বিনোদন

তারাবিহ নামাজ কত রাকাআত পড়বেন?

পবিত্র রমজান মাস খায়ের ও বরকতের বসন্তকাল। রমজানের দিনে রোযা রাখাকে আল্লাহ তাআলা ফরজ করেছেন আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র যবানে রাতের “কিয়াম” যাকে কিয়ামে রমযান বা তারাবী বলে, সুন্নত বানিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

من قام رمضان ايمانا و احتسابا غفرله ماتقدم من ذنبه

অনুবাদ: যে ব্যক্তি ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে পরকালীন প্রতিদান কামনায় রমযান মাসের রাতে কিয়াম করবে(তারাবী পড়বে ইমাম নববী রহ: মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থে লিখেছেন) তার অতীত জীবনের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (বুখরী শরীফ ও মুসলিম)

তবে বিভিন্ন জনমতের কারণে তারাবীর নামাযকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাই রাখা হয়েছে, ফরজ করা হয়নি, কিন্তু এতে সন্দেহ নেই যে রমযানের উপকারিতা ও খায়ের বরকত পূর্ণরূপে লাভ করতে হলে তারাবী নামায পড়া জরুরী।

তারাবী নামায পড়ার দ্বারা রমযান ও কুরআনের হক আদায় হবে, রোযার উদ্দেশ্য তাকওয়া হাসিলে সাহায্য পাওয়া যাবে,আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমত ও মাগফিরাত, সর্বোপরি আল্লাহ তাআলার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জন করা যাবে। তাই আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দাদের জন্য উচিৎ তারাবীর প্রতি উদগ্রীব হয়ে থাকে ।

তারাবীর গুরুত্ব এ থেকে ও সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, সুন্নত ও নফলের সাধারণ নিয়মে জামাআত নিষিদ্ধ, অথচ তারাবী নামাযের জামাআত বিধিবদ্দ হয়েছে। তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে নিয়মতান্ত্রিকভাবে জামাআতের ব্যবস্থা এজন্যই করেননি যে, তা আবার উম্মতের উপর ফরজ হয়ে যায় কি না।

এ থেকে বোঝা যায়, তারাবীর মাকাম -মর্যাদা সাধারণ নফল নামায থেকে অনেক উর্দ্ধে। মোট কথা অনেক দলীলের ভিত্তিতে ফকীহগণ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, তারাবীর নামায অন্য সব নফলের মত নয়, বরং এটা না পড়লে গুনাহ হবে।

এর বিপক্ষের মিথ্যা প্রোপাগান্ডায় প্রভাবান্নিত হয়ে নিজেকে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। রমযানের রাতগুলোকে মহাসুযোগ মনে করে গুরুত্বের সাথে তারাবীর নামাযে যত্নবান থাকুন এবং শেষ রাতে ” তাহাজ্জুদ নামাযের ব্যপারে (যা সারা বছরের নামায) যতœবান হওয়ার চেষ্টা করুন।

তারাবীর পরিচয়

তারাবী আরবী শব্দ, যা তারবিহাতুন শব্দের বহু বচন। যার অর্থ হলো, আরাম, প্রশান্তি অর্জন ও বিরতী দেওয়া। রমজান মাসে এশার নামাযের পর বিতর নামাযের পূর্বে (অন্য মাসের) অতিরিক্ত যেই সুন্নত নামায পড়া হয় তাকে তারাবীর নামায বলা হয়। এই নামাযের নিয়ম হলো প্রতি দুই রাকাআত অন্তরন্ত সালাম ফিরানো হবে। এই নামায কে কিয়ামে রমজানও বলা হয়।

(তুহফাতুল আলমায়ী ২য় খন্ড, ২৮৯ পৃ:,কামুসুল ফিকহ ২য় খন্ড , ৪৪৮পৃ:, আলবাহরুর রায়েক:২য় খন্ড, ১১৬ পৃষ্ঠা।)

তাহাজ্জুদ নামায এর পরিচয়

বছরের প্রত্যেহ রাতের ঘুম থেকে উঠে, ঘুম ছেড়ে যেই নফল নামায পড়া হয় তাকে তাহাজ্জুদ নামায বলা হয়। এই নামাযের অপর নাম সালাতুল লাইল বা কিয়ামুল লাইল। (তুহফাতুল আলমায়ী ২য়খন্ড,২৮৯পৃষ্ঠা-কামুসুল ফিকহ ২য়খন্ড, ৫৪৭ পৃষ্ঠা)

তাহাজ্জুদ ও তারাবীর মাঝে পার্থক্য

তারাবী ও তাহাজ্জুদ দ্ুিট এক নামায নয় বরং দুটি ভিন্ন ভিন্ন নামায। এই দুই নামাযের মাঝে পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে পার্থকের কয়েকটি দিক উল্লেখ করা হলো।

১. তারাবীর নামাযের জন্য লোকদেরকে ডেকে জমায়েত করা (তাদায়ী) জায়েয আছে, কিন্তু তাহাজ্জুদের জন্য ডেকে জমায়েত করা জায়েয নেই।

২. তারাবীর নামাযের সময় হল এশার নামাযের পর বিতির নামাযের পূর্বে আর তাহাজ্জুদ নামাযের সময় নির্ধারিত নয়, উত্তম হলো ঘুমথেকে উঠে পড়া।

৩. মুহাদ্দিসগণ দুই নামাযের জন্য পৃথক পৃথক শিরোনাম ও অধ্যায় নির্বাচন করেছেন।

(মুসলিম শরীফ ) ৪. তাহাজ্জুদ নামায এক সময় ফরজ ছিল পরবর্তীতে তা ফরজ হওয়াটা রহিত হয়েগেছে, বিধায় তা পুনরায় ফরজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তারাবীর নামায ফরজ হওয়ার আশংকাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই দিন জামাতের সাথে পড়ে আর জামাতের সাথে পড়েননি।

৫.তাহাজ্জুদ নামায পড়ার নির্দেশ পবিত্র কুরআনে রয়েছে, অথচ তারাবীর নির্দেশ কুরআনে নেই বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ তাআলা রমজানের রোযাকে ফরয করেছেন আর আমি তোমাদের জন্য রমজানের কিয়াম অর্থাৎ তারাবীকে সুন্নত করলাম।

৬. তারাবীর নাম কিয়ামে রমজান আর তাহাজ্জুদের ভিন্ন নাম রয়েছে।

৭. তাহাজ্জুদ নামায মক্কা শরীফে আর তারাবীর নামায মদীনা শরীফে হিজরতের পর বিধিবদ্ধ হয়েছে।

৮. হাম্বলী মাযহাবের কিতাব “আল মুকান্নাআতে রয়েছে যে,

তারাবী বিশ রাকাআত, যা বিতরের পূর্বে পড়া হয় আর তাহাজ্জুদ নামায যা বিতরের পরে পড়া হয়।

৯. ইমাম বুখারী রহ: রাতের শুরু ভাগে নিজ ছাত্রদের নিয়ে জামাআতের সাথে তারাবী পড়তেন। এবং একবার কুবরআন শরীফ খতম করতেন। আর সেহরীর সময় একাকা তাহাজ্জুদ পড়তেন।

১০. তাহাজ্জুদ নামায বিতরসহ সর্বোচ্চ তের রাকাআত আর কমপক্ষে সাত রাকাআত। আর আহলে হাদীসদের বক্তব্য অনুযায়ী তারাবীর নামাযের নির্দৃষ্ট কোন রাকাআত নেই।
( আহসানুল ফাতওয়া ৩য়খন্ড, ৫৩১ পৃষ্ঠা।)

তারাবীর বিধান

রমজান মাসে এশার নামাযের পর তারাবী নামায পড়া পুরুষ মহিলা সকলের জন্যই সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (তবে পুরুষ মসজিদে জামাতের সাথে আর মহিলাগন ঘরে পড়বে।) কেননা খোলাফায়ে রাশেদীন (বিশেষ করে উমর রা: এর খেলাফতের শেষ জামানা থেকে) মুয়াযাবাত তথা নিয়মিত তারাবী নামায পড়তেন। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে,

তোমরা আমার সুন্নত এবং সঠিক পথপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদার সুন্নতকে দৃঢ়তার সাথে আকড়ে ধর। (আবু দাউদ:৪৬০৭, তিরমিজী,২৬৭৬,) প্রমাণ: ফাতওয়ায়ে ফাতওয়া শামী: ২য় খন্ড,৪৯৩ পৃষ্ঠা, দেওবন্দ প্রকাশনী)

হাম্বলী মাযহাবের গ্রহণযোগ্যগ্রন্থ আলমুগনীতে (ইবনে কুদামা রচিত) উল্লেখ রয়েছে যে, তারাবীর নামায সুন্নতে মুয়াক্কাদা, আর সর্বপ্রথম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবী নামায পড়েছেন। তবে উমর (রা:) এর দিকে যে তারাবীর নামাযকে সম্পর্কিত করা হয় তার মর্ম হলো এই যে, হযরত উমর রা: সাহাবায়ে কেরামের সর্ব সম্মত রায় অনুযায়ী জামাতের সাথে নিয়মতান্ত্রিক তারাবী নামায পড়ার বিধানের প্রচলন

করেছেন। নতুবা মূল তারাবীর সূচনা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই হয়েছে। (আল মুগনী ১ম খন্ড, ৮৩৩ ও ৮৩৪ পৃষ্ঠা)
হানাফী মাযহাবের কিতাব গুনয়াতুল মুস্তামলিতে রয়েছে যে, তারাবী নামায সুন্নত হওয়াকে যে অস্বীকার করবে অথবা অবৈধ মনে করবে সে বিদআত এর আবিস্কারক , পথ ভ্রষ্ট এবং তার সাক্ষী প্রত্যাক্ষাত হবে। আর তাহতাবী কিতাবে রয়েছে যে তারাবী নামায সুন্নত, এই নামায বর্জন ও ছেড়ে দেওয়া জায়েয নাই।(কামুসুল ফিকহ: ২য় খন্ড, ৪৪৮ পৃষ্ঠা)

আরেকটি বিষয় হলো জামাতের সাথে তারাবীর নামায পড়া। এব্যপারে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন: জামাতের সাথে তারাবীর নামায পড়া সুন্নতে কেফায়া। কোন মহল্লায় যদি কেউ-ই জামাতের সাথে না পড়ে তাহলে সকলেই গুনাগার হবে। আর যদি কিছু লোক মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করে আর কেউ কেউ ঘরে একা একা আদায় করে তাহলে এতে কোন অসুবিধা নেই।

তবে একথা অবশ্যই স্বরণ রাখতে হবে যে, যারা একা একা পড়ল তারা জামাতে পড়ার সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হল। (কামুসল ফিকহ: ২য় খন্ড, ৪৫০ পৃষ্ঠা)

উল্লেখ যে পবিত্র রমজান মাসে তারাবীর নামাযে একবার কুরআন শরীফ খতম করা সুন্নত। দুই বার খতম করা ফজিলত বা উত্তম। আর তিনবার খতম করা আফজাল বা অতিউত্তম।

(রাদ্দুল মুহতার : ২য় খন্ড, ৪৯৭ পৃষ্ঠা, ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ ৪র্থ খন্ড, ২৭৪ পৃষ্ঠা)

তারাবী নামায এর রাকাত সংক্রান্ত পর্যালোচনা

তারাবী নামায এর রাকাত সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুরু করে এ যাবত কত রাকাত পড়া হয়েছে এবং আমাদের জন্য কত রাকাত পড়া উচিৎ এ সম্পর্কে নিম্নে একটি পর্যালোচনা পেশ করা হল ।

রাসুল সাঃ ও আবু বকর রা: এর যুগে তারাবী

পবিত্র রমজান মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবীর নামায পড়েছেন, এ ব্যপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু কত রাকাআত পড়েছেন, এ ব্যপারে তালাশ করলে বিভিন্ন ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। তার মাঝে তিনটি বর্ণনা প্রশিদ্ধ।পর্যায়ক্রমে তাহলো,হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বর্ণিত হাদীস, হযরত আয়েশা রা. . বর্ণিত হাদীস, হযরত জাবের রা. বর্ণিত হাদীস ।

(১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে ২০ রাকাআত তারাবী ও বিতর পড়তেন।

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ২য় খন্ড, ৩৯৪ পৃ; ৭৭৭৪ আসসুনানুল কুবরা বায়হাকী-২য় খন্ড ৪৯৬ পৃষ্ঠা)

এর মাঝে হযরত আয়শা রা: ও হযরত জাবের বর্ণিত হাদীস দু’খানা সম্পর্কে আমরা পরে আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ। এখন আমরা হযরত ইবনে আব্বাস রা: কতৃক বর্ণিত হাদীস সস্পর্কে আলোচনা করছি। হাফেজ ইবনে হাজর আসকালানী রহ: বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেই দুই দিন জামাআতের সাথে তারাবীর ইমামতি করেছিলেন সেই দুই দিন বিশ রাকাআত নামায পড়েছিলেন। (আত্তালখিসুল হাবীর: ১ম খন্ড ১১৯ পৃষ্ঠা)

উক্ত আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ রাকাআত তারাবী পড়েছিলেন। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধারাবাহিক এই আমলের প্রচলন করেননি,

কেননা তার আশংকা ছিল যে, ধারাবাহিক করলে আল্লাহ তাআলা যদি এই আমলকে ফরজ করে দেন? তাই তিনি নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ রাকাআত বা জামাতের সাথে না পড়ে সাহাবায়ে কেরামের উপর ছেড়ে দিয়েছেন।

ফলে দুই, তিন জন বা একাকা তারা তারাবী পড়তে লাগলেন এভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র জমানা শেষ হয়ে যায়। তারপর প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর রা: এর যুগেও এই অবস্থাই ছিল।

তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করে এ ব্যাপারে নিয়মতান্ত্রিক কিছু করেননি। তাছাড়া তার খেলাফতের সময়টা তো অধিকাংশ কেটেছে মাথাচাড়া দিয়ে উঠা বিভিন্ন নব্য বাতিল ফেরকাকে স্তমিত করার ক্ষেত্রে। যুগ চলল সামনের দিকে , হযরত উমর রা: এর খেলাফত কালের শুরু কয়েকটি বছর সেই ধারাবাহিকতাই কেটে গেল। এর দ্বারা বুঝাগেল তারাবী নামাযের রাকাআত সংখ্যা বিশরাকাআত।

হযরত উমর রা:, আনসার ও মুহাজির সাহাবীদের আমল

আমাদের দেখতে হবে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্ণ সাহচার্য গ্রহণ করে যারা দ্বীন শিখেছেন। সে সব সাহাবীদের আমল কেমন ছিল। তাদের অনুসৃত পথই সুস্পষ্ট করে দিবে যে এটাই তো রাসূলের পথ। কেননা জেনে শুনে কখনোই তাঁরা রাসূলের পথের বিপরীদ কোন আমল করেননি। এবং কাউকে করতে দেখলে তারা চুপ করেও বসে থাকেননি।

সুতরাং কোন ব্যপারে সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যমত পোষন করার অর্থই হবে যে এর বিপরীদ পথ কখনোই রাসূলের পথ নয়। তাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

عليكم بسنتي ، و سنة الخلفاء الراشدين المهديين من بعدي ، تمسكوا بها ، و عضوا عليها بالنواجذ،

আমার স্ন্নুত ও আমার হেদায়াত প্রাপ্ত খলীফাগনের সুন্নতকে আকড়ে রাখবে। একে আবলম্বন করব এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে প্রানপন করে কামড়ে রাখবে।

(সুনানে আবু দাউদ হাদীস: ৪৬০৭ , জামে তিরমিযী হাদীস: ২৬৭৬)

রাসূলের উক্ত হিদায়েত মুতাবিক আমরা তালাশ করে দেখি, তারাবীর নামাযের রাকাআতের সংখ্যার ব্যপারে তাদের থেকে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় কি না।

হযরত আব্দুর রহমান আলক্বারী রহ: বলেন, আমি রমযান মাসে একদা হযরত উমর রা: এর সঙ্গে “মসজিদে গেলাম, তখন দেখলাম লোকজন বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে তারাবী নামায পড়ছেন।

কেউ একা পড়ছেন আবার কেউ দু চার জন সঙ্গে নিয়ে পড়ছেন। তখন হযরত উমর রা: বললেন তাদের সবাইকে যদি এক ইমামের পেছনে জামাআত বদ্ধ করে দেই তাহলে মনে হয় উত্তম হবে। এর পর তিনি তাদেরকে হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা: এর পেছনে এক জামাআতবদ্ধ করে দিলেন।

(বুখারী শরীফ ২য় খন্ড, ২০১০পৃষ্ঠা, মুয়াত্তা মালেক ১খন্ড, ১১৪পৃষ্ঠা)

হযরত ওমর রা: এর উক্ত সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ইবনে আব্দুল বার রহ;: তার বিখ্যাত গ্রন্থ আত তামহীদ এ লিখেন, হযরত উমর রা এখানে নতুন কিছুই করেননি। তিনি তাই করেছেন যা খোদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করতেন।

কিন্তু তিনি শুধু এই আশঙ্কায় যে নিয়মিত জামাআতে পড়লে উম্মতের উপর তারাবীর নামায ফরজ হয়ে যেতে পারে। তাই তিনি নিজে জামাআতের ব্যবস্থা করেননি। উমর রা: বিষয়টি ভালোভাবে জানতেন। তিনি দেখলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পর ওহী বন্ধ হয়েগেছে। সুতরাং তারাবীর নামায ফরজ হওয়ার এখন আর আশঙ্কা নেই।

তখন তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পছন্দ অনুযায়ী ১৪ হিজরীতে জামাআতে পড়ার ব্যবস্থা করেন। আল্লাহ তাআলা যেন এই মর্যাদা ও সুযোগ তার জন্যই রেখে দিয়েছিলেন। (আততামহীদ ৮ম খন্ড, ১০৮-১০৯ পৃষ্ঠা)

হযরত উমর রা: এর সুচিন্তিত রায় ও উপস্থিত সাহাবাদের সম্মতিক্রমে বিশ রাকাআত তারাবীর ধারাবাহিক আমল এর বর্ণনা তুলে ধরা হলো।
১. হযরত ইয়াযিদ ইবনে খুসাইফা রা: থেকে হযরত সায়েব ইবন ইয়াযীদ বলেন: তারা (সাহাবা ও তাবেয়ীন) উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর যুগে রমযান মাসে ২০ রাকাআত তারাবী পড়তেন ।
তিনি আরও বলেন যে, তারা নামাযে শতাধিক আয়াত বিশিষ্ট সুরা সমূহ পড়তেন এবং উসমান ইবনে আফফান রা. এর যুগে দীর্ঘ নামাজের কারণে তাদের কেউ কেউ লাঠিতে ভর করে দাঁড়াতেন।

(আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী-২/৪৯৬)

২. সাহাবী হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযীদ রা. এর অন্য আরেকটি বিবরণ হল: আমরা উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর যুগে বিশ রাকাআত এবং বিতর পড়তাম। (আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী-১খন্ড,২৬৭-২৬৮পৃ:)

৩. তাবেয়ী আব্দুল আযিয ইবনে রুফাই রহ. এর বিবরণ: হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা. রমযান মাসে মদীনায় লোকদের নিয়ে বিশ রাকাআত তারাবী এবং তিন রাকাআত বিতর পড়তেন।

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ২খন্ড, ২৮৫পৃ:)

মোট কথা উপরোক্ত বর্ণনা এবং এ ধরণের অন্যান্য সহীহ বর্ণনার ভিত্তিতে এবং সাহাবা ও তাবেয়ীনের যুগ থেকে চলে আসা সম্মিলিতও অবিচ্ছিন্ন কর্মের ভিত্তিতে আলেম গণের সর্বসম্মতি বয়ান হল এই যে, হযরত উমর রা: এর যুগে মসজিদে নববীতে বিশ রাকআত তারাবী হত।
এ ব্যপারে শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ: বলেছেন: এ বিষয়টি প্রমানিত যে, উবাই ইবনে কা’ব রমজানে তারবীতে মুসল্লিদের কে বিশ রাকআত পড়াতেন এবং তিন রাকআত বিতর পড়াতেন। (মাজমূউল ফাতাওয়া: ১৩তম খন্ড,১১২-১১৩ পৃষ্ঠা)

৪.বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম আবু আব্দুর রহমান আসসুলামী রহ: বলেন: হযরত আলী রা: রমযানে কারীগণকে ডেকে একজনকে আদেশ করেন যে, তিনি যেন লোকদের নিয়ে বিশ রাকআত পড়েন ।

(আসসুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ১খন্ড, ৪৯৬,৪৯৭ পৃষ্টা)

উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্ট হচ্ছে যে, হযরত উমর , রা: হযরত উসমান রা: এবং হযরত আলী রা: এর খেলাফত কালে জামাআতের সাথে প্রকাশ্যে বিশ রাকাআত তারাবী নামায পড়া হত।

এবং এই সোলানী যুগে বিশ রাকাআত তারাবীর আমল সাবীলূল মুমিনীন- মুমিনদের সকলের অনুসৃত পথ। বর্তমান যারা যারা বিশ রাকআত তারাবীর উপর আপত্তি করে এবং সুন্নাহ বা হাদীসের খেলাফ বলে তারা মূলত সাবীলুল মুমিনীন থেকে বিচ্যুতিই গ্র্রহন করে নিয়েছে।

লক্ষণীয় বিষয় হল, মসজিদে নববীতে ১৪ হিজরী থেকেই হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা: এর ইমামতিতে প্রকাশ্যে বিশ রাকআত তারাবী পড়া হত। প্রশ্ন হল, সেই সময় মুসল্লী ও মুুক্তাদী হতেন কারা? এই মুহাজির ও আনসারী সাহাবীগনই সেই মুবারক জামাতের মুক্তাদী ও মুসল্লী

ছিলেন। শীর্ষ স্থানীয় সাহাবায়ে কেরাম যাদের থেকে অন্যান্য সাহাবী দ্বীন শিখতেন যারা কুরআনের শিক্ষা, হাদীস বর্ণনা ও ফিকহ-ফতওয়ার স্তম্ভ ছিলেন তাদের অধিকাংশই তখন মদীনায় ছিলেন। দুই একজন যারা মদীনার বাইরে ছিলেন তারাও মক্কা মদীনার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং খলিফায়ে রাশেদের কর্ম সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ওয়াকেফ হাল থাকতেন,

তাদের একজনও কি বিশ রাকাআত তারাবীর বিপক্ষে কোন আপত্তি করেছেন? তাই তো আল্লামা ইবনে আব্দুল বার রহ: আলইস্তিযকার কিতাবে বলেন, এটাই হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা: থেকে বিশুদ্ধ রূপে প্রমাণিত এবং এতে সাহাবীগণের কোন ভিন্নমত নেই ।

(আল ইসতিযকার ৫ম খন্ড, ১৫৭ পৃষ্ঠা)

শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া বলেন: এটা প্রমাণিত যে, উবাই ইবনে কা’ব রা: রমযানের তারাবীতে লোকদের নিয়ে বিশ রাকাআত পড়তেন এবং তিন রাকাআত বিতির পড়তেন। তাই অধিকাংশ আলেম এই সিন্ধান্তে উপনিত হয়েছেন যে এটাই সুন্নত।

কেননা উবাই ইবনে কা’ব রা: মুহাজির ও আনসারী সাহাবাগনের উপস্থিতিতেই বিশ রাকাআত পড়িয়েছেন এবং কোন একজন সাহাবীও তাতে আপত্তি করেননি।
(মাজমুউল ফাতওয়া, ইবনে তাইমিয়া: ২৩ খন্ড, ১১২,১১৩ পৃষ্ঠা)

আল্লামা কাসানী রহ: বলেন : উবাই ইবনে কা’ব রা: সাহাবাদের নিয়ে প্রতিরাতে বিশ রাকাআতই পড়তেন এবং সাহাবীদের একজনও এ ব্যপারে আপত্তি করেননি। সুতরাং এ ব্যপারে তাদের সকলের ইজমা সম্পন্ন হয়েছে। (বাদায়েউস সানায়ে: ১ম খন্ড, ৬৪৪ পৃষ্ঠা)

মুসলিম উম্মার অনুসৃত চার মাযহাবের বর্ণনা

হানাফী মাযহাবের বর্ণনা: হযরত আসাদ ইবনে আমর ইমাম আবু ইউসুফ রহ: থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আমি ইমাম আবু হানিফা রহ: কে তারাবী এবং এ ব্যপারে উমর রা: এর কর্ম সম্পর্কে প্রশ্ন করি। তিনি এর উত্তরে বলেছেন।

তারাবী সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এবং হযরত ওমর রা: তা নিজের পক্ষ থেকে অনুমান করে কিছুর আবিস্কারও করেননি, বরং তিনি দলীলের ভিত্তিতে এবং নবীজী থেকে প্রাপ্ত কোন নির্দেশনার ভিত্তিতে এ আদেশ করেছেন।

(আলবাহরুর রায়েক, বাবুল বিতর ওয়াল নাওয়াফেল ১ম খন্ড,১১৬পৃষ্ঠা, দেওবন্দ প্রকাশনী)

উক্ত বর্ণনা দ্বারা এবং সর্বযুগে হানাফী মাযহাবের মুহাক্কিক উলামা ও আনুসারী সকলের আমল বিশ রাকআত তারাবীর উপর। হানাফী মাযহাবের ফিকহও ফাতওয়ার সকল কিতাবে বিশ রাকআত তারাবীর কথাই বলা হয়েছে। সুতরাং এর কম করা যাবে না।

মালেকী মাযহাব: তারাবীর রাকআত সংখ্যা নিয়ে তাদের মাঝে কিছুটা মতপার্থক্য আছে, কিন্তু তা তারাবীর বিশ রাকআত থেকে কম হবে এনিয়ে নয়, বরং কারো বর্ণনায় আছে বিতর সহ ৩৯ রাকআত ।

(আলমুদাওয়ানাতুল কুবরা, ১খন্ড, ১৯৩ পৃষ্ঠা।)

তবে মালেকী মাযহাবের কোন কোন মুহাদ্দিস যেমন ইবনে আব্দুল বার রহ: প্রমূখ তারাবীর নামায (২০) বিশ রাকআত পড়াকেই উত্তম ও গ্রহযোগ্য মনে করেন।

শাফেয়ী মাযহাব: ইমাম শাফেয়ী রহ: এর নিজে লেখা , কিতাবুল উম্ম, এই গ্রন্থে রয়েছে যে, তারাবীর নামায বিশ রাকআত পড়া আমার নিকট পছন্দনীয়। কেননা উমর রা: থেকে এমনই বর্ণিত আছে।

আর মক্কাবাসীগনও বিশ রাকাআত তারাবীর নামায পড়েন। (কিতাবুল উম ১ম খন্ড, ১৫৯ পৃষ্ঠা, দারুল ফিকর প্রকাশনী। আরো দেখুন আল মাজমু শারহুল মুহাযযাব, কিতাবুস সালাত, বাবুত তাতাওউ ,৫ম খন্ড, ৪৪পৃষ্ঠা দারুলহাদিস প্রকাশনী)

হাম্বলী মাযহাব: এই মাযহাবের গ্রহণযোগ্য গ্রন্থ “আলমুগনী”তে রয়েছে যে, তারাবী নামায সুন্নতে মুয়াক্কাদা, আর সর্বপ্রথম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই তারাবীর নামায পড়েছেন। তবে হযরত উমর রা: এর দিকে যে , তারাবীর নামাযকে সম্পর্কিত করা হয়, তার মর্ম হলো এইযে,

হযরত উমর রা: সাহাবায়ে কেরামের সর্বসমম্মত রায় অনুযায়ী জামাতের সাথে নিয়মতান্ত্রিক তারাবী পড়ার বিধানের প্রচলন করেছেন। নতুবা মূল তারাবীর সুচনা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই হয়েছে। আব আব্দুল্লাহ আহমদ ইবনে হাম্বলের মতে তারাবী নামায বিশ রাকাআত। (আলমুগনী ১ম খন্ড,৮৩৩ও ৮৩৪ পৃষ্ঠা)

ইজমা এর আলোকে তারাবী

২০ রাকাআত তারাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় থেকে যুগ যুগ ধরে অনবরত চলে আসছে। বিশেষ করে হযরত উমর রা: এর খিলাফত কালে তারাবীর নামায জামাআতবদ্ধভাবে পড়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করার ফলে পবিত্র মক্কা-মদীনাসহ আরব আজম তথা তামাম পৃথিবীতে মুসলমানদের নিকট এ বিষয়টা ব্যাপক ও সুস্পষ্ট হয়ে যায়।

কয়েকটি অনির্ভরযোগ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতীত সর্বত্রই মুসলমানরা ২০ রাকাআত তারাবী পড়তে থাকে বরং তারাবী ২০ রাকাআত হওয়ার ব্যপারে সকল মুহাজির ও আনসার সাহাবী এবং গোটা মুসলিম উম্মাহর ইজমা তথা ঐক্যমত সংঘটিত হয়। ২০ রাকাআত তারাবীর ব্যাপারে খুলাফায়ে রাশেদীন এবং অন্য সাহাবীর কোন ধরণের আপত্তি কোন কিতাবে উল্লেখ নেই।

পবিত্র মক্কা-মদীনা সহ যুগ যুগ ধরে সর্বত্রই ২০ রাকাআত তারাবীর নিয়ম চলে আসাই এই ইজমার (মুসলি উম্মাহর ঐক্যমতের ) উজ্জল দলীল বহন করে। তার পরেও সুদৃঢ়ভাবে উপলব্ধি করার জন্য মুসলিম বিশ্বের বরেণ্য কয়েকজন ইমামের উক্তি নিম্নে প্রদত্ত হলো-বিখ্যাত তাবেয়ী, ইমাম আ’তা বিন আবীরাবাহ (রহ:) বলেন:

আমি লোকদেরকে (সাহাবী ও তাবেয়ীগণকে) পেয়েছি, তারা বিতরসহ ২৩ রাকাআত পড়তেন। প্রখ্যাত মহাদ্দিস আল্লামা মোল্লা আলী কারী (রহ:) লিখেছেন:তারাবীর নামায ২০ রাকাআত এর উপর সব সাহাবায়ে কিরামের ইজমা (সর্ব সম্মত ঐক্যমত) সংঘটিত হয়েছে। বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার ইমাম ক্বাসতালানী (রহ:) লিখেছেন:হযরত উমর (রা:) এর যুগের অবস্থা প্রায় ইজমা বা সর্বসম্মত ঐক্যমত পর্যায়ের ।

ইমাম ইবনে কুদামা হাম্বলী (রহ:) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ আল মুগনীতে লিখেন: হযরত উমর (রহ:) যা করেছেন এবং যে বিষয়ে সব সাহাবায়ে কিরাম ঐ সময়ে ইজমা (সর্বসম্মত ঐক্য) হয়েছেন, তা অনুসরণের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ ও সর্বোত্তম। উল্লেখ্য যে, ইবনে কুদামা (রহ:) এর উপরোক্ত বক্তব্যে ইজমার গ্রহণযোগ্যতা, বিশেষ করে সাহাবীগণের ইজমা সর্বাপেক্ষা প্রাধান্যযোগ্য ও সর্বোত্তম অনুসরণীয় হওয়ার প্রতিও ইঙ্গিত রয়েছে।

তারাবীর নামাযের রাকআত সম্পর্কে ভিন্নমত

ইসলামের সুচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম উম্মাহ তারাবীর নামায ২০ রাকআত পড়ে আসছেন। হাদীস শরীফ ও সাহাবী তাবেয়ীগণের আমল ও উক্তির আলোকে যুগ যুগ ধরে নির্ভরযোগ্য ইমামগণ ও উলামায়ে কিরামের মত হলো তারাবীর নামায ২০ রাকআত পড়া সুন্নত। কিন্তু সাম্প্রতিককালে আহলে হাদীস নামধারী বিচিত্র একশ্রেণীর কিছু লোক ভিন্ন একটি মতবাদ রচনা করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

তাদের দাবী হলো তারাবীর নামায হবে অনুর্ধ্ব আট রাকআত । তারাবীর নামায ৮ রাকআতের বেশী পড়া বিদআত, নাজায়েয, হাদীস পরীপন্থী ও গুনাহের কাজ এই মতবাদটি সর্বপ্রথম ১২৮৪ হিজরী সনের দিকে আকবরাবাদ এর একজন গাইরে মুকাল্লিদ মৌলভী আট রাকআত তারাবী

এই মত প্রকাশ করে, আরেক গাইরে মুকাল্লিদ আলেম মাও.মুহাম্মদ হোসাইন বাটালভী আট রাকাআতের ফাতওয়া দেন। তখন গাইরে মুকাল্লিদ আরেক আলেম গোলাম রাসূল ১২৯০ হিজরীতে এর প্রতিবাদে কিতাব লেখেন।

তারা তাদের নব আবিস্কৃত আট রাকাতের এই মতবাদের পক্ষে দলীল হিসাবে। হযরত আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত একটি অপ্রাসঙ্গিক হাদীস তারা উল্লেখ করে থাকে। হাদিসটি হলো: হযরত আবু সালামা রা: বলেন যে, তিনি হযরত আয়েশা রা: কে জিজ্ঞাসা করেছেন, রমযান মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামায কেমন হত?

আয়েশা রা: উত্তরে বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগারো রাকআতের বেশী পড়তেন না। চার রাকআত নামায এমনভাবে পড়তেন যে এর দীর্ঘতা ও সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

এরপর আরো চার রাকাআত এমনভাবে পড়তেন যে, এর দীর্ঘতা ও সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এরপর তিনি তিন রাকাআত নামায পড়তেন।

উল্লেখিত হাদীসটি বুখারী শরীফ সহ হাদীসের নির্ভরযোগ্য সব কিতাবেই লিপিব্ধ আছে। এই হাদীসটি আহলে হাদিস বন্ধুদের একটি বড় খুটি, তাদের একমাত্র সহীহ হাদীস । কিন্তু তারাবীর ক্ষেত্রে এই হাদীসটি একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক।

এতে তারাবী সম্পর্কীয় কোন আলোচনা আদৌ নেই। অতএব এই হাদীসের আলোকে তারাবীর নামায কতো রাকাআত হবে তা প্রমাণ করার কোন অবকাশ নেই। নিম্নে এর কয়েকটি তথ্য উপস্থাপন করা হলো। ১. উরোক্ত হাদীসেই উল্লেখ আছে যে, এতে তারাবীর বিষয়ক কোন আলোচনা নেই।

কারণ এর ভাষ্য হলো- “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে এবং রমযান ছাড়া অন্য মাসে ১১ রাকাআতের বেশী পড়তেন না। এতে সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণ হয় যে এই হাদীসে এমন নামাযের কথা বলা হয়েছে, যা রমযান ছাড়া অন্য মাসেও পড়া হয়। অথচ আমরা জানি তারাবীর নামায শুধু রমযান মাসেই পড়া হয়। অতএব হাদীসে তারাবী ব্যতীত অন্য কোন নামাযের বর্ণনা করা হয়েছে। বলাবাহুল্য, তা হচ্ছে তাহাজ্জুদ নামায।
বস্তুত আয়েশা রা: বর্ণিত অপর হাদীসে আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষ দশকে অন্য সময়ের তুলনায় বেশি পরিশ্রম করতেন। এ থেকে প্রশ্ন জাগে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে তাহাজ্জুদ নামায হয়তো বেশী রাকআত পড়তেন।

আয়েশা রা: জানিয়ে দিলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসেও তাহাজ্জুদ নামায স্বাভাবিক ৮ রাকাআতের বেশী পড়তেন না। ২. আয়েশা রা: এর উল্লেখিত হাদীসের বর্ণনা হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে চার রাকাআত পড়েছেন, এরপর চার রাকাআত পড়েছেন।

চার রাকাআত নামায এক সালামে পড়েছিলেন। সুতরাং বলতে হবে এই নামায অবশ্যই এমন নামায যা এক সালামে চার রাকাআত করে পড়া হয় । আর তা হলো, তাহাজ্জুদ নামায । আর তারাবীর নামায তো লা-মাযহাবী ভাইয়েরাও দুই দুই রাকাআত করেই আদায় করেন।

তাহাজ্জুদ নামায দু’রাকাআত অথবা চার রাকাআত করে আদায় করা যায়। কিন্তু তারাবীর নামায তো সর্ব সম্মতিক্রমে দুই রাকাআত করেই আদায় করা হয়। অতএব এই হাদীসে তারাবীর কোন আলোচনাই নাই । আর যদি আপনারা গায়ের জোরে বলেন, এই হাদীসে তারাবীরই বিবরণ এসেছে তাহলে আপনাদেরকে বলতে হবে, কেন? আপনারাই তো এ হাদীসের বর্ণনা মতে আমল করেন নি।

৩.এই হাদীসের বর্ণনাকারী হযরত আয়েশা (রা:) নিজেও কোনদিন মনে করেননি যে এতে ৮ রাকাআত তারাবী পড়ার কোন ইঙ্গিত আছে অথবা আট রাকাআতের বেশী পড়া যাবে না। কেননা, মসজিদে নববীতে আয়েশা রা: এর কামরার পার্শ্বে তার জীবদ্দশায় সুদীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশী কাল যাবৎ সাহাবী ও তাবেয়ীগণ তারাবীর নামায বিশ রাকআত পড়েছেন।

যা তিনি নিজ চোখে দেখেছেন ও নিজ কানে শুনেছেন। কিন্তু তিনি এর কোন প্রতিবাদও করেননি। এই হাদীসের আলোকে ৮ রাকাআতের বেশী পড়া নিষিদ্ধ হওয়ার কোন প্রমাণ থাকলে তিনি কখনো চুপ থাকতেন না।

তিনি এর কোন প্রতিবাদ করেছেন দুনিয়াজোড়ে এমন কোন প্রমাণ নেই। ৪. এই হাদীসের মর্ম যদি সত্যিই এমন হতো যে, তারাবীর নামায আট রাকআতই পড়তে হবে তাহলে সাহাবী ও তাবেয়ীগণই সর্বপ্রথম এর মর্ম অনুধাবন করতেন এবং এ অনুযায়ী আমল করতেন। কিন্তু তাদের কেউ এই হাদীসকে ৮ রাকআত তারাবীর দলীল হিসেবে পেশ করেছেন বা এ অনুযায়ী আমল করেছেন এমন কোন প্রমান নেই।

৫. এই হাদীসটি যদি বাস্তবেই তারাবী বিষয়ক হতো তাহলে যুগে যুগে মুজতাহিদ ইমামগণের কেউ না কেউ তা গ্রহণ করতেন এবং এ অনুযায়ী আমল করতেন। কিন্তু ইমাম আবু হানিফা, মালেক, শাফেয়ী, আহমদ এবং আহলে হাদীস ভাইদের মান্যবর ইমাম দাউদে যাহেরী,ইবনে হাযামও ইবনে তাইমিয়া কেউই বলেন নি যে উপরোক্ত হাদীসে তারাবীর নামায ৮ রাকাআত পড়তে বলা হয়েছে। বরং এতে তারাবীর কোন প্রসঙ্গই নেই। এতে আছে তাহাজ্জুদ নামাযের বর্ণনা।

৬. আরবের বিজ্ঞ উলামায়ে কিরামের কর্মধারা ও মতামত ইতপূর্বে স্ববিস্তারে আলোচনা করেছি। আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত বুখারী শরীফের উল্লেখিত হাদীসটি তাঁদের সামনে আছে। কিন্তু তারা কখনো বলেন না যে, এতে ৮ রাকাআত তারাবী পড়তে বলেছে এবং ৮রাকাআতের বেশী পড়া যাবে না।

বরং সৌদী আরবের অধিবাসী ড. শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস ফয়সাল ও মসজিদের নববীর সুদীর্ঘ কালের উস্তাদ, বিচারপতি শায়খ আতিয়্যা মুহাম্মদ সালিম প্রমূখ গ্র্যান্ড আলিমগণ এই নতুন মতবাদকে দাফন করার জন্য পুস্তক রচনা করেছেন।

নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন চরমভাবে সে দেশের প্রাক্তন গ্রাণ্ড মুফতী এবং উলামায়ে কিরামের স্থায়ী বোর্ডের সদস্যবৃন্দ ২০ রাকাআত তারাবীর মতাদর্শকেই আঁকড়ে ধরেছেন।

গাইরে মুকাল্লিদ আহলে হাদীস অনুসারীগণ এক দিকে বলছে তারাবী ও তাহাজ্জুদ একই নামাযের দ্ইু নাম মাত্র, ১১ মাসে যা তাহাজ্জুদ হিসেবে পড়া হয়, রমযান মাসে এরই নাম হয় তারাবী ।

অপর দিকে বলে ৮ রাকাআতের বেশী তারাবী পড়া বিদআত, না জায়েয ইত্যাদি। অথচ বুখারী ও মুসলিম শরীফের সহীহ হাদীসের আলোকে তাহাজ্জুদ নামায যতো রাকাআত ইচ্ছা পড়া যাবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রাতের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ইরশাদ করেন: “দুই রাকাআত , দুই রাকাআত করে পড়ো, সুবহে সাদেকের পূর্বে বিতর পড়তে আশংকা হলে শেষ দু’রাকআতের সঙ্গে আরো এক রাকাআত পড়ো , যা বিতর নামাযে পরিণত হবে।

সৌদী আরবের মান্যবর আলেম, স্থায়ী উলামা পরিষদের নায়েব , শায়খ মুহাম্মদ ছালেহ ইবনে উছাইমীন উপরোক্ত হাদীসের আলোকে লিখেছেন। তাহাজ্জুদ নামায আট রাকাআত বা এগারো রাকাআতের বেশী পড়াতে কোন অসুবিধা নেই।

আহলে হাদীস নামধারীদের দ্বিতীয় দলীল:

“যে কয়েকটি অমুলক বিষয় আমাদের আহলে হাদীস বন্ধুদের মনে সংশয় সৃষ্টি করেছে, তম্মধ্যে হযরত জাবের রা: এর নামে উল্লেখিত অত্যন্ত দুর্বল সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীস, এই হাদীসটি একই সূত্রে দুই ধরনের ভাষ্যে বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ আছে।

এক ধরণের ভাষ্য নিম্ম রূপ। “ ইয়াকুব ইবনে আব্দুল্লাহ হাদীস বর্ণনা করেন ঈসা ইবনে জারিয়া থেকে, আর তিনি বর্ণনা করেন সাহাবী হযরত জাবের রা: থেকে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে রমযান মাসে ৮ রাকাআত ও বিতর পড়েছেন।

হযরত জাবের রা: এর নামে এই হাদীসটি আরেক সনদে অন্য ধরণের ভাষ্যেও বর্ণিত হয়েছে, তা হলো নিম্ন রূপ: ইয়াকুব ইবনে আব্দুল্লাহ হাদীস বর্ণনা করেন, ঈসা ইবনে জারিয়া থেকে , আর তিনি বলেন সাহাবী হযরত জাবির রা: বলেছেন, হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা: রমজান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ!

রাতে আমার একটি বিষয় ঘটেছে। তিনি বললেন তা কি হে উবাই? হযরত উবাই উত্তরে বলেন, আমার পরিবারের মহিলারা বলল, আমরা তো কুরআন পড়তে পারি না।

অতএব আমরা আপনার পিছনে জামাতে নামায পড়ব। অত:পর আমি তাদেরকে নিয়ে ৮ রাকাআত এবং বিতর পড়েছি। রাসূলুল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন নিরব থাকেন, যা তার সম্মতি ইঙ্গিত বহন করে। উপরোক্ত হাদীস দু’টিই সাবাহী হযরত জাবের রা: থেকে বর্ণিত।

হাদীস দুু’টিরই সনদ প্রায় এক ও অভিন্ন। হাদীসটি জাবের রা: থেকে যারা বর্ণনা করেছেন, একে একে তাদের কয়েক জন অতি দুর্বল সন্দেহ ভাজন ব্যক্তি। তাদের কোন এক জন উল্লেখিত বিষয় রচনা করে অথবা বিকৃত করে জাবের রা: এর নামে হাদীস হিসাবে চালিয়ে দিয়েছেন।

আসল রূপটা সু¯পষ্ট হওয়ার জন্য এর কয়েক জন বর্ণনাকারী সম্পর্কে বিজ্ঞ হাদীস বিশারদগণের মন্তব্য সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো। ক. হযরত জাবের থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেন ‘ঈশা ইবনে জারিয়া’ ।

উপরোক্ত হাদীস দু’টি যতো কিতাবে লেখা আছে সর্বত্রই ঐ ‘ঈসা ইবনে জারিয়ার সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তার মাধ্যম ব্যতীত ঐ হাদীস দু’টির কোন সূত্র নেই।

তার সম্পর্কে বিজ্ঞ হাদীস বিশারদগণ বিরুপ মন্তব্য করেছেন। প্রখাত হাদীস বিশারদ, ইমাম ইবনে মাঈন রহ: বলেন: ঈসা ইবনে জারিয়ার কাছে আপত্তি কর ন্যাক্কার জনক হাদীস”।

ইমাম আবুূ দাউদ ও ইমাম নাসাঈ বলেছেন “ منكر الحديث ” সে আপত্তি কর হাদীস বর্ণনাকারী”। ইমাম নাসাঈ আরো বলেন-متروك الحديث “সে পরিত্যাগ যোগ্য বর্জিত ব্যক্তি” । এভাবে ইমাম ইবনে আদী, সাজী প্রমূখ সর্বজন বিদিত ইমামগণ তাকে অত্যন্ত দুর্বল বর্ণনাকারীদের তালিকায় গণ্য করেছেন।

দ্বিতীয় ব্যক্তি হলো “ঈসা ইবনে জারিয়া থেকে বর্ণনাকারী বা তারই ছাত্র ‘ইয়াকুব বিন আব্দুল্লাহ কুম্মী’। তিনিও মতানৈক্যপূর্ণ ব্যক্তি। তার সম্পর্কে ইমাম বুছীরী রহ: বলেছেন- هو ضعيف” সে দুর্বল।

সুতরাং বিশ রাকাআত তারাবীর পক্ষ বিপক্ষ সমানে রাখলে এ কথাই প্রামাণিত হচ্ছে যে, আট রাকাআত তারাবীর মতটি: ক. এই মতটি তারাবী সংক্রান্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা ও নির্দেশনার পরিপন্থী। খ. এইমতটি খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নত বিরোধী ।

গ. এই মতটি সাহাবায়ে কেরামের ইজমা ( ঐকমত্য) এবং যুগযুগ ধরে চলে আসা আমলে মুতাওয়ারাস তথা উম্মতের অবিচ্ছন্ন কর্মধারার পরিপন্থী।

ঘ. অত্যন্ত আশ্চর্যের ব্যাপার হল, এই মতটি নামাযের নামেরও পরিপন্থী। আমাদের লা-মাযহাবী বন্ধুরা যদি অন্তত এই বিষয়টা ও অনুধাবন করতে সক্ষম হতেন যে, ‘তারাবী” একটি আরবী শব্দ যা তারবীহা শব্দের বহুবচন। তারবীহা বলা হয় প্রতি চার রাকাআত অন্তর বিরতিকে।

যেহেতু এই নামাযে সর্বমোট পাঁচটি তারবীহা বা বিরতি থাকে, তাই একে তারাবী বলা হয়। যদি অন্য সব প্রমাণাদি বাদও দেওয়া হয়, তবু শুধু তারবীহা শব্দটিই একথা প্রমাণ করে যে, এই নামাযে রাকাআত সংখ্যা আটের অধিক। কেননা আরবী ভাষায় বহুবচন কমপক্ষে তিন বুঝিয়ে থাকে।

যেহেতু আরবীতে দ্বিবচন ও বহু বচনের জন্য আলাদা আলাদা শব্দ ব্যবহৃত হয়। তারবীহার দ্বিবচন নামে নামকরণের কারণে অন্তত তিনটি তারবীহা বা বিরতি আবশ্যই থাকতে হবে। বলাবাহুল্য , আট রাকাআত মাত্র দু’টি বিরতি হতে পারে। অতএব এই নামাযের রাকাআত সংখ্যা আট হলে এর নাম তারাবী না হয়ে তারাবীহাতান হত।

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাকে তথাকথিত আহলে হাদীস ফেৎনা থেকে হেফাযত করেন। তাদের নব আবিস্কৃত বিষয় থেকে বিরত রাখেন। এবং রমযানের ফাযাযেল ও বারাকাত হাসেল করার তাওফীক দান করেন। আমীন।

শেয়ার করুন:

এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ১৭ মে ২০১৮, ৯:৫৪ অপরাহ্ণ ৯:৫৪ অপরাহ্ণ

শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

  • ইসলাম

ইবনে সীরীনের মতে স্বপ্নে মা হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?

মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…

২০ এপ্রিল ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ
  • স্বাস্থ্য

ঘন ঘন প্রস্রাব প্রতিকারে হোমিও চিকিৎসা

ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…

৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ণ
  • লাইফস্টাইল

তরমুজ খাওয়ার পর কোন ভুলে পেট ফুলে ওঠে?

বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…

৬ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ণ