কাদের মির্জা

ওবায়দুল কাদের আমাকে নেতাকর্মী শূন্য করতে চায়: কাদের মির্জা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ওবায়দুল কাদের আওয়ামী-জাসদ অস্ত্রধারীদেরকে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন।

তিনি আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী দুর্নীতিবাজ প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব কেন এসব করছেন, এ দেশের মানুষ তা জানে। কারণ আমাকে নেতাকর্মী শূন্য করা, আমার মুখ বন্ধ করা। মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বসুরহাটের আলোচিত মেয়র কাদের মির্জা বলেন, আসলে আমি প্রতিদিন লাইভে এসে কথা শেষ করার পর সিন্ধান্ত গ্রহণ করি ১০-১৫ দিন আর লাইভে আসব না।

কিন্তু আমাকে বাধ্য করে লাইভে আসার জন্য। এজন্য আপনাদেরকে বিরক্ত করি। বিরক্ত আমার ওপর হবেন না। আমি আজকে অসহায়। আজকে আমি জিম্মি। আজকে আমি অবরুদ্ধ।

তিনি বলেন, আমি আজকে সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করার পর পৌরসভা আঙ্গিনায় যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পাঁচ হাজার ত্রাণ বিতরণ করতে গেলাম। তখন পুলিশ আমাকে বাধা দিয়ে বলল, এখানে দেয়া যাবে না। ডিসি, এসপি সাহেবের নিষেধ আছে। ইউএনও, ওসি, এসিল্যান্ডের নিষেধ আছে।

আমি বাড়াবাড়িতে লিপ্ত না হয়ে একটি স্কুলের আঙ্গিনায় গিয়ে কিছু লোকজনের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করে বাকিগুলো এলাকায় এলাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছি।

কাদের মির্জা বলেন, আজকে কেন আমার বিরদ্ধে ওবায়দুল কাদের সাহেব, কেন আজকে আওয়ামী-জাসদ অস্ত্রধারীদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে, দেশের মানুষ জানে।

আজকে আওয়ামী দুর্নীতিবাজ প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়েছেন কেন ওবায়দুল কাদের সাহেব এ দেশের মানুষ জানে। লেলিয়ে দিয়েছেন আমাকে নেতাকর্মী শূন্য করার জন্য। আমার মুখ বন্ধ করার জন্য।

দেশব্যাপী আলোচিত বসুরহাটের মেয়র আরো বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব মূলত ওনার স্ত্রীর অপকর্মকে ঢাকার জন্য আমার মুখবন্ধ করতে চান। আমাকে নেতাকর্মী শূন্য করতে চান।

ওনার স্ত্রী সম্পর্কে আপনারা ভালো করে জানেন, কী করতেছে। ওনার মন্ত্রণালয়ের অধিকাংশ কন্ট্রাক্টর বিএনপির। দুই-চারজন আছে আওয়ামী লীগের। তারাও কাজগুলো পাইলে বিএনপির লোকদের কাছে বিক্রি করে দেয়। কন্ট্রাক্টরদের থেকে টাকা সংগ্রহ করে এপিএস। তার কোনো কাজ নেই। তিনি আমার এলাকার লোক চিনেন না।

তিনি টাকা সংগ্রহ করে সচিব বেলায়েতের কাছে দেন। সচিব বেলায়েত এটা তিন ভাগ করে। এক ভাগ তাদের মন্ত্রণালয়ে যারা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের দেয়। এক ভাগ তারেক জিয়ার জন্য পাঠায়। আরেক ভাগ মন্ত্রীর ওয়াইফের জন্য পাঠায়। এগুলা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।

বসুরহাট পৌর মেয়র কাদের মির্জা আরো বলেন, এ মহিলাকে (ওবায়দুল কাদেরর স্ত্রী) মন্ত্রী (সেতুমন্ত্রী), আপনি বাঁচাতে পারবেন না। দুদকের মামলা আগেও আছে।

আপনি চাপা দিয়ে রাখছেন। ওয়ান ইলেভেনের পর দুদকের মামলা হয়েছে। ওনার নিজের ও তার আত্মীয়দের নামে কয়টা ফ্ল্যাট আছে, ওনার বান্ধবীরা যারা বিদেশে থাকেন, ওনার বোনের এক মেয়ে ফান্সে না কোথায় থাকে।

হাজার হাজার কোটি টাকা ওখানে আপনার জমা আছে। সব খবর আমার কাছে আছে। এখানে আপনার কোন কোন আত্মীয়, আপনার ভাইয়ের মেয়ে (ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর) তার নিজস্ব লোকজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কত টাকা জমা আছে, এগুলার সব খবর আমার কাছে আছে। লুকাতে পারবেন না।

আপনি (সেতুমন্ত্রী) বাঁচাতে পারবেন না। আপনার মন্ত্রীত্বের ক্ষমতা দিয়ে আপনি বাঁচাতে পারবেন না। এ দেশের জনগণ জানে। আর একটা জিনিস স্মরণ রাখবেন। জনশ্রুতি হচ্ছে সবচেয়ে বড় ডকুমেন্ট। এ জনশ্রুতি আপনি বন্ধ করতে পারবেন না।

এ সময় তিনি আরো বলেন, ওবায়দুল সাহেব, যারা আজকে আপনার সম্মান হানি করছে। তাদেরকে আপনি শেল্টার দিচ্ছেন। আপনি শেষ বয়সে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছেন। আপনার স্ত্রীর আত্মীয়, আপনার মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি প্রজেক্টে তারা যায়। চট্টগ্রামের অফিস, কুমিল্লার অফিস ও ঢাকার অফিস তাদের দখলে।

শেয়ার করুন: