ডিএমপি

ডিএমপি কমিশনার হওয়ার তালিকায় এগিয়ে যারা

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ অক্টোবর। এরপর অবসরে যাবেন তিনি। আপাতত তার মেয়াদ বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই সরকারের। অতএব খালি হচ্ছে ডিএমপি কমিশনারের পদ। ইতোমধ্যে কমিশনারের উত্তরসূরি কে হচ্ছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। বাছাই প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনার পদের জন্য মোট পাঁচজনের নাম তালিকায় রয়েছে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে যে ৭০ জন পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, ওই তালিকায় এই ৫ জনের নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে ডিএমপি মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারের পদটি অতিরিক্ত আইজিপি সমমর্যাদার। এটি বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল পদ। দক্ষ ও যোগ্যরাই এই পদের দায়িত্ব পাবেন।’

২০০৫ সালে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনায় জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমানের জামাতা আবদুল আউয়ালকে ঠাকুরগাঁও থেকে গ্রেফতার করে ব্যাপক প্রশংসিত হন খন্দকার গোলাম ফারুক। পাশাপাশি এ কাজের জন্য সরকারের কাছ থেকে পুরস্কার পান তিনি। পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ডিএমপি কমিশনার হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি যার নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তিনি পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি এস. এম রুহুল আমিন। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায়। তিনি অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মেজর মরহুম এস.এম আব্দুল খালেকের ছেলে।

এস. এম রুহুল আমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯০ সালে ১২তম বিসিএস-এ পুলিশ ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৯১ সালের ২০ জানুয়ারি সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন।

২০০৩ সালের ৩১ মার্চ তিনি রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে ২ বছর দায়িত্ব পালনকালে রাজবাড়ী জেলার সন্ত্রাস দমন এবং মাদক উদ্ধারে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেন। এরপর তিনি ঝালকাঠির পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করে সেখানেও অপরাধীদের কাছে আতঙ্কে পরিণত হন। অপরাধ দমনের পাশাপাশি তিনি মানবসেবার নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। পুলিশি হয়রানি রোধ এবং বিভিন্ন মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ডে পুলিশকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের হৃদয় জয় করে নেন রুহুল আমিন।

ডিএমপি কমিশনার হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি যার নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তিনি পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি এস. এম রুহুল আমিন। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায়। তিনি অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মেজর মরহুম এস.এম আব্দুল খালেকের ছেলে। এরপর তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার, সিলেট জেলার পুলিশ সুপার, ঢাকায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এবং রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে রুহুল আমিন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কমিশনার হিসেবে যোগদান করে বরিশালে পুলিশি সেবার নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এঙ্গোলা, কসোভো, আইভরিকোস্ট ও সাউথ সুদানেও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

সম্ভাব্য ডিএমপি কমিশনার হিসেবে তালিকায় থাকা দ্বিতীয় নামটি হচ্ছে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এম খুরশীদ হোসেনের। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়। এম খুরশীদ হোসেনও ১২তম বিসিএস থেকে পুলিশে এসেছেন। সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে খুরশীদ হোসেনের বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। একজন সৎ ও দক্ষ অফিসার হিসেবে তারও কমিশনার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির (সারদা, রাজশাহী) প্রিন্সিপাল খন্দকার গোলাম ফারুকের নামও। তিনিও বিসিএস ১২তম ব্যাচের কর্মকর্তা। খন্দকার গোলাম ফারুক ১৯৯৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে পুলিশে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পান। পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে পদোন্নতি পান ২০০৩ সালে। এরপর তিনি ঠাকুরগাঁও, কিশোরগঞ্জ, ঝালকাঠি, জামালপুর ও ময়মনসিংহে এসপি হিসেবে সফলভাবে দায়িত্বপালন করেন।

২০০৫ সালে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনায় জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমানের জামাতা আবদুল আউয়ালকে ঠাকুরগাঁও থেকে গ্রেফতার করে ব্যাপক প্রশংসিত হন খন্দকার গোলাম ফারুক। এ কাজের জন্য সরকারের কাছ থেকে পুরস্কারও পান তিনি।

তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির (সারদা, রাজশাহী) প্রিন্সিপাল খন্দকার গোলাম ফারুকের নামও। তিনিও বিসিএস ১২তম ব্যাচের অফিসার। খন্দকার গোলাম ফারুক ১৯৯৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে পুলিশে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৬ সালে পদোন্নতি পেয়ে ডিআইজি এবং ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পান তিনি। অভিজ্ঞতা বিবেচনায় তাকেও রাখা হয়েছে সম্ভাব্য ডিএমপি কমিশনারের তালিকায়।

কমিশনার হওয়ার দৌড়ে তুলনামূলক জুনিয়র দুই কর্মকর্তার নামও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন সূত্রে। তারা হলেন- পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসপি) প্রধান মনিরুল ইসলাম এবং ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। তাদের উভয়ের বাড়িও গোপালগঞ্জে। মনিরুল ইসলাম ১৫তম এবং হাবিবুর রহমান ১৭তম বিসিএসের কর্মকর্তা।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও জঙ্গি দমনে মনিরুল ইসলাম অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর জঙ্গিবাদ নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করেন তিনি। জঙ্গি নিয়ন্ত্রণ ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে তার অর্জন উল্লেখযোগ্য। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই এ পদে তাকেও দেখা যেতে পারে।

সম্ভাব্য ডিএমপি কমিশনার হিসেবে তালিকায় থাকা দ্বিতীয় নামটি হচ্ছে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এম খুরশীদ হোসেনের। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়। এম খুরশীদ হোসেনও ১২তম বিসিএস থেকে পুলিশে এসেছেন। সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি।

এদিকে বিসিএস ব্যাচ বিবেচনায় পিছিয়ে থাকলেও সামাজিক ও অপারেশনাল কাজের মাধ্যমে নিজেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রেখেছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। পুলিশের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে এক্ষেত্রে তার নামও শোনা যাচ্ছে।

পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিএমপি কমিশনারের পদটিতে কে আসবেন সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে অনুমোদন দেন। পুলিশ হিসেবে কর্মজীবনের সফলতা, গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা বিবেচনায় এ পদটিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিনিয়র-জুনিয়র নির্বিশেষে যে কেউ এ দায়িত্ব পেতে পারেন। উল্লেখ্য, অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে ডিএমপি কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শেয়ার করুন: