রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

রাষ্ট্রপতি বাণী

সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কল্যাণমূলক সংগঠনগুলোকেও প্রবীণদের কল্যাণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।‌‌ ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

মো. আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতিতে সমগ্র বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। ফলে পৃথিবীর সব দেশেই প্রবীণদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। প্রবীণ ব্যক্তিরা সমাজের শ্রদ্ধেয় ও সম্মানিত ব্যক্তি। তাদের শ্রম ও মেধায় সভ্যতার অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস ২০২১’ পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবীণ নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে সংবিধানে সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ সংযুক্ত করেন। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি প্রবর্তন করে, যার আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রান্তিক পর্যায়ে প্রায় ৪৯ লাখ প্রবীণ নাগরিক ভাতা পেয়েছেন।

এ বছর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল সমতা সকল বয়সের প্রাপ্যতা’ যথার্থ হয়েছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, চলমান অর্থবছরে এর আওতা আরও বাড়ানো হয়েছে। সরকার ২০১৪ সালে প্রবীণ ব্যক্তিদের সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৫ প্রণয়ন করেছে। সরকারের গৃহীত এসব পদক্ষেপ প্রবীণদের কল্যাণে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশ ও বিশ্বের সকল প্রবীণ ব্যক্তির সুস্বাস্থ্য ও শান্তিময় জীবন কামনা করেন রাষ্ট্রপতি। আবদুল হামিদ বলেন, দেশের বিদ্যমান আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, প্রবীণ ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ অবনতিশীল স্বাস্থ্য, আর্থিক দৈন্যতা এবং সামাজিক নিরাপত্তাহীন অবস্থায় বসবাস করছেন। প্রবীণদের অধিকার সংরক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে তাদের জীবনের অবশিষ্ট সময় সুখ, শান্তি ও মর্যাদার সঙ্গে অতিবাহিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি।

প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রবীণদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে আমি প্রবীণদের স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করা, নিয়মিত হাত ধোয়া ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখার জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোগ প্রবীণদের কল্যাণে সরকারের উদ্যোগকে আরও বেগবান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস’ পালন উপলক্ষে দেশের সব স্তরের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ বছর ৩১তম প্রবীণ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল সমতা সকল বয়সের প্রাপ্যতা’ যথার্থ হয়েছে। প্রবীণ জনগোষ্ঠী দেশের মোট জনসংখ্যার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তারা কর্মময় জীবনে অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে দেশ তথা নিজ নিজ পরিবার ও সমাজ গঠনে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রবীণদের জীবন সায়াহ্নে তাদের যথাযথভাবে দেখাশোনা করা এবং তাদের কল্যাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া রাষ্ট্র, পরিবার তথা সমাজের দায়িত্ব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রবীণদের সার্বিক কল্যাণে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। প্রবীণ ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষায় জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ প্রণয়ন, পিতা-মাতার ভরণ পোষণ আইন ২০১৩ প্রণয়ন, ৫৭ লাখ ১ হাজার প্রবীণ ব্যক্তিকে মাসিক ৫০০ টাকা হারে বয়স্ক ভাতা, ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার জনকে ৫০০ টাকা হারে বিধবা এবং স্বামী নিগৃহীতা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সবাই একযোগে কাজ করার মাধ্যমে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেয়ার করুন: