শৈত্যপ্রবাহ

পঞ্চগড়ে তীব্র শীত, সন্ধ্যা হলেই শৈত্যপ্রবাহ

পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। দুইদিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার দিন শেষে শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। রাতভর ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল গোটা আকাশ। সঙ্গে উত্তরের ঠান্ডা বাতাসে তীব্র শীত অনুভূত হয়।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে দেশের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।

হিমালয় কন্যাখ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে তীব্র শীত শুরু হয়্। এ সময়ে তেঁতুলিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ থেকে ১৯ এর মধ্যে ওঠানামা করে।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনভর আকাশ মেঘলা ছিল। সঙ্গে উত্তর থেকে বেয়ে আসা হিমেল বাতাসে দুর্ভোগে পড়েন খেটেখাওয়া মানুষ।

শনিবার সকালে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সর্বনিম্ন তাপমাত্রার এ পর্যায়কে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। তবে সকাল ৯টার পর থেকে ঝলমলে রোদ শীতের তীব্রতা কমিয়ে দেয়। বিকেল ৩টায় প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুস্থ ও শীতার্তদের সহায়তায় পাঁচ উপজেলায় এ পর্যন্ত ২১ হাজার ২০০ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

জেলা শহরের তুলারডাঙ্গা মহল্লার রিকশাচালক সফিজুল ইসলাম বলেন, শীত এলে আমাদের আয় কমে যায়। ঠান্ডার কারণে কেউ রিকশায় ওঠে না। প্রতি বছর শীতে আমাদের কম্বল আর শীতবস্ত্র দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের দরকার আর্থিক সহায়তা। এ সময় আমাদের শীতবস্ত্রের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও সহায়তা করা দরকার।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, শনিবার সকালে দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এখানে রাতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। সন্ধা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে সর্বোচ্চ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় একটি শীতপ্রবণ জেলা। এখানে প্রতি বছর শীতকালে ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে দুর্ভোগ দেখা দেয়। প্রতি বছর সরকারি-বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এবারও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে তীব্র শীত থাকে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, অন্য এলাকার তুলনায় পঞ্চগড়ে প্রতি বছর শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হয়। শীতকালের অধিকাংশ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড হয়। এজন্য চলতি শীত মৌসুমের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা করেছি আমরা। শীতবস্ত্র সহায়তা নিয়ে ইতোমধ্যে শীতার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছি। বিভিন্ন উপজেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে।

শেয়ার করুন: