পুতিন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে, জানালেন পুতিন

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জেতার কিছুক্ষণ পরই তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই সময় হিলারি ক্লিনটন পরাজয় মেনে নেওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠান পুতিন।

অথচ এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণার দু'সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও পুতিন নিশ্চুপ রয়েছেন। এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। অবশেষে মুখ খুলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।

পুতিন বলেছেন, তিনি যে এখনো জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানাননি, তার পেছনে কোনো ‘গোপন ষড়যন্ত্র‘ নেই। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে, তার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করতে চান।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম রিয়া নভোস্কি পুতিনকে উদ্ধৃত করে বলছে, অভিনন্দন না জানানোর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র নেই, আমরা অমুককে পছন্দ করি আর তমুককে অপছন্দ করি এমন নয়। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আইনি লড়াই শেষ হওয়ার পর বিজয়ীকে তিনি অবশ্যই অভিনন্দন জানাবেন।

পুতিন বলেন, দ্রুত অভিনন্দন পাঠানো বা না পাঠানোর ওপর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্ক নির্ভর করে না। নষ্ট সম্পর্ক নতুন করে নষ্ট হয় না। সম্পর্ক এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে চলমান অন্তর্কলহ নিয়ে টিপ্পনী কাটতেও ছাড়েননি পুতিন। তিনি বলেন, মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতির মধ্যে অনেক গলদ রয়েছে। সুতরাং অন্য দেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমালোচনা করার কোনো অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানানো নিয়ে গড়িমসির অন্যতম প্রধান কারণ হয়তো নির্বাচনের ফলাফল পুতিনের মনঃপুত হয়নি। অধিকাংশ পশ্চিমা বিশ্লেষকের ধারণাও সেরকমই।

হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পের বিদায় ক্রেমলিনের জন্য যে উদ্বেগের কারণ, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ট্রাম্প ছিলেন পুতিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একজন প্রশংসাকারী।

ব্যক্তিগতভাবে পুতিনকে নিয়ে সরাসরি কখনোই কোনো বিরূপ মন্তব্য ট্রাম্প করেননি। বদলে একাধিকবার তিনি পুতিনের ‘বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের‘ প্রশংসা করেছেন।

অন্যদিকে জো বাইডেন পুতিনকে একেবারেই যে পছন্দ করেন না, তার ইঙ্গিত গত ১০ বছরে তার কথা-বার্তায় বারবার প্রকাশ পেয়েছে। পাশাপাশি, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার কথিত হস্তক্ষেপের পর ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে পুতিন বিরোধিতা চরম আকার ধারণ করেছে।

চলতি বছরের মার্চ মাসে ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি সাময়িকীতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় পুতিনকে তিনি দুর্বৃত্ত বলে মন্তব্য করেন।

জো বাইডেন বলেন, নতুন স্টার্ট চুক্তি করতে আমি সাহায্য করেছিলাম। আমি তা করেছিলাম এজন্য নয় যে, আমি পুতিনকে পছন্দ করি। মানুষটি একটি দুর্বৃত্ত।

এসব কথা পুতিনের মতো দাম্ভিক একজন মানুষ যে একেবারেই পছন্দ করছেন না তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্রাইমিয়া দখল এবং ইউক্রেনে সামরিক হস্তক্ষেপের সময় জো বাইডেন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার বিরুদ্ধে সে সময় কঠোর সব নিষেধাজ্ঞা চাপানোর মূলে ছিলেন তিনি।

শেয়ার করুন: