জানাজা শেষে- একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মৃত্যুর পরে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে নিজ নিজ আমলের খতিয়ান নিয়ে। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই মরণশীল।
বিশ্বে প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর স্বাভাবিক নিয়মানুসারে তার জানাযার নামাজ আদায় করে দাফন করা হয়। জানাযা শেষে দাফনের জন্য কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় তার খাটিয়া।
কিন্তু খাটিয়া নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত ব্যক্তি জীবিত মানুষদের আহ্বান করে জানতে চায়ন তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? মৃত ব্যক্তির ওই সব কথা মানুষ শুনতে পায় না, কিন্তু অন্যান্য জীব-জন্তু শুনতে পায়। এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে :
وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي رضي الله عنه، قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ ﷺ، يَقُولُ: ্র إِذَا وُضِعَت الجَنَازَةُ، فَاحْتَمَلَهَا الرِّجَالُ عَلَى أَعنَاقِهِمْ، فَإِنْ كَانَتْ صَالِحَةً، قَالَتْ: قَدِّمُونِي، وَإنْ كَانَتْ غَيْرَ صَالِحَةٍ، قَالَتْ ِلأَهْلِهَا: يَا وَيْلَهَا أَيْنَ تَذْهَبُونَ بِهَا ؟ يَسْمَعُ صَوْتَهَا كُلُّ شَيْءٍ إِلاَّ الإنْسَانَ، وَلَوْ سَمِعَ الإنسَانُ لَصَعِقَগ্ধ. رواه البخاري
বাংলা অর্থ : আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ‘যখন জানাজা (খাটে) রাখা হয় এবং লোকেরা তা নিজেদের ঘাড়ে উঠিয়ে নেয়, তখন সে সৎ হলে বলে, ‘আমাকে আগে নিয়ে চল।’
আর অসৎ হলে তার পরিবার-পরিজনদের উদ্দেশ্যে বলে, ‘হায় আমার দুর্ভোগ! তোমরা (আমাকে) কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?’ মানুষ ছাড়া তার এই আওয়াজ সব জিনিসই শুনতে পায়। যদি মানুষ তা শুনতো, তবে নিশ্চয় বেঁহুশ হয়ে যেত।’ [বুখারি ১৩১৪, ১৩১৬, ১৩৮০, নাসায়ি ১৯০৯, আহমদ ১০৯৭৯, ১১১৫৮]
মানুষ যদি মৃত্য বক্তির কষ্টের আওয়াজ শুনতে পারতো তাহলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারতো না। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় জীবিত কোনো লোক মৃত ব্যক্তির সেই আওয়াজ শুনতে পায়না। মৃত ব্যক্তির সেই আওয়াজ শুনতে পায় পশু-পাখি বা বোবা জানোয়ারেরা।
তবে মানুষ যদি এই আওয়াজ শুনতে পারতো তাহলে জীবনে কখনো কোনো ধরণের পাপ কাজ করতো না। সবাই আল্লাহর একতাবাদের উপর বিশ্বাস রেখে দুনিয়াবি সব ধরণের চিন্তা চেতনা ভুলে গিয়ে আখিরাতের চিন্তায় মশগুল হয়ে পড়তো।
মহান আল্লাহ আমাদের মাঝ থেকে আমাদের অাপনজনদের মৃত্যু দিয়ে আমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। যাতে তাদের মৃত্যু থেকে আমারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। কারণ একদিন এভাবে আমাদেরকেও এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে বিদায় নিতে হবে।
এই দুনিয়া চিরস্থায়ী নয়। দুনিয়ার যত ধন সম্পদ সবই একদিন থেকে যাবে কিন্তু সব কিছুর মায়া ত্যাগ করে আমাদের একদিন বিদায় নিয়ে চলে যেতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের এমন ঘটনাগুলাে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ দান করুক। যাতে দুনিয়া এবং আখিরাতের কল্যাণ কর কাজ করে এই পৃথিবীতে বিদায় নিতে পারি আমরা সবাই।
শিশুর জন্মের পর তার জন্য একটি সুন্দর ইসলামী নাম রাখা প্রত্যেক মুসলিম পিতা-মাতার কর্তব্য। মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মুসলিমদের ন্যায় বাংলাদেশের মুসলিমদের মাঝেও ইসলামী সংস্কৃতি ও মুসলিম ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে শিশুর নাম নির্বাচন করার আগ্রহ দেখা যায়। এজন্য তারা নবজাতকের নাম নির্বাচনে পরিচিত আলেম-ওলামাদের শরণাপন্ন হন।
তবে সত্যি কথা বলতে কী এ বিষয়ে আমাদের পড়াশুনা একেবারে অপ্রতুল। তাই ইসলামী নাম রাখার আগ্রহ থাকার পরও অজ্ঞতাবশত আমরা এমনসব নাম নির্বাচন করে ফেলি যেগুলো আদৌ ইসলামী নামের আওতাভুক্ত নয়।
শব্দটি আরবী অথবা কুরআনের শব্দ হলেই নামটি ইসলামী হবে তাতো নয়। কুরআনে তো পৃথিবীর নিকৃষ্টতম কাফেরদের নাম উল্লেখ আছে। ইবলিস, ফেরাউন, হামান, কারুন, আবু লাহাব ইত্যাদি নাম তো কুরআনে উল্লেখ আছে; তাই বলে কী এসব নামে নাম বা উপনাম রাখা সমীচীন হবে?
ব্যক্তির নাম তার স্বভাব চরিত্রের উপর ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে বর্ণিত আছে। শাইখ বকর আবু যায়েদ বলেন, ঘটনাক্রমে দেখা যায় ব্যক্তির নামের সাথে তার স্বভাব ও বৈশিষ্ট্যের মিল থাকে।
এটাই আল্লাহর তা‘আলার হেকমতের দাবী। যে ব্যক্তির নামের অর্থে চপলতা রয়েছে তার চরিত্রেও চপলতা পাওয়া যায়। যার নামের মধ্যে গাম্ভীর্যতা আছে তার চরিত্রে গাম্ভীর্যতা পাওয়া যায়। খারাপ নামের অধিকারী লোকের চরিত্রও খারাপ হয়ে থাকে। ভাল নামের অধিকারী ব্যক্তির চরিত্রও ভাল হয়ে থাকে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারো ভাল নাম শুনে আশাবাদী হতেন। হুদাইবিয়ার সন্ধিকালে মুসলিম ও কাফের দুইপক্ষের মধ্যে টানাপোড়নের এক পর্যায়ে আলোচনার জন্য কাফেরদের প্রতিনিধি হয়ে সুহাইল ইবনে ‘আমর নামে এক ব্যক্তি এগিয়ে এল তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুহাইল নামে আশাবাদী হয়ে বলেন: সুহাইল তোমাদের জন্য সহজ করে দিতে এসেছেন। সুহাইল শব্দটি সাহলুন (সহজ) শব্দের ক্ষুদ্রতানির্দেশক রূপ। যার অর্থ হচ্ছে- অতিশয় সহজকারী। বিভিন্ন কবিলার ভাল অর্থবোধক নামে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশাবাদী হওয়ার নজির আছে।
তিনি বলেছেন, গিফার (ক্ষমা করা) কবিলা তথা গোত্রের লোকদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দিন। আসলাম (আত্মসমর্পণকারী/শান্তিময়) কবিলা বা গোত্রের লোকদেরকে আল্লাহ শান্তি দিন।
এই পোস্টটি প্রকাশিত হয় ৬ মে ২০১৮, ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ
মা হারানোর স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? স্বপ্নে একজন মাকে হারিয়ে যাওয়া এমন একটি দর্শনের মধ্যে রয়েছে…
ঘন ঘন প্রস্রাব হল স্বাভাবিকের চেয়ে অতি মাত্রায় প্রস্রাবের চাপ বা প্রস্রাব করা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক…
বাজারে এখন তরমুজের ছড়াছড়ি। গ্রীষ্মকালীন এই ফল সবারই প্রিয়। বিশেষ করে রমজানে এই ফলের কদর…