পদ্মা সেতু এড়িয়ে ফেরি চলাচলের জন্য ঘাট স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন পেলে ঘাট স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর পিলারে সম্প্রতি চার দফা ফেরি ধাক্কা দেয়ার পর এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শুক্রবার (১৩ আগস্ট) মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাট, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুট এবং শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দি ঘাট পরিদর্শন শেষে এই কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু পুরোপুরি চালু হলে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটের বাঁধ রক্ষায় শরীয়তপুরের জাজিরায় মাঝির ঘাটে ফেরিঘাট স্থানান্তরের বিষয়টি পরিকল্পনায় রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘাট স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত লাগবে। পদ্মা সেতুতে বারবার ফেরির ধাক্কা লাগার বিষয়টি নিয়ে আজ রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার একটি বৈঠকও রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ঘাট স্থানান্তরের দায়িত্ব বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)। তারা ঘাট করে দেয়, আর আমরা ফেরি চালাই।’
এর আগে ২৩ জুলাই সকালে প্রথম মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে রো রো ফেরি শাহজালালের। এতে ফেরির ২০ যাত্রী আহত হন। ওই দিনই এই ঘটনা তদন্তে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক আশিকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনে পদ্মা সেতু রক্ষায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরি সার্ভিসের রুটটি পরিবর্তনের সুপারিশ করে। এজন্য বাংলাবাজার ঘাটটি স্থানান্তর করে মাঝিরকান্দি নিয়ে আসা, অথবা শিমুলিয়া ঘাটটি স্থানান্তর করে পুরনো মাওয়া ঘাটে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করে কমিটি।
পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরি ধাক্কার বিষয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু এখন বাস্তবতা। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা অনেক বড় কথা। এ সেতুতে আঘাত যেন আমাদের হৃদয়ে আঘাত। এতে হালকা আঘাত লাগলেও আমরা এটাকে হালকাভাবে দেখছি না। আমরা এতে বিব্রত হচ্ছি। পদ্মা সেতুর পিয়ারে ফেরির আঘাত, অসাবধানতা, নির্দেশনা গুরুত্ব সহকারে দেখা হয় না। দায়িত্বে উদাসীনতার কারণগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ সময় নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক এবং পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।