুক স্ট্যাটাসগুলো। তিনি সর্বশেষ শেয়ার করেছিলেন অঞ্জন দত্তের ‘ক্লান্ত আমি’ গানটি।

তাজিন বেঁচে গেছেন। ফুরিয়ে গেল স্বাধের জীবন! আর কোনো অনুভূতি জ্বলবে না, জ্বালাবে না! কাউকে প্রয়োজনও পড়বে না। কারও সঙ্গে রাগ-অভিমান-ঝগড়াও হবে না।

শেষ কয়েক বছর অবর্ণনীয় অর্থকষ্ট ও মানসিক বিষাদে ভুগছিলেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। তাজিনের মৃত্যুর পর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানান নির্মাতা মাহাদী হাসান সোমেন। তিনি তার স্ট্যাটাসে জানান, পাঁচশ টাকার অভাবে মায়ের জন্য খাবার কিনেও পাঠাতে পারতেন না তাজিন।

সোমেন তার স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘তাজিন আহমেদ। গত ৩টা বছর ধরে কি অমানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে দেখেছি তা অব্যক্ত। আজ কত কত মানুষ ঐ মৃত মুখটা দেখতে আসছেন, কিন্তু জীবিত অবস্থায় যদি একবারের জন্যও এই মানুষগুলো পাশে দাঁড়াতো তাহলে অন্তত এভাবে নীরবে চলে যেতে হত না।

পরপর ২টা চাকরি চলে গেল, কেউ ঐভাবে কাজেও ডাকতো না, মাঝে মাঝে ২ থেকে ৩ হাজার টাকার জন্য কত জনের কাছে হাত পেতেছেন, এই আমি তার সাক্ষী।

৫০০ টাকা হলে মায়ের জন্য কারাগারে খাবার পাঠানো যায়, সেই টাকাটাও থাকত না মাঝে মাঝে এই আমি তার সাক্ষী। আমাকে পাঠানো সর্বশেষ মেসেজ এখন কী করবা? আমি বুঝে উঠতে পারিনি। যেতে যেতেই অভিমানে বিদায়…।’

অন্যদিকে নির্মাতা অনিমেষ আইচও তার একটি স্ট্যাটাসে তাজিনের আর্থিক অবস্থা তুলে ধরেন। অনিমেষ আইচ লিখেন, ‘মরে গেলেই আহা…উহু! বেঁচে থাকতে কেউ পুছে না।

ঈদ নাটক মানেই সব টাকা দিয়ে একটা মোশাররফ করিম, জাহিদ হাসান, অপূর্ব এবং স্টার কাস্ট কিনতে হবে। মরে গিয়ে বেঁচে গেলেন তাজিন। একজন শিল্পির অপমৃত্যুর জন্য আমরাই দায়ী। সামনে অকালমৃত্যুর দীর্ঘ সারি।’

তাজিনের কাছের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর দুয়েক ধরে অর্থনৈতিকভাবে খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে ছিলেন তিনি। না ছিল চাকরি, না ছিল শুটিং। ধারণা করা হচ্ছে আর্থিক সঙ্কট, জেলবন্দী মা, স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব, হাতে কাজ না থাকা ইস্যুতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তাজিন।

২২ মে, উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট হাসপাতালে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তাজিন। এরপর থেকেই এই অভিনেত্রীর জীবনের অর্থনৈতিক টানাপড়নের বিষয়টি তার আশপাশে থাকা পরিচিত মানুষের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর বিভিন্ন পোস্টে প্রকাশ পায়

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ২৩ মে ২০১৮, ৬:৪৭ অপরাহ্ণ ৬:৪৭ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ