করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ডেল্টা প্লাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বজুড়ে নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। করোনার এই ধরন আগের অন্যান্য প্রজাতিগুলোর তুলনায় বেশি সংক্রামক হওয়ায় বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নতুন এই প্রজাতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উপায় বাতলে দিয়েছে।
সংস্থাটির রুশ প্রতিনিধি মেলিটা ভুজনোভিক বলেছেন, করোনাভাইরাসের ডেল্টা প্লাস ধরনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকাদান এবং মাস্ক পরার মতো অন্যান্য সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউটিউবে এক লাইভ শোতে অংশ নিয়ে ভুজনোভিক বলেছেন, ডেল্টার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুধুমাত্র টিকাই যথেষ্ট নয়। বরং টিকার পাশাপাশি মাস্কও পরতে হবে। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। অন্যথায় লকডাউন দিতে হবে।
তিনি বলেন, টিকাদান জরুরি। কারণ এটি ভাইরাসের বিস্তারের সম্ভাবনা হ্রাস এবং গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি কমিয়ে ফেলে। তবে এর পাশাপাশি অন্যান্য অতিরিক্ত সুরক্ষামূলক ব্যবস্থারও দরকার।
চলতি মাসের শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে উদ্বেগজনক ভাইরাসের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে ডব্লিউএইচও। বিশ্বের অনেক দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। এই দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের নতুন করে উত্থানের পেছনে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করা হচ্ছে। এছাড়া টিকা না নেওয়া লোকজন এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থা।
গত মার্চে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়। পরে করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক এই প্রজাতি রূপ বদলে ফেলে। করোনার এই ধরনকে ‘ডেল্টা প্লাস’ বা ‘এওয়াই.১’ হিসেবে শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, পরিবর্তিত এই রূপ শরীরের ইমিউনিটি ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। তবে এখনই এটি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।
করোনার অতিসংক্রামক প্রজাতি বি.১.৬১৭ এর পরিবর্তিত ধরন হচ্ছে ডেল্টা প্লাস। ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেপথ্যে ডেল্টা ধরনের ভূমিকা রয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে রূপান্তর ঘটিয়ে ফেলা এই প্রজাতিকে কে৪১৭এন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গত ২২ জুন সর্বশেষ করোনাভাইরাস মহামারিবিষয়ক হালনাগাদ তথ্যে ডব্লিউএইচও বলছে, আলফা ভ্যারিয়েন্ট এখন পর্যন্ত ১৭০টি দেশ, ভূখণ্ডে অথবা অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া বেটা ভ্যারিয়েন্ট ১১৯টি দেশ, গামা ৭১টি এবং ডেল্টা ৮৫টি দেশে শনাক্ত হয়েছে। সূত্র: এএনআই, রয়টার্স।