বিজয়

চেতনার বুদ্ধিজীবীরা কোথায়?

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পারজীত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম। এই সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা এখন যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি সেই মুক্তিযুদ্ধে চেতনার বীজ বপন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য নিয়ে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে একটা মহল দেশে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। আর এর পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত জামায়াতে ইসলামী।

জামায়াত আর্থিক পৃষ্ঠপোষকা দিয়ে এসব বিষয়ে ইন্ধোন যোগাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। এই অবস্থায় হেফজাতে ইসলামের নবনির্বাচিত কমিটির নেতারা বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়ে জামায়াতকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উষ্কে দেয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত এই ঘটনার পেছনে থেকে নীলনক্সা করছে। তবে এই ঘটনা তিব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনগুলো।

বাংলাদেশের রাজনীতির নিয়ে যারা খোঁজখবর রাখেন এমন কয়েকজন বিশ্লেষকরা বলেছেন, এই সময়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখার কথা ছিলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুদ্ধিজীবীদের। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কাউকে এই বিষয়ে মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে না, শুধু সামাজিক মাধ্যমে দুএকটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন কেউ কেউ। তবে বিষয়টি নিয়ে এখন তাদের ভূমিকা রাখা সময়ের দাবি।

বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোচ্চার হন, কথা বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে তাকে সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায় না। যদিও এই সময়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারতেন বলে বলে মনে করছের রাজনৈতি বিশ্লেষকরা।

শিক্ষাবিদ ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে থাকেন কিন্তু ভাষ্কর্য ইস্যুতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকা রাখছেন না। এছাড়া আরো অনেক বুদ্ধিজীবী আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন, যেমন শাহরিয়ার কবির কিংবা ইউসুফ আলী বাচ্চুর মতো ব্যক্তি। যারা এখন এই বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একজন বুদ্ধিজীবী। তার মতো একজন বুদ্ধিজীবীকেও এই ইসূতে কোনো ভূমিকা রাখতে দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া বিএসএমএমইউ এর সাবেক উপাচার্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত জাতীয় বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বললেও বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য বিতর্ক নিয়ে তাকে কিছু বলতে দেখা যায়নি।

বিভিন্ন জাতীয় ইস্যু নিয়ে সবসময় সরব থাকেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। কিন্তু ভাষ্কর্যের বিষয়টা জাতীয় হলেও তিনি সেভাবে সক্রিয় হচ্ছেন না। বিশ্লেষকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন এবং তার কারণেই আজ আমরা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। সুতরাং বঙ্গবন্ধু আমাদের অনুভূতির জায়গা, সেখানে হাত দেয়াটা মোটেও উচিত হচ্ছে না।

শেয়ার করুন: