রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সব সম্পত্তি ‘তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনে’ দান করার ঘোষণা দিয়েছেন।
রবিবার (২০ জুন) বিকেলে ভোলায় তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সদর উপজেলা চত্বরে প্রতিবন্ধী কর্মসংস্থানের একটি অনুষ্ঠানে তিনি ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ ঘোষণা দেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমার যা কিছু আছে সবই ফাইন্ডেশনে যাবে। ভোলায় একটা ফার্ম (খামার) আছে, সেটা বিক্রি করে যে টাকা আসবে তা ফাউন্ডেশনে দান করা হবে। আমি জনগণের কল্যাণে কাজ করি। ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই দরিদ্র মানুষের সেবায় মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ করা হচ্ছে, পরিচালিত হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম, শিক্ষাবৃত্তি।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইতিমধ্যে মায়ের নামে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। মা-বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে আজাহার ফাতেমা মেডিক্যাল কলেজ। ওই কলেজের দায়িত্বে রয়েছে মেয়ে ডা. তাসলিমা মুন্নী। ওই হাসপাতালও ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যেখানে বিনা টাকায় গরিব মানুষ চিকিৎসাসেবা পাবে।
এ সময় আবেগতাড়িত হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে স্নেহ করতেন। তিনি আমাকে তার রাজনৈতিক সচিব করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্নেহই জীবনের বড় সম্পদ। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।
অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মো. মিজানুর রহমান নামে এক প্রতিবন্ধী যুবকের কর্মসংস্থানের জন্য একটি ইজিবাইক দান করা হয়। ইজিবাইক পেয়ে শুকরিয়া আদায় করেন প্রতিবন্ধী মো. মিজানুর রহমান, তার মা বিবি ফাতেমা ও স্ত্রী রিনা বেগম। মিজানের বাড়ি বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।
গত মাসে এলাকার এক রোগী নিয়ে জেলা শহরের যুগিরঘোলের অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিকে আসেন মিজান। পাশের ঈদগাহ মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে চুরি হয়ে যায় তার আয়ের একমাত্র অবলম্বন ইজিবাইকটি। মা, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংকটে পড়ে যান। ফেসবুকে এমন একটি বেদনাদায়ক ঘটনা তোফায়েল আহমেদের নজরে আসে। কর্মহীন ওই প্রতিবন্ধীর সহায়তায় নতুন ইজিবাইক উপহার দেন তিনি।
ইজিবাইক প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ভোলার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, তোফায়েল ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মইনুল হোসেন বিপ্লব, ভোলা প্রেস ক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিমউদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে তোফায়েল ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। তোফায়েল আহমেদ নিজেই এর প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অসহায় মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন।