নেতৃত্বে আসছেন ১০ নারী

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনের জন্য চলছে জোড় প্রস্তুতি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা। ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্য নানামুখী তদবীর শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।

ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন ৩১ মার্চ হবার কথা থাকলেও, পরে ওই তারিখ পরিবর্তন করা হয়। মে মাসের ১১ ও ১২ তারিখ ছাত্রলীগের ২৯ তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এক বৈঠকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন। সম্মেলনের মাধ্যমে আসা নতুন নেতৃত্ব ছাত্রলীগকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি সংগঠনের কঠিন সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার মানসিকতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন হবে বলেই আশা করছেন ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টরা।

ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে, ২৫ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সম্মেলনে ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, আজ ২৬ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তরের সম্মেলন চলছে এবং ২৯ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই ছাত্রলীগের ২৮তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে সাইফুর রহমানকে সভাপতি ও এস এম জাকির হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯ তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১-১২ মে। জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্বের হাতে উঠবে গৌরব-ঐতিহ্যের ধারক এ ছাত্র সংগঠনটির। তবে এবার ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ৬ জন নেতা। এমন আভাস দিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র।

এদিকে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নারীরা উঠে আসবেন বলেও আভাস পাওয়া গেছে। অনুসন্ধান এবং ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ ৫ নেতৃত্বের মধ্যে ২ টি নারী থাকতে পারে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতেও আসতে পারে এমন চমক।

সূত্র আরো জানিয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের ৬ নেতা ইতিমধ্যে ১০ জন নারী নেত্রীর তালিকা করেছেন। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। আলোচনায় উঠে আসা নারী ছাত্রলীগ নেত্রী মধ্যে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি নীশিতা ইকবাল নদী, যিনি বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও শামসুন্নাহার হলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।

অন্যান্যদের মধ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে অর্না জামান। কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক সহ-সভাপতি চৈতালী হালদার চৈতী, তার গ্রামের বাড়ি খুলনা অঞ্চলে। আলোচিত সুফিয়া কামাল হল শাখার সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক খালেদা হোসেন মুন। রোকেয়া হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইশাত কাসফিয়া ইরা। তিনি কিশোরগঞ্জ অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন। উপ অর্থ সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদারও আলোচনায় রয়েছেন।

এছাড়া আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় কমিটির উপ পরিবেশ সম্পাদক শেখ মারুফা নাবিলা, সহ-সম্পাদক সাবরিনা আক্তার। সাবরিনা রোকেয়া হলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। এছাড়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হলের সভাপতি বেনজীর হোসাইন নিশি, বিএম লিপি আক্তার যিনি রোকেয়া হল শাখার বর্তমান সভাপতিও আলোচনায় রয়েছেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, ছাত্রলীগের নতুন নেতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ৬ জনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান। তারা দুজনই ছাত্রলীগের ২ সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

আওয়ামী সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে ২ জনকেও বিশেষ এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা হলেন ৩ বারের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং এনামুল হক শামীম। উল্লেখ্য, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলে নেতা থাকার সময় তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ছিলেন। এনামুল হক শামীম ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

এছাড়া আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপিও ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন। দেলোয়ার হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং মারুফা আক্তার পপি সংগঠনটি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।

আওয়ামী লীগের এই ৬ নেতা মাঠ পর্যায়ে ছাত্রলীগের ত্যাগী, সৎ, নিষ্ঠাবান এবং নেতৃত্বদানে সক্ষম এমন নেতাদের বাছাই করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে উপস্থাপন করবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তা তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছে সূত্র। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন শেখ হাসিনা। এদিকে, ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনকে ডেকে সফলভাবে নতুন সম্মেলন আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন।